রাজধানীতে যানজট নিত্যদিনের চিত্র। এর মধ্যে যদি বড় কোনো জমায়েত হয় তাহলে তো কথাই নেই। ঢাকাজুড়ে যানজট বেড়ে যায় কয়েকগুণ। দিনভর দুর্ভোগ পোহাতে হয় ঘরের বাইরে বের হওয়া মানুষদের। সাধারণত প্রতিদিন খুব সকালে সড়ক কিছুটা ফাঁকা থাকলেও মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সকাল থেকেই রাজধানীবাসীর দিন শুরু হয়েছে যানজটকে সঙ্গে নিয়ে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আলেম-ওলামা ও জনতার ইসলামি মহাসম্মলনে যোগ দিতে মানুষের ঢল নামায় ভোর থেকে রাজধানীর সড়কে গাড়ির চাপ বেড়েছে। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানজট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) ভোর থেকেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জমায়েত হতে থাকেন আলেম-ওলামারা। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত দাওয়াত ও তাবলিগ, মাদারেসে কওমিয়া এবং দীনের হেফাজতের লক্ষ্যে চলবে সম্মেলন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সকালে অফিসগামী মানুষজন যানজটে ভোগান্তিতে পরার চিত্র তুলে ধরেছেন। কেউ আবার নিজে থেকে অন্যদের হাতে সময় নিয়ে ঘরের বাইরে বের হওয়ার বার্তা দিয়েছেন।
সকাল ৯টার দিকে একজন সবাইকে সতর্ক লিখেছেন, আজকে সোহরাওয়ার্দীতে আমাদের সমাবেশ। সকাল ৯টা থেকে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ভোর রাতেই সমাবেশস্থল কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে। সারাদেশ থেকে এখনো লোকজন আসতেছে, আমরাও আসবো। সোহরাওয়ার্দীসহ আশপাশ এলাকায় আমাদের লোকে লোকারণ্য থাকবে। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া ঢাকাবাসী রাস্তায় বের হবেন না, বড় প্রোগ্রাম। ঢাকার বাহির থেকে লাখো লাখো মানুষ এসেছেন, তাদেরও ভোগান্তি হবে আপনাদেরও।
স্বপন ঘোষ নামে একজন লিখেছেন, খুব বেশি কাজ না থাকলে আজকে বাসা থেকে যাতে কেউ না বের হয়।
জানা গেছে, উলামা মাশায়েখ বাংলাদেশের উদ্যোগে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত ইসলামী সমাবেশ উপলক্ষে উদ্যানের আশপাশের এলাকা খুবই জনাকীর্ণ হয়ে পড়েছে। রাস্তার উভয় পাশে বাস পার্ক করার কারণে যান চলাচল লেন সরু হয়ে পড়েছে। ফলে শাহবাগ, মৎস্য ভবন, হাইকোর্ট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, কাঁটাবন, সাইন্সল্যাব এলাকায় প্রচুর ট্রাফিকের সৃষ্টি হয়েছে। যানজটের চিত্র তুলে ধরে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, যারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকা দিয়ে মঙ্গলবার যাতায়াত করবেন তারা হাতে পর্যাপ্ত সময় নিয়ে বের হবেন। অথবা বিকল্প পথ ব্যবহার করুন।
গত রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই মহাসম্মেলনের ডাক দেন বিশিষ্ট আলেমরা। দেশের সর্বস্তরের আলেম–ওলামা ও ‘আপামর তাওহিদি জনতাকে’ মহাসম্মেলনে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয় বিবৃতিতে। এতে বলা হয়, ‘দাওয়াত ও তাবলীগ, মাদারেসে ক্বওমিয়া এবং দ্বীনের হেফাজতের লক্ষ্যে’ ওলামা মাশায়েখ বাংলাদেশের উদ্যোগে মঙ্গলবার সকাল নয়টায় এই মহাসম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
মহাসম্মেলনের আহ্বান জানানো বিশিষ্ট আলেমদের মধ্যে রয়েছেন- আল্লামা শাহ্ মহিবুল্লাহ বাবুনগরী, আল্লামা খলিল আহমাদ কাসেমী, আল্লামা আব্দুল হামিদ, আল্লামা আব্দুল রহমান হাফেজ্জী, আল্লামা নুরুল ইসলাম, মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুক, মাওলানা রশিদুর রহমান, আল্লামা শাইখ জিয়াউদ্দিন, আল্লামা শায়েখ সাজিদুর রহমান, আল্লামা আব্দুল কুদ্দুস, আল্লামা নূরুল ইসলাম ওলিপুরী, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা আবু তাহের নদভী, মাওলানা আরশাদ রহমানি, মাওলানা সালাহউদ্দীন নানুপুরী, মাওলানা মুস্তাক আহমদ, অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী, মাওলানা আনোয়ারুল করীম, মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ আলী, মাওলানা মুফতি মনসুরুল হক, মাওলানা মুফতি দেলাওয়ার হোসাইন, মাওলানা জাফর আহমাদ, মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দি, মাওলানা বাহাউদ্দীন জাকারিয়া, মাওলানা আব্দুল আউয়াল। এ ছাড়া রয়েছেন মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানী, মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ সা’দী, মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা জিয়াউদ্দিন, মাওলানা আব্দুল হক, মাওলানা ইউনুস, মাওলানা নুরুল হক, মাওলানা ওবায়দুর রহমান মাহবুব, মাওলানা আব্দুল হালিম, মাওলানা আনাস, মাওলানা হেলাল উদ্দিন, মাওলানা শওকত হোসাইন সরকার, মাওলানা নেয়ামত উল্লাহ আল ফরিদী ও মাওলানা ইসমাইল নূরপুরী।