প্রকাশ: শনিবার, ৩০ মার্চ, ২০২৪, ৭:০৯ PM আপডেট: ৩০.০৩.২০২৪ ৭:১৪ PM
পবিত্র মাহে রমজানে আমাদের অনেকেরই মুখে দুর্গন্ধ হয়৷ দাঁতেরও নানা রকমের সমস্যা দেখা দেয় সেই সাথে পরিবর্তন আসে খাদ্যাভ্যাসে। তেমনি দাঁত ব্রাশের সময়েরও পরিবর্তন হয়। যেহেতু রোজায় অনেকক্ষণ অনাহারে থাকতে হয় তাই দীর্ঘ সময় ব্রাশ না করার কারনে, আবার পানি পান না করার কারনে কিংবা অ্যাসিডিটি বা গ্যাস্ট্রিকের জন্য মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে। আমরা প্রতিনিয়ত যে খাবার খাই তার কিছু টুকরো, খাবারের তেল ও চর্বি ও মুখের মৃত কোষ লালার সঙ্গে মিশ্রিত হয়ে এক ধরনের স্তর তৈরি করে, যা পরবর্তী সময়ে জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয়ে মাড়িতে প্রদাহ তৈরি করে। মুখে দুর্গন্ধ হয়। অনেক সময় মাড়ি থেকে রক্ত বের হয়। খাদ্যকণা অনেক দিন জমতে থাকলে দন্তক্ষয় রোগের সৃষ্টি হয়।সাবান যেভাবে মুখ ও শরীরের ময়লা পরিষ্কার করে, ঠিক তেমনিভাবে ফ্লোরাইড যুক্ত টুথপেস্ট দাঁতে লেগে থাকা ময়লা একইভাবে পরিষ্কার করে। তাই রমজানে পরিবর্তিত খাদ্য সূচির জন্য দাঁত ও মুখকে সুস্থ ও সুন্দর রাখতে ইফতারি থেকে সেহরি পর্যন্ত চাই পর্যাপ্ত যত্ন।
আসুন জেনে নেই পবিত্র রমজান মাসে মুখের দুর্গন্ধ এড়ানোর এবং দাঁত ঠিক রাখার কিছু উপায়ঃ
১। রমজান মাসে সেহেরির পর থেকে রোজদার মুসলমানরা ইফতার পর্যন্ত, অর্থাৎ ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কিছু খান না৷ ফলে দাঁতের ফাঁকে জমে থাকা খাদ্যকণা পচে যাতে দুর্গন্ধ সৃষ্টি না করে সেজন্য সেহেরির পরে দাঁত ব্রাশ করেই ঘুমানো উচিত৷ আবার ইফতারের পরও একবার দাঁত ব্রাশ করে নেওয়া ভালো৷
২। যদি ইফতার বা সেহেরির সময় কোনো মিষ্টি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার খেয়ে থাকি তাহলে দাঁত ব্রাশ করতেই হবে, কেননা,মিষ্টিতে যে উপাদান থাকে তা দাঁতের এনামেল ক্ষয় করে৷
৩। রোজার সময় অ্যাসিডিটি বা গ্যাসট্রিকের সমস্যা থাকলেও অনেক সময় মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে৷ এমন হলে পরিপাকতন্ত্র বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে ।
৪। অনেক সময় কারো কারো জিহ্বার উপরে খাদ্যের প্রলেপ জমে যায়৷ একসময় সেখানে জীবাণু হয় সেখান থেকে সৃষ্টি হয় মুখে দুর্গন্ধ৷ এই সমস্যা থেকে দূরে থাকতে প্রতিদিন দু’বেলা দাঁত ব্রাশ করার আগে টাং স্ক্র্যাপার দিয়ে জিহ্বা পরিষ্কার করুন৷
৫। ইফতারে ভাজাপোড়া বা পেঁয়াজ-রসুন কম খেয়ে ভিটামিন-সি যুক্ত টাটকা ফল বা সালাদ বেশি খেলে ভালো হবে৷ বিশেষ করে পিঁয়াজ-রসুনের কারণে মুখে যে বাড়তি দুর্গন্ধ হয় তা থেকে বাঁচতে পারবেন৷ সেই সাথে পর্যাপ্ত পরিমান পানি পান করতে হবে।
৬। মুখ ও দন্ত বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে নিয়মিত ফ্লোরাইড যুক্ত টুথপেস্ট সাথে নরম ব্রিসলের ব্রাশ, ডেন্টাল ফ্লস ও মাউথওয়াশ ব্যবহার করা উচিত।
৭।যারা ডেনচার অথবা রিটেইনার ব্যবহার করেন, তা খুলে নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে।
৮। ধূমপান বা তামাক জাতীয় পণ্য ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। কেননা ধূমপান বা তামাক জাতীয় পণ্য মুখের দুর্গন্ধ বাড়িয়ে দেয়।
মুখ ও দাঁতের সু স্বাস্থ্যের জন্য শুধু রমজানই নয় সারাবছরই মুখ ও দাঁতের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন। নিয়মিত ব্রাশ করুন ও একটি সুষম খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন। বছরে অন্তত দু’বার মুখ ও দন্ত বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করুন।