সাম্প্রতিক সময়ে কতিপয় রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের মুখে বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অন্যান্য জাতীয় নেতার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত বক্তব্য শোনা যাচ্ছে। যা জাতীয় ঐক্য ও বিগত দিনে ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে বিজয় এসেছে তা বিনষ্ট করার শামিল বলে মন্তব্য করেছেন, ১২ দলীয় জোট প্রধান, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী মোস্তফা জামাল হায়দার।
বুধবার গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপর হামলার নিন্দা জানিয়ে মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, গোপালগঞ্জের ঘটনায় প্রমাণ করে, ফ্যাসিবাদী শক্তি এখনো ক্ষয় হয়ে যায়নি। এই মুহূর্তে, আবারো জুলাই আগস্টের অভ্যুত্থানের পক্ষের সকল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ফ্যাসিবাদ কে নির্মূল করার শপথ নিতে হবে।
তিনি বলেন, জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন বিষয় রাজনৈতিক দলের সামনে উপস্থাপন করা হচ্ছে। সকল বিষয়ের রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যমত হতে পারে না। যতটুকু ঐক্যমত হয়েছে তার ভিত্তিতেই জাতীয় সনদ প্রণয়ন করা দরকার।
(১৬ জুলাই) বুধবার বিকেল ৩ টার সময় মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার রবিরবাজারে সুলতান কমপ্লেক্সে মজলুম জননেতা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর আজীবন সহযোগী প্রখ্যাত কৃষক ও শ্রমিক নেতা নওয়াব আলী ছফদর খান রাজা সাহেব এর ৫১ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। স্মরণসভা আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান চৌধুরী ওয়েছের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্মরণ সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, মৌলভীবাজার- ২ আসনের সাবেক তিনবারের এমপি নওয়াব আলী আব্বাস খান, সাপ্তাহিক হক কথার সম্পাদক সৈয়দ ইরফানুল বারি, সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এমাদ উল্লাহ শহিদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহবায়ক ফয়জুল করিম ময়ূন, মৌলভীবাজার জেলা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক রজত বিশ্বাস, কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির আহবায়ক রেদওয়ান খান, কৃষক সমিতি কুলাউড়ার সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল খালিক জিলা, টিলাগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহিদ্দিন হোসেন, উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জয়নাল আবেদীন বাচ্চু, সংগঠন আব্দুল করিম কিম, কুলাউড়া ডিগ্রি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সাম্যপদ ভট্টাচার্য সজল, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল গফুর, পৃথিমপাশা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কমরেড আব্দুল লতিফ, নবাব আলী নকি খান, ভুকশিমইল ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান মনির, রাউৎগাঁও ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল জামাল, পৃথিমপাশা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান নবাব আলী বাকর খান হাসনাইন, বিএনপির নেতা আকদ্দছ আলী মাষ্টার, বিশিষ্ট সমাজসেবক তোফায়েল চৌধুরী, স্মরণসভা আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব আব্বাস আলী প্রমুখ।
স্মরণ সভায় মোস্তফা জামাল হায়দার আলো বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা সহ সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি চরম অবনতি হয়েছে। সরকারের উচিত যেকোনো মূল্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতি করা। যারা হত্যা,ধর্ষণ, চাঁদাবাজি সহ নানা ধরনের অপকর্মে জড়িত তারা যে দলের, যে মতের হোক না কেন, সরকারের উচিত তাদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা। দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যদি স্বাভাবিক করতে না পারে, তাহলে জুলাই অভ্যুত্থানের বিজয় নস্যাৎ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
নওয়াব আলী ছফদর খান রাজা সাহেবের স্মৃতিচারণ করে মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, আমরা যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তখন দেখেছি নওয়াব আলী ছফদর খান, মজলুম জননেতা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর বিশ্বস্ত সহযোগী হিসাবে দেশের শ্রমিক মেহনতি মানুষের মুক্তির সংগ্রামের লড়াই করে যাচ্ছেন। বিশেষ করে বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে তিনি কৃষক ও চা শ্রমিকদের অধিকারের জন্য আজীবন সংগ্রাম করেছেন।