সংযম ও আত্মশুদ্ধির মাস হলো পবিত্র মাহে রমজান। যার মানে হলো- আল্লাহর জন্য রমজানের ফরজ রোজার নিয়তে সাহরি খাওয়া। তারপর, ফজরের আজান থেকে নিয়ে মাগরিবের আজান পর্যন্ত কোনো ধরনের খাদ্য গ্রহণ না করা। লোভ-লালসা, হতাশা, সংকীর্ণতা, কাম, ক্রোধ, দুর্নীতি, অসততা ইত্যাদি সমাজকে ধ্বংসের দিকে ধাবিত করে। এ নিকৃষ্ট জীবনকে পরিশুদ্ধ করতে প্রয়োজন, রোজা বা সিয়াম সাধনা। এটাতো গেলো ফজর থেকে মাগরিবের কথা। এই মাসে মাগরিব থেকে ফজর পর্যন্ত যে কাজগুলো করতে হয় , তা হলো এশা পরবর্তী তারাবীহর ২০ রাকাত সুন্নতে মুয়াক্কাদা নামাজ। রমজান মাসের জন্য নির্দিষ্ট তারাবীহ নামাজ জামাতে পড়া ও সম্পূর্ণ কোরআন শরীফ একবার খতম করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা। এরপর জামাতে তিন রাকাত বিতর নামাজ আদায় করা। কারণ, রমজান মাসে জামাতের সাথে বিতর নামায পড়া রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবাগণ দ্বারা প্রমাণিত। কিন্তু রমজান ছাড়া বিতরের জামাত প্রমাণিত নয়।
এরপর সাহরি খাওয়ার আগে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা'র সবচেয়ে পছন্দের সুন্নত নামাজ হলো তাহাজ্জুদ নামাজ। যা গভীর রাতে সারা বছরই পড়ার তাগিদ আছে। এই নামাজ রমজান মাসে পড়ার জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে নিদ্রা থেকে জাগরণের ব্যবস্থা আছে। যা রমজান ছাড়া এই ব্যবস্থা সহজসাধ্য নয়। ডিজিটাল এই যুগে গভীর রাতে ঘুম থেকে তোলার জন্য সহজ একটি মাধ্যম হলো মোবাইল ঘড়ির এলার্ম। এলার্মের ডাকে যদি ঘুম থেকে জাগা সম্ভব না হয়, সেক্ষেত্রে কাছাকাছি সকল মসজিদ থেকে ফজরের আজানের পূর্ব পর্যন্ত রাত্র তিন ঘটিকার আগ থেকেই সকল রোজাদারকে ঘুম থেকে তোলার জন্য মাইক্রোফোনে অনুরোধ করা হয়। এ ছাড়াও দূর-দূরান্তে থাকা ছেলে-মেয়ে, বন্ধু-বান্ধব বা নিকট আত্মীয়গণ মোবাইলের মাধ্যমে ঘুম থেকে তুলে থাকেন। কিন্তু এখন থেকে চার/পাঁচ দশক আগে ঘুৃম থেকে উঠা রোজাদারদের জন্য এতো সহজ ছিলোনা। পুরান ঢাকায় বংশাল এলাকার হাজী আবদুল্লাহ সরকার লেনের বাসায় কেটেছে আমার শৈশব, কৈশোর ও যৌবন কাল। অত্র এলাকার বংশাল আহলে হাদিস বড় জামে মসজিদে কোরআন শিক্ষা সহ পাঞ্জেগানা নামাজ, শুক্রবারের নামাজ ও রমজান মাসে আট রাকাত তারাবীর নামাজ আদায় করতাম। এক রাকাত নামাজ পড়তে যে সময় নিতো তাতে অনেক সময় মনোযোগ বিচ্যুতি ঘটতো বিধায় মাঝে মাঝে চৌরাস্তার ছোট মসজিদে বিশ রাকাত তারাবীহ নামাজ পড়তাম। এখানে উল্লেখ্য যে আহলে হাদিস মসজিদে ইমাম শাফি, মালিকি এবং হাম্বলী মাযহাবের মতে আট রাকাত তারাবীহ নামাজে যে সময় লাগতো সেই একই সময় ইমাম হানাফি মাযহাবের বিশ রাকাত নামাজেও লাগতো। উভয় নামাজই যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে আমি আদায় করতাম। এ নামাজ নিয়ে অনেকের মধ্যে বিতর্ক থাকলেও কস্মিনকালেও ছিলোনা আমার মধ্যে কোনো বিতর্ক। মসজিদে মাগরিব নামাজ আদায় করে বাসায় এসে কিছুক্ষণ লেখাপড়া সহ অন্যান্য কাজ সেরে নৈশকালীন খাবার গ্রহণ করতাম। এরপর এশা ও তারাবীহ নামাজ পড়ে প্রয়োজনীয় কাজ থাকলে তা সম্পন্ন করে ঘুমাতে যেতাম। তখন ভোর রাত্রের সাহরির খাবার ভোররাত্রেই রান্না করা হতো। কারণ এখনকার মতো তখন ঘরে ঘরে ফ্রিজ সহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা ছিলো না। তাই মা-বোনেরা ভোরে উঠেই সাহরির আয়োজন করতেন। এই কারণেই মা-বোনদের সুবিধা অনুযায়ী রাত্রে কেউ দুইটা, কেউ আড়াইটায় ঘুম থেকে উঠে রান্না-বান্নার কাজে লেগে যেতেন। তখন মোবাইল ছিলোনা, এলার্ম ঘড়ি থাকলেও তা সবার বাসায় ছিলোনা। এমতাবস্থায় ভোর রাতে সাহরিতে উঠার জন্য মসজিদ থেকে সাইরেন বাজানো হতো। অধিকাংশ মসজিদেই বিদ্যুতের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় মাইক ব্যবহার হতো না, তাছাড়া এখনকার মতো এতো মসজিদের আধিক্য না থাকায় মিনারে উঠে মুয়াজ্জিন সাহেবের চোঙায় দেয়া আজান সবার কানে এসে পৌঁছাইতোনা। এমতাবস্থায় সবচেয়ে বেশী সাহায্যকারী হিসেবে যেটা ছিলো তা হলো কাসিদার দল।
কাসিদা একটি ফার্সি শব্দ, যার অর্থ কবিতার ছন্দে ছন্দে কোন প্রিয়জনের প্রশংসা করা।
বেশ কয়েকটি দল বিভিন্ন মূল্যবান কথামালাকে গ্রথিত করে ছন্দে ছন্দে উর্দু-ফার্সির মিশ্রণে মোহনীয় গানের মাধ্যমে দশ/পনেরো মিনিটের ব্যবধানে এসে দশ/পনেরো জনের দলটি মা-বোনদের ঘুম থেকে জাগ্রত করার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বটি পালন করতেন। রমজান মাসে কাসিদায় রমজানের তাৎপর্য ও গুরুত্ব, আল্লাহ, রাসূল সা.-এর প্রশংসা, কিয়ামত, হাশর, আখিরাত ও ইসলামের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াবলী তুলে ধরতেন। সাতাশ রোজার রাতে এসে তারা আরো বেশী সময় নিয়ে আরো বেশী কাসিদাকে সুরেলা করে মোহনীয়রূপে উপস্থাপনের মাধ্যমে প্রতিটি বাসায় নক করতেন বখশিশ নেয়ার জন্য। যাদের দলীয় সংগীত আকর্ষণীয় হতো তাদের বখশিশের পরিমাণ বেশী হতো। এভাবেই ভোররাতে মন জুড়ানো গান শুনে তাৎক্ষণিক সকল কাসিদা দলকেই বখশিশ দিতে হতো কিছু সংখ্যক বাসা থেকে। এছাড়া ঈদ জামাত শেষ হলে একে একে কাসিদা দল তাদের রমজানের রাতে গাওয়া হৃদয়ছোঁয়া গানের কলি আওড়িয়ে আড়াই/তিন লিটার সাইজের লোহার বালতি নিয়ে এসে প্রতিটি ঘরের দরজায় এসে দাঁড়াতেন চূড়ান্ত বখশিশ নিতে। উল্লেখ্য সেই ছোটবেলায় শোনা একটি গানের কথা আজো আমায় শিহরিত করে, পুলকিত করে। গানের কলিটি হলো: "রোজদারো দ্বিনদারো আল্লাহ কি পেয়ারো উঠঠো মালোক"। অর্থাৎ "হে রোজাদার, হে ধর্মনিষ্ঠ, হে আল্লাহর প্রিয় বান্দাগণ, হে সম্প্রদায়, তোমরা জেগে ওঠো। "এই হৃদয়গ্রাহী গানটি রোজাদারদের মনে এক আলাদা প্রশান্তি এনে দিতো। এভাবেই তারা টাকা-পয়সায় বালতি ভর্তি করে মুখে প্রশস্ত হাসি ফুটিয়ে স্ব-স্ব গন্তব্যে চলে যেতেন। এভাবেই রমজান মাসের ভোররাতে সুকন্ঠে গাওয়া কাসিদার দলীয় পাখিরা তাঁদের মহান কর্মের প্রতিদান নেয়ার জন্য সমবেত হতেন দরজায় দরজায়। গভীর রাতে তাদের কন্ঠের সাথে আমরা পরিচিত হলেও চেহারা মোবারক দর্শন করার সুযোগ ছিলোনা। কারণ মা-বোনদের তখন রান্না বান্নার জন্য উঠতে হতো। আমরা যারা ছেলে ছিলাম তারা মা-বোনদের রান্না-বান্না হয়ে গেলে তাঁদের আদরমাখা মিষ্টি ডাকে উঠতাম সাহরি খাওয়ার জন্য। তাই আমরা তাদের কন্ঠের সঙ্গে পরিচিত হলেও চেহারার সঙ্গে ছিলাম না পরিচিত। ঈদের দিন জামাত শেষে তাঁদের বাইশ থেকে ত্রিশ বছর বয়সী কিশোর ও যুবকদের দেখে আনন্দিত হতাম, আনন্দে বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজন থেকে ঈদ সেলামি বাবদ প্রাপ্ত টাকা ও পয়সা থেকে ওদের বালতিতে চার আনা-আট আনা দিয়ে আনন্দের মাত্রাটুকু আরো বাড়িয়ে নিতাম। প্রতিটি ঈদ সূচিতে ছিলো এটা একটি বাড়তি আনন্দ। এছাড়াও যাদের গান বেশী শ্রুতিমধুর হতো তাদের দেখে খুশীর আতিশয্যে গায়ে হাত দিয়ে গর্বিত বোধ করতাম। মনে হতো তারা ভিন্ন কোনো জগতের বাসিন্দা। আমাদের ঈদ আনন্দটি যেনো শুরু হতো তাদেরকে খুশী করার মাধ্যমেই। কাসিদা দলকে কোনো বাসা থেকে কম বখশিশ দিলে আমাদের মন খারাপ হয়ে যেতো, তাই বাবা মাকে আমরা বলতাম বখশিশের পরিমানটি বাড়িয়ে দিতে। পুরান ঢাকা সহ রাজধানীর অনেক স্থানেই আমাদের শৈশব, কৈশোর ও যৌবনে রমজান মাসের প্রতিটি মধ্য রাত থেকে শেষ রাতে এরকম কাসিদার দলের দেখা মিলতো।
মোঘলদের দাফতরিক ভাষা ফারসি হওয়ায় বাংলায় ফারসি ভাষায় কাসিদার আগমন হয়।
বিংশ শতাব্দীর আগে কাসিদার কমবেশী প্রচলন থাকলেও বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে ইহা আবার নতুন করে প্রচলন ঘটে। অধ্যাপক মুনতাসীর মামুনের ‘ঢাকা : স্মৃতি-বিস্মৃতির নগরী’ বইয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৯৪৭-এর পর উর্দুভাষী মোহাজেররা ঢাকায় এসে কাসিদায় নতুন মাত্রা যোগ করেন। দুই দশক আগেও ঢাকার বংশাল, মালিটোলা, সুরিটোলা, আগাসাদেক রোড তাঁতি বাজার, ইসলামপুর, গেন্ডারিয়া, সুত্রাপুর, লক্ষ্মী বাজার, নারিন্দা, ওয়ারী, বনগ্রাম, গোপীবাগ, কসাইটুলি, জিন্দাবাজার, বেচারাম দেউড়ি, বেগম বাজার, চকবাজার, রহমতগঞ্জ, উর্দু রোড, খাজে দেওয়ান, আজিমপুর, আলুর বাজার, নাজিরা বাজার, সাতরওজা, আগাসাদেক রোড, নিমতলি, লালবাগ, হাজারীবাগ, মালিবাগ, খিলগাঁও, রামপুরা, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর এলাকা সহ আরো বেশ কয়েকটি এলাকায় কাসিদার প্রচলন ছিল সবচেয়ে বেশী। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে বছর পাঁচ আগেও পুরান ঢাকার পাতলা খান লেন, লক্ষ্মী বাজার, হাজারীবাগ এলাকায় কাসিদা গাওয়া হয়েছে। আমার জানা ও দেখামতে প্রতি রাত্রেই কাসিদা দল হাজারীবাগের টালি অফিস রোড, বউবাজার সহ আশেপাশের বেশ কয়েকটি পাড়ায় এখনো রোজাদারদের বিভিন্ন শব্দচয়নের মাধ্যমে সাহরি খাওয়ার আহবান করে থাকেন।
ডিজিটাল এ যুগে সেই কাসিদার দলগুলোকে এখন খুব একটা দেখা যায় না।
দেখা না যাওয়ার পিছনে অনেক যুক্তিসঙ্গত কারণ আছে- তা হলোঃ- আমাদের শৈশব, কৈশোর ও যুবক থাকাকালীন সময়ে রমজানের গভীর রাত ছিলো আধো আলো আধো ছায়া বেষ্টিত শান্ত, নরম স্নিগ্ধ পরিবেশে। এখনকার দিনের মতো মাইকে দেয়া আজান শোনার পরিবর্তে আমাদের শুনতে হয়েছে মু্য়াজ্জিন সাহেবের সিড়ি ভেঙ্গে উঁচু মিনারে উঠে টিনের চোঙায় দেয়া আজান। তখন প্রতিটি মহল্লায় একটি করে ক্ষুদ্র পরিসরে নামাজ পড়ার মসজিদ ছিলো। বর্তমানের এলইডি বাল্বের ধবধবে আলোয় সন্ধ্যা রাত থেকে ভোর রাত অবধি দিনের মতো আলো থাকে। আজান হয় একই মহল্লার একাধিক মসজিদের সুউচ্চ মিনারে থাকা চতুর্মুখী মাইকযোগে। আগে অল্প সংখ্যক মসজিদে যখন টিনের চোঙায় মুয়াজ্জিন সাহেবরা আজান দিতেন, সাইরেন বাজাতেন তখন কাসিদার সুর করা গজলেই রোজাদাররা সাহরি খাওয়ার জন্য ভোররাতে উঠতেন। রান্না করতে ঘুম থেকে উঠে যেতেন মা-বোনেরাও। সেই ঐতিহ্য রক্ষার্থে বর্তমান প্রজন্মের কাসিদা দল এখনও অলিতে গলিতে ডাক দিয়ে যায় রোজাদারদের। তবে এই ডাকে আমাদের শৈশব ও কৈশোরের ডাকের মাধুর্যতা ও মোহনীয়তা পুরোপুরি অনুপস্থিত বলে মনে করি। জনশ্রুতি আছে পুরান ঢাকার কাসিদা গাওয়ার জন্য গড়ে উঠেছিলো দু’টি দল। প্রথম দলের নাম ছিল ‘সুব্বাসি’ বা ‘সুখবাসী’। এরা ঐতিহ্যের উর্দু আর ফার্সি চর্চা করে কাসিদা গাইতো। দ্বিতীয় দলের নাম ছিল ‘কুট্টি’। এরা বাংলার সাথে উর্দু ও হিন্দি ভাষা মিশিয়ে কাসিদা গাইতো। আবার উর্দু ও ফার্সিতেও গাইতো। এই দু’দলের হাত ধরেই ঢাকায় কাসিদার যাত্রা শুরু হয়েছিলো বলে ধারণা করা হয়। কাসিদা দলের সদস্যদের পড়নে থাকে পাঞ্জাবি। ১০ থেকে ১৫ জনে মিলে তৈরি হয় এক একটি দল। এরা একজন সুর তোলে বাকিরা তার সঙ্গে কোরাস করে।
সময়ের সঙ্গে হারাতে বসেছে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী কাসিদা দল। গুটি কয়েক এলাকা ছাড়া পুরান ঢাকায় কাসিদা গাওয়া কাফেলা নেই বললেই চলে। বংশাল, নাজিরাবাজার, আগাসাদেক রোড, সাতরওজা রোড, চক বাজার, নাজিম উদ্দিন রোড, লালবাগ ও হোসনি দালানের, হাজারীবাগের আশপাশে এলাকায় এখনো রোজাদারদের জাগাবার জন্য বিভিন্ন কবিতা ছন্দে ছন্দে গাওয়ার মধ্য দিয়ে জড়ো হন কাসিদা দল।
উর্দু-বাংলা মিশিয়ে কাসিদা গাওয়া হয় দলবদ্ধভাবে। কয়েক বছর আগেও রমজান মাসে এমন সব কাসিদায় সরব হয়ে উঠতো গভীর রাতের পুরান ঢাকার অলিগলি। সাহরির সময় হওয়া মাত্র একদল মানুষ গলা ছেড়ে গান গেয়ে ঘুমন্ত মানুষদের জাগাতেন। এখন সে কাসিদা দলের ভোররাতের আওয়াজ খুব কমই দেখা যায়। এখন কিছু কিছু এলাকায় কাসিদার দল দেখা গেলেও সেই আগের মতো আকর্ষণীয় পাঞ্জাবি পড়া ড্রেসে, পরিকল্পিত গানে মানুষের কাছে আকর্ষণীয়রূপে আবির্ভূত হতে পারেন না। আগের কাসিদায় অংশগ্রহণকারী প্রতিটি সদস্যই ছিলো সুকন্ঠের অধিকারী, পেশাদার এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। কালের বিবর্তনে এই ঐতিহ্যবাহী কাসিদা দল এখন বিলুপ্ত প্রায়। ঢাকায় শুধু রমজানেই নয়, ঈদুল-ফিতর ও মহররম উপলক্ষেও কাসিদা রচনা করা হতো। ১৯৯২ সালে ‘হোসেনি দালান পঞ্চায়েত’ প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন কাসিদা দল নিয়ে গড়ে তোলা হয় প্রতিযোগিতা ও পুরস্কারের আয়োজন। এখনো সে প্রতিযোগিতা উর্দু রোডে ২০ রমজান রাত ১১টা থেকে শুরু হয়ে চলে সাহরির সময় পর্যন্ত। এছাড়া হোসেনি দালান, কসাইটুলি, খাজে দেওয়ান, বকশিবাজার, মিটফোর্ডসহ কয়েকটি মহল্লায় চলে কাসিদা প্রতিযোগিতা। আগে তো বিভিন্ন গায়েন দল বিভিন্ন গজলে রোজাদারদেরকে আনন্দ দিয়ে মুখে কাসিদা গাইতো। ডিজিটাল এই যুগে অল্প সংখ্যক গায়েন দল রেকর্ডারে কাসিদা তৈরী করেন। বড় স্পিকারে কাসিদা বাজে আর কাসিদা দল এলাকা ঘুরে ঘুরে মানুষদের জাগিয়ে তোলে।
কর্মকর্তা (অবঃ), বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি), পল্লী ভবন, কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫
anwaraftab611@gmail.com