প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৮ জুলাই, ২০২৫, ৭:২১ PM আপডেট: ০৮.০৭.২০২৫ ৭:২৫ PM
বাংলাদেশ সরকার এবং দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের মধ্যে ২০০৭ সালে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের আওতায় ‘জি-টু-জি’ (Government to Government) ভিত্তিতে ইপিএস (Employment Permit System) কর্মসূচি চালু হয়। এতে বাংলাদেশের পক্ষে বোয়েসেল (BOESL) এবং দক্ষিণ কোরিয়ার পক্ষে এইচআরডি কোরিয়া (HRD Korea) দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করে আসছে। ২০০৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত দক্ষিণ কোরিয়ার ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে ৩৬,২২৪ জন বালাদেশি কর্মী স্বল্প অভিবাসন ব্যয়ে উচ্চ বেতনের কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়েছে কিন্তু ২০২৪ থেকে কোরিয়ার রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অর্থনৈতিক মন্দার কারণে বাংলাদেশের শ্রমিকদের ভিসা ইস্যুর পরিমাণ কমে যায় আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে দালাল চক্র, তাই দক্ষিণ কোরিয়ার জাহাজ শিল্পে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকদের দালাল চক্র থেকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে দক্ষিন কোরিয়ার মোকপো সিটিতে মানববন্ধন করেন কোরিয়ার শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করা সংগঠন শ্রমিক ইউনিয়ন MTU। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন এম টি ইউর সিনিয়র সহ-সভাপতি মামুন আল শেখ বলেন আমাদের মানববন্ধন এবং সংবাদ সম্মিলনের উদ্দেশ্য কোরিয়াতে জাহাজ শিল্পী শ্রমিকদের একটি সুষ্ঠু, মানবিক কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা।
প্রায় এক বছর আগে, একজন বাংলাদেশি দালাল — যাকে আমরা দালাল A হিসেবে চিহ্নিত করেছি — তার মাধ্যমে প্রায় ১৬-১৭ লাখ টাকা খরচ করে দুই ধাপে ৪০ জন বাংলাদেশি শ্রমিক কোরিয়ার একটি জাহাজ নির্মাণ কোম্পানিতে কাজে আসে। প্রথম দিকে, তারা সবাই সঠিকভাবে কাজ করছিল এবং কোম্পানির কাছ থেকেও তারা স্বাভাবিক সুবিধা পাচ্ছিল।কিন্তু ছয় মাস পরে, একই দালাল A নিজেই ঐ কোম্পানিতে কাজে যোগদান করে এবং এরপর থেকেই বাংলাদেশি শ্রমিকদের ওপর শুরু হয় নানা ধরনের নির্যাতন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য:
* খাবার খরচ ও রুম ভাড়া অযথাভাবে বাড়িয়ে দেওয়া
* কোম্পানির পক্ষ থেকে দেওয়া পানি ও বিদ্যুৎ বিল বন্ধ করে শ্রমিকদের থেকে জোরপূর্বক আদায়
* ছুটির দিনে দালালের অনুমতি ছাড়া বাইরে গেলে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার হুমকি
* মানসিক চাপ ও হুমকি-ধামকি দিয়ে শ্রমিকদের আতঙ্কিত রাখা
এই পরিস্থিতির চরম পর্যায়ে, দালাল A এর প্রভাবে রিয়াদ এবং আলম তাদের দেশের বাড়ি চাঁদপুর দুইজন বাংলাদেশি শ্রমিক ছাঁটাই করা হয়। বর্তমানে এই দুইজন শ্রমিক অত্যন্ত অসহায় অবস্থায় সুবিচারের আশায় বিভিন্ন সংগঠনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
আমরা, প্রবাসী শ্রমিক ইউনিয়ন (MTU)এবং সংশ্লিষ্ট সামাজিক সংগঠনসমূহ, এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং দালাল A-এর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাই।
আমাদের লক্ষ্য — জাহাজ শিল্পে বাংলাদেশ থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় আসতে চাওয়া শ্রমিকরা যেন দালাল ব্যতীত অল্প খরচে কোরিয়াতে আসতে পারে এবং দালাল ও দমননীতিমূলক আচরণ থেকে মুক্ত থেকে সম্মানের সঙ্গে কাজ করতে পারে।