প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৪:৪৪ পিএম (ভিজিট : ৩৩)

সেনা কর্মকর্তা পরিচয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণায় জড়িত চক্রের হোতাসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৪। গতকাল সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢাকা ও সাভারে এ অভিযান চালানো হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন- সোহেল রানা ওরফে মিলন, তৈয়ব ওরফে মোস্তাক, সজীব মুন্সি, শামীম আহমেদ, মওলাদ আলী খান ও সোহেল রানা ওরফে জিন্নাহ। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে একটি প্রাইভেটকার, সাতটি মোবাইল ফোন, দুটি ভুয়া নিয়োগপত্র এবং নগদ ৯৫ হাজার ২০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও তাদের কাছে একজন ভুক্তভোগীকে পাওয়া যায়, যাকে সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার নাম করে নিয়ে এসেছিল।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর মিরপুরে র্যাব-৪ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে র্যাব-৪ এর সদর কোম্পানি কমান্ডার শাহাবুদ্দিন কবীর বলেন, কয়েক দিন আগে সোহেল রানা নামে এক ব্যক্তি আমাদের কাছে অভিযোগ করেন যে, তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। তার আপন ছোট ভাই গত ১৪ সেপ্টেম্বর সফিপুর আনসার ব্যাটালিয়ন একাডেমিতে নিয়োগ পরীক্ষায় প্রাথমিক বাছাইয়ে বাদ পড়েন। এসময় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি মোবাইলে ফোনের মাধ্যমে জানায় তার ভাইয়ের কিছু শারীরিক সমস্যা আছে। ভুক্তভোগী তার পরিচয় জানতে চাইলে সে নিজেকে মেজর সোহেল পরিচয় দেয় এবং তার সঙ্গে পরে দেখা করতে বলে। পরবর্তীকালে ভুক্তভোগী ঢাকার শাহ আলী থানা এলাকার একটি হোটেলে সোহেল রানার সঙ্গে দেখা করেন। তখন সোহেল নিজেকে সেনাবাহিনীর মেজর পরিচয় দেয় এবং তার সঙ্গে থাকা তৈয়বুর রহমানকে সেনাবাহিনীর কর্নেল বলে পরিচয় করিয়ে দেয়। সোহেল ভুক্তভোগীর ভাইকে আনসার ব্যাটালিয়ন সিপাহী পদে চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে জানায়, তার সঙ্গে আনসারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের যোগাযোগ আছে। ১২ লাখ টাকা দিলে তার ছোট ভাইকে চাকরিতে নিয়োগ নিশ্চিত করতে পারবে।
র্যাব-৪ এর কর্মকর্তা বলেন, এই প্রস্তাবে ভুক্তভোগী রাজি হন এবং সে মোতাবেক ১৫ সেপ্টেম্বর একটি ব্যাংক এ্যাকাউন্টের মাধ্যমে চার লাখ টাকা দেন। টাকা পাওয়ার পর মেজর পরিচয়দানকারী সোহেল, কর্নেল পরিচয় দানকারী তৈয়বুর রহমানসহ অন্যান্য আসামিরা ভুক্তভোগীকে তার ভাই রাজুর আনসার ব্যাটালিয়নে যোগদানের নিয়োগপত্র দেয়। নিয়োগপত্রটি দেওয়ার পর বিকাশ ও নগদ এ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আরো এক লাখ টাকা নেয়। নিয়েগপত্রটি পেয়ে ভুক্তভোগী তার ভাইকে নিয়ে বাড়ি যান। বাড়ি গিয়ে তারা তাদের গ্রামের আনসারের সিপাহি পদে নিয়োগপত্র প্রাপ্ত হয়েছেন এমন একটি ছেলের নিয়োগপত্রের সঙ্গে তাদের নিয়োগপত্রটির অনেক গড়মিল দেখেন। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারেন, আসামিদের দেওয়া নিয়োগপত্রটি ভুয়া।
র্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় আসামিরা সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। দীর্ঘদিন ধরে তারা ঢাকা মহানগরীতে অবস্থান করে চাকরিপ্রত্যাশীদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিল। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা আছে। ইতোপূর্বে একই ধরনের অপরাধে জড়িত থাকার কারণে র্যাব-৪ এর অভিযানে তারা দুইবার গ্রেপ্তার হয়েছিল।