প্রকাশ: সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৬:১৯ পিএম (ভিজিট : ৪০)
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক এনায়েত করিম চৌধুরী ওরফে মাসুদ করিম। নিজেকে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের এজেন্ট হিসেবে পরিচয় দিতেন। রাজধানীর মিন্টো রোড থেকে গ্রেপ্তারের পর এখন কারাগারে তিনি। ৫৪ ধারায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তবে বাংলাদেশের গোয়েন্দা সূত্র বলছে, অনেক দিন ধরেই নানা ধরনের প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত এনায়েত। বিভিন্ন শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীর নানা ফাঁদে ফেলতেন তিনি। মামলা থেকে বাঁচিয়ে দেওয়ার কথা বলে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টাও করতেন। সর্বশেষ একটি বড় শিল্প গ্রুপের কর্ণধার ঢাকায় এনায়েতের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। একটি হোটেলে তাদের মধ্যে সাক্ষাৎ হয়। ‘হত্যা’ মামলা থেকে ওই শিল্পপতির নাম বাদ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন এনায়েত।
পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মাসুদ আলম বলেন, অন্য একটি গোয়েন্দা সংস্থা এনায়েতকে অনুসরণ করছিল। গ্রেপ্তারের পর রমনা থানা পুলিশের মাধ্যমে তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়। রোববার রাতে তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করা হয়েছে।
পুলিশ বলছে, শনিবার সকালে এনায়েত করিম চৌধুরী একটি প্রাডো গাড়িতে মিন্টো রোড এলাকায় সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করছিলেন। গাড়ি থামিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে ওই এলাকায় ঘোরাঘুরি করার বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। পরে তাঁকে আটক করে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়ে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়ে সোমবার রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেন।
সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এনায়েত করিম বলেছেন, বর্তমান সরকার পরিবর্তন করে নতুন জাতীয় সরকার গঠনে কাজ করতে তিনি বাংলাদেশে এসেছেন। তাঁর দাবি, তিনি বিশেষ একটি দেশের গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার খুব নাজুক অবস্থায় আছে। সেনাবাহিনীর সঙ্গেও এ সরকারের দূরত্ব তৈরি হয়েছে। এই সুযোগে বর্তমান সরকারকে পরিবর্তন করতে বাংলাদেশে এসেছেন তিনি। সরকারি উচ্চ ও নীতিনির্ধারক পর্যায়ের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী নেতা ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে গোপন বৈঠক করেছেন।
পুলিশ বলছে, এনায়েতের কোনো বাংলাদেশি পাসপোর্ট ও এনআইডি পাওয়া যায়নি।
আদালতে জমা দেওয়া পুলিশের প্রতিবেদনে বলা হয়, তিনি ৬ সেপ্টেম্বর সকালে নিউইয়র্ক থেকে কাতার এয়ারওয়েজের একটি বিমানে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসেন। প্রথম দুদিন সোনারগাঁও হোটেলে ছিলেন তিনি। পরের কয়েক দিন গুলশানে ছিলেন। ১৯৮৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে যান তিনি। ২০০৪ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পান।
এর আগে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার আমলেও (২০০১-০৬ সাল) একবার রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে এনায়েত করিমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।