কুড়িগ্রামের ব্যস্ততম শহর এলাকায় যানজট নিরসনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ। গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে ট্রাফিক সদস্যদের উপস্থিতি এবং সুশৃঙ্খল যানবাহন ব্যবস্থাপনা বদলে দিয়েছে শহরের সড়ক চিত্র।
ঘুরে দেখা গেছে শহরের শাপলা চত্বর, ঘোষপাড়া, কলেজ মোড়, দাদা মোড়, জজ কোর্ট মোড় ও বাসটার্মিনাল এলাকাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে যানজট কমাতে সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা। অবৈধ পার্কিং বন্ধ, হেলমেটবিহীন মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ এবং তিনজন আরোহী চলাচলে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে তারা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছেন।
কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী রত্না ফারিহা বলেন,
"কলেজ ছুটি হলে সড়কে যানজট লেগেই থাকতো। তবে এখন ট্রাফিক পুলিশের চেষ্টায় সেই চিত্র অনেকটাই পাল্টেছে।"
সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র সচ্ছ বলেন,
"স্কুল ছুটির পর রাস্তায় ভিড় হলেও ট্রাফিক পুলিশ তা দক্ষভাবে নিয়ন্ত্রণ করে, এতে আমরা নিরাপদে সড়ক পার হতে পারি।"
সুলতানা পার্কের পাশে শরীরচর্চার রাস্তা দিয়ে যেন মোটরসাইকেল চলাচল না করতে পারে, সে বিষয়েও রয়েছে ট্রাফিক পুলিশের কঠোর নজরদারি। এই পার্কে নিয়মিত হাঁটতে আসা হাফেজুর রহমান বলেন,
"এক সময় পার্কের রাস্তা দিয়ে উশৃঙ্খলভাবে মোটরসাইকেল চালানো হতো। এখন ট্রাফিক পুলিশের তৎপরতায় আমরা নিশ্চিন্তে হাঁটতে পারি।"
নিয়মিত পথচারী মোঃ সালমান সোহেল বলেন,
"সুলতানা পার্ক এলাকায় এখন নিরাপত্তা ব্যবস্থা চোখে পড়ার মতো। আমরা প্রশংসা না করে পারি না।"
এছাড়া শহরে ফিটনেসবিহীন যানবাহন চলাচল রোধেও রয়েছে ট্রাফিক পুলিশের কঠোর নজরদারি। অন্যদিকে, রিকশা-ভ্যান চালকদের সুশৃঙ্খলভাবে চলাচলের জন্য পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে তারা।
রিকশাচালক হামেদুল ইসলাম বলেন,
"ট্রাফিক পুলিশ আমাদের সহযোগিতা করে, কীভাবে চলতে হবে সেটা বুঝিয়ে বলে। এতে আমাদের যাত্রী পরিবহনও নিরাপদ হয়।"
জেলা রিকশা ও ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ খলিলুর রহমান জানান,
"আমরা ট্রাফিক পুলিশের পরামর্শ অনুযায়ী রিকশা স্ট্যান্ডের ব্যবস্থা করেছি যাতে যানজট সৃষ্টি না হয়। তাদের সঙ্গে সমন্বয় করেই কাজ করছি।"
কুড়িগ্রাম সদর ট্রাফিক ইনচার্জ মোঃ মঞ্জুর হোসেন বলেন,
"আমরা কুড়িগ্রামকে যানজটমুক্ত রাখতে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছি। সাধারণ মানুষ যেন নিরাপদে চলাফেরা করতে পারে – সেটিই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।"
তিনি আরও বলেন,
"মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ছে, বিভিন্ন পেশার মানুষ একত্রে কাজ করলে একটি যানজটমুক্ত কুড়িগ্রাম গড়ে তোলা সম্ভব। ভবিষ্যতে এ লক্ষ্যে যা করণীয় আমরা তা করব এবং সবার সহযোগিতা কামনা করছি।"
এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার মোঃ মাহফুজুর রহমান বলেন,
"কুড়িগ্রাম শহরকে যানজটমুক্ত করতে আমরা বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি এবং সে অনুযায়ী কার্যক্রমও চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হয়েছে। বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল বা যে কোনো যানবাহন চালালে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এছাড়া, যারা ট্রাফিক বিধিমালা ভঙ্গ করছে, তাদের বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা আমরা ধারাবাহিকভাবে বাড়াচ্ছি।"