প্রকাশ: শনিবার, ২ আগস্ট, ২০২৫, ৫:৪৬ PM
সিলেট মহানগরীর সাগরদীঘির পাড়ে ১ একর ১০ শতক জমির বৈধ মালিকানা থাকা সত্ত্বেও মালিকদের জমিতে প্রবেশ ও ব্যবহারের সুযোগ দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগীরা। জমির বর্তমান মালিক সামরান হোসেন চৌধুরী রাজুসহ কয়েকজন অভিযোগ করে বলেন, গত ছয়মাস ধরে পুলিশ সেখানে নিরাপত্তা চৌকি বসিয়ে জমি দখলে রেখেছে। যা সম্পূর্ণ অবৈধ ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
শনিবার (২ আগষ্ট রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন এ অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগী সামরান হোসেন বলেন, ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে হিমাংশু রঞ্জন গুপ্তের কাছ থেকে ওই জমি কেনেন তিনিসহ আরও কয়েকজন। তবে ক্রয়ের সময় জমির ওপর এসটিএস গ্রুপ অবৈধ দাবিদার ছিলেন। গ্রুপের চেয়ারম্যান ছিলেন তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী টিপু মুন্সী। এর আগে হিমাংশু রঞ্জন গুপ্তের অভিযোগের ভিত্তিতে এসটিএস গ্রুপের দলিল বাতিল ঘোষণা করেন আদালত। তারপরও সাবেক মন্ত্রী প্রভাব কাটিয়ে জমি দখলে রাখেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ছাত্র–জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর টিপু মুন্সী জমি থেকে সরে গেলেও নতুন করে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেন স্থানীয় জাতীয় পার্টি নেতা নজরুল ইসলাম বাবুল। বর্তমানে তিনিই পুলিশকে ব্যবহার করে জমি দখলের চেষ্টাসহ প্রকৃত মালিকদের হয়রানি করছেন। এ জন্য জমির কেয়ারটেকার দেলোয়ার ও তার স্ত্রী পারভিনকে দিয়ে জমির মালিকদের নামে মিথ্যা ধর্ষণ মামলা করিয়েছেন। সিসিটিভি ফুটেজ দেখলেই প্রমাণিত হবে এটি সাজানো মামলা। বাদী অতীতেও সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার থানায় একাধিক মিথ্যা মামলা করেন।
সামরান হোসেন বলেন, ‘সম্প্রতি নুরুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের সহযোগিতায় সন্ত্রাসীরা জমি দখলের জন্য হামলা চালায়। জমির মালিকরা সেখানে উপস্থিত না থাকলে পুলিশের ওপর হামলার মিথ্যা অভিযোগ নিয়ে এসে জমির মালিকদের নামে মামলায় করা হয়।’ এলাকাবাসীর সমর্থন থাকা সত্ত্বেও পুলিশ ‘নিরাপত্তার অজুহাতে’ জমি দখল করে রেখেছে বলে দাবি ভুক্তভোগীদের।
জমির প্রকৃত মালিক সামরান হোসেন ও তার অংশীদাররা অবিলম্বে পুলিশ সরানোর দাবি জানিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীরা বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টা উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও আইজিপির হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে সিলেট কোতোয়ালি থানার ওসি জিয়াউল হক বলেন, ‘অপরাধপ্রবণ হওয়ায় ড্রিম সিটির পাশে পুলিশের অস্থায়ী ক্যাম্প ছিল। সেখানে অবকাঠামোগত কাজ চলছে। এ জন্য পুলিশ সাময়িকভাবে ড্রিম সিটির দুটি কক্ষ ব্যবহার করছে। ওখানে কারো সম্পদ দখল করা পুলিশের কাজ নয়, অভিযোগ ভিত্তিহীন। উল্টো ওই স্থাপনায় ধর্ষণ, মাদক কারবারসহ কিশোর গ্যাংয়ের অভয়ারণ্য হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ আছে।’
ওসি বলেন, ‘ওই জমির মালিক ড্রিম সিটি না। বিষয়টি নিয়ে উচ্চ আদালতে মৎস্য অধিদপ্তর ও এসটিএস গ্রুপের মধ্যে মামলা চলছে বলে শুনেছি।’