কলেজে ভর্তি ও সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষার দাবিতে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের সামনে বিক্ষোভ করেছে চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় ফেল করা শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর বকশিবাজারের ঢাকা বোর্ডের সামনে এ বিক্ষোভ করে তারা। কর্মসূচি থেকে চার দফা দাবি তুলে ধরা হয়।
বিক্ষোভকারীরা বলেন, শিক্ষা কার্যক্রমের সব কিছু সংস্কার না করে শুধু এসএসসির ফলাফলে সংস্কার করা হয়েছে। এতে বেশি শিক্ষার্থী ফেল করেছে। দ্রুত আমাদের সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। কলেজে ভর্তির নিশ্চয়তা দিতে হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
১. প্রশ্নপত্রের বৈষম্য দূর করতে হবে। বোর্ডভেদে প্রশ্নের মান ও জটিলতায় যে অসামঞ্জস্যতা ছিল, তা বিচার করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।
২. অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা নিতে হবে।
৩. এমসিকিউ ও সিকিউ উভয় অংশ মিলিয়ে পাসের ব্যবস্থা করতে হবে।
৪. অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের কলেজে ভর্তি নিশ্চিত করতে হবে। প্রাথমিকভাবে শিক্ষার্থীরা কলেজে ভর্তি না হতে পারলেও প্রতিশ্রুতি দিতে হবে সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা পরে কলেজে অ্যাডমিশন নিতে পারবে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানায়, এ বছর সাড়ে ৬ লাখের বেশি পরীক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছে। বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী এখন চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। দ্রুত সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।
জানতে চাইলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খন্দোকার এহসানুল কবির বলেন, তাদের দাবি কতটা যৌক্তিক, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এরপরও শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অবগত করবো।
এর আগে গত ১৪ ও ১৫ জুলাই ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন এসএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য একদল শিক্ষার্থী। তবে গত দুই দিনের চেয়ে আজকের বিক্ষোভে উপস্থিতি বেশি দেখা গেছে।
গত ১০ জুলাই এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। এতে ৬ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী ফেল করেন। এর পরের দিন ১১ জুলাই রাতে ‘এসএসসি পরীক্ষা ২০২৫ ব্যাচের অকৃতকার্য পরীক্ষার্থীদের পক্ষে’ গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে ৪ দফা দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয়।
সেই বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষার্থীরা জানান, শুধুমাত্র এমসিকিউ অংশে ১-২ নম্বর কম থাকায় তারা ফেল করেছেন। যদিও রচনামূলক অংশে তাদের নম্বর ৪০ থেকে ৫০-এর বেশি। ফলে এক বছরের জন্য তারা শিক্ষা কার্যক্রম থেকে ছিটকে পড়েছেন।
রচনামূলক ও এমসিকিউ আলাদা আলাদা পাসের নিয়মের কারণে এ বছর প্রায় ছয় লাখ শিক্ষার্থী ফেল করেছেন। তারা মনে করছেন, এ নিয়ম অমানবিক। শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার ছাড়াই এটি কার্যকর করা হয়েছে।
সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষার দাবির পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে তারা আরও বলেন, যেসব শিক্ষার্থী তিন বিষয়ের মধ্যে ফেল করেছেন, তাদের জন্য আগামী ১-২ মাসের মধ্যে সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হলে অধিকাংশই উত্তীর্ণ হবেন। এতে করে শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়া ও সমাজের অবহেলার শিকার হওয়া থেকে রক্ষা পাবেন।