প্রকাশ: বুধবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৮:৩৮ পিএম (ভিজিট : ৭৬)
পটুয়াখালীর বাউফলে শিক্ষকদের চলমান কর্মবিরতির জেরে উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে একটি বিরল চিত্র দেখা গেছে—শিক্ষকদের অনুপস্থিতিতে বার্ষিক পরীক্ষার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন অভিভাবকরা। প্রশ্নপত্র বিতরণ, খাতা সরবরাহ থেকে শুরু করে পরীক্ষার হল পরিদর্শন—সব দায়িত্বই সামলাতে হচ্ছে অভিভাবকদের।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) সকালে বাউফল পৌরসভা ও বিভিন্ন ইউনিয়নের একাধিক বিদ্যালয় ঘুরে দেখা যায়, শিক্ষকরা কর্মবিরতি পালন করছেন; আর পরীক্ষার কক্ষগুলোতে অভিভাবকরাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে দায়িত্ব পালন করছেন।
অভিভাবকদের অভিযোগ, হঠাৎ কর্মবিরতিতে যাওয়ায় পরীক্ষার্থীরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। পরীক্ষা নিয়ে দেখা দেয় অনিশ্চয়তা ও আতঙ্ক। পরে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুরোধে অভিভাবকরাই পরীক্ষার দায়িত্ব নিতে সামনে আসেন।
৬৮ নম্বর নাজিরপুর বোর্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরীক্ষার হলে দায়িত্ব পালনকারী অভিভাবক জাকারিয়া বেগম বলেন, "আমি পরীক্ষার হলে শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছি। বছরের শেষে যে মূল্যায়ন হওয়ার কথা, সেটি যাতে নষ্ট না হয়—সেই চিন্তা থেকেই আমরা গার্ডিয়ানরা এগিয়ে এসেছি। শিক্ষকদের আন্দোলন বাচ্চাদের জন্য বড় সমস্যা তৈরি করছে।"
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, "শিক্ষকদের দাবি থাকতে পারে; কিন্তু পরীক্ষাকে জিম্মি করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমাদের সন্তানরা সারা বছর পড়াশোনা করেছে। বার্ষিক পরীক্ষার মাধ্যমে এর মূল্যায়ন হওয়াই স্বাভাবিক। আন্দোলন তারা রাস্তায় করুক, ক্লাসে নয়।"
এ বিষয়ে ৬৮ নম্বর নাজিরপুর বোর্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তসলিমা বেগম বলেন, "গতকাল পরীক্ষা নিতে পারিনি। আজ উর্দ্ধতন কর্মকর্তা টিও স্যার এসে জানিয়েছেন, আজ থেকেই পরীক্ষা নিতে হবে। শিক্ষকরা সহযোগিতা না করলে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি বা অভিভাবকদের দিয়ে পরীক্ষা নিতে হবে—এমন নির্দেশই পাওয়া গেছে।"
ঘটনা বিষয়ে জানতে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আতিকুল ইসলামের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।