প্রকাশ: বুধবার, ৫ নভেম্বর, ২০২৫, ৮:০৪ পিএম (ভিজিট : ৭৫)
খেলার মাঠ দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে বিভিন্ন স্থাপনা। ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, ভূমি অফিস, ক্লাব ও দোকানপাট নির্মাণে মাঠটি ক্রমেই ছোট হয়ে পড়ছে। মাঠের অবশিষ্ট জায়গায় এখন আবার বসানো হচ্ছে সাপ্তাহিক গরুর হাট। প্রতিদিন
বসছে মাছ ও কাঁচাবাজার। এতে নষ্ট হচ্ছে খেলার মাঠটি। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এমন অবস্থা দেখা গেছে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার কাকরকান্দি ইউনিয়নের কাকরকান্দি খেলার মাঠে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় শতবছর আগে এলাকার আদিবাসী পরদ চন্দ্র দিও জনসাধারণের খেলার জন্য নিজের কাকরকান্দি মৌজার ২০৮৯ নম্বর দাগে ২ একর ৭০ শতাংশ জমি দান করেন। সেই জমিতে তৈরি হয় খেলার মাঠ। কাকরকান্দি খেলার মাঠ থেকে শুরু হয়েছিল নালিতাবাড়ীর প্রথম ফুটবল খেলা। এখানে প্রতিবছর গ্রামীণ ফুটবল ও ভলিবল প্রতিযোগিতা হতো। আশপাশের থানা ও গ্রাম থেকে দল এসে প্রতিযোগিতায় অংশ নিত। মাঠটিই ছিল তরুণদের শৈশবের আনন্দ ক্ষেত্র।
এই মাঠ ছিল স্থানীয় ক্রীড়াপ্রেমীদের প্রাণের স্পন্দন। গ্রামের তরুণদের বিকেলের আড্ডা, উৎসব ও টুর্নামেন্টের প্রধান কেন্দ্র। কিন্তু আজ সেই মাঠ অস্তিত্ব হারাতে বসেছে।
স্থানীয় ফুটবল খেলোয়াড় পনির বলেন, ‘এই মাঠেই আমাদের ফুটবল শেখা। এই মাঠেই আয়োজন করা হতো বড় বড় ফুটবল টুর্নামেন্ট। মাঠের জায়গা দখল হয়ে যাওয়ায় আমরা খেলার সুযোগ হারাচ্ছি।’
জমিদাতা পরদ চন্দ্র দিওর ছেলে প্রবীণ ফুটবলার পিযুষ চন্দ্র দিও জানান, এটি শুধু একটি খেলার মাঠ নয়, এটি ইতিহাসের অংশ। তাঁর বাবা জনকল্যাণের জন্য মাঠ দিয়েছিলেন। এখন সেটি বাজারে পরিণত হয়েছে, চারপাশ দখল হয়ে গেছে– যা কষ্টদায়ক।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, গরুর হাটের জন্য জায়গা নির্ধারণ করা থাকলেও খেলার মাঠে বসানো হচ্ছে হাট। বসানো হচ্ছে মাছ ও কাঁচাবাজার। প্রায় চার বছর আগে প্রশাসনের উদ্যোগে মাঠ সংরক্ষণের জন্য সীমানা পিলার স্থাপন করা হয়েছিল, কিন্তু এখন পিলারের জায়গায় পিলার আছে, গরুর হাট, কাঁচাবাজার সবই চলছে। ফলে শিশু-কিশোররা খেলাধুলা থেকে বিমুখ হয়ে মোবাইল ফোনে আসক্ত হয়ে পড়ছে।
উপজেলা সহকারী কর্মকর্তা (ভূমি) আনিসুর রহমান জানান, ইউএনও ছুটিতে আছেন। তিনি এলে তাঁর সঙ্গে কথা বলে মাঠের বিষয়টি স্থানীয়দের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে খতিয়ে দেখা হবে। এরপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।