রবিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ৬ আশ্বিন ১৪৩২
 
শিরোনাম:


সারাদেশ
ঝিনাইগাতীতে মহারশি নদীর ভাঙনে বিলীন ১১ পরিবারের বসতভিটা, কিশোরের লাশ উদ্ধার : কাজে আসেনি ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ!
প্রকাশ: শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৭:২৯ পিএম   (ভিজিট : ৬২)

শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে পাহাড়ি ঢলের তোড়ে মহারশি নদীর বাঁধ ভেঙে মুহূর্তেই বিলীন হয়ে গেছে ১১টি পরিবারের ঘরবাড়ি। টানা কয়েকদিনের ভারি বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব এসব পরিবার এখন আশ্রয় নিয়েছেন স্থানীয় একটি বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে।

এদিকে ভেসে যাওয়া নিখোঁজ কিশোর মো. ইসমাইল হোসেন (১৭)-এর লাশ শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে খৈলকুড়া এলাকায় ভাঙা বাঁধের ধারে ভেসে উঠলে স্থানীয়রা উদ্ধার করে। জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়। পরে বিকেলে নিহতের বাড়িতে গিয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৫ হাজার টাকা সহায়তা প্রদান করেন ইউএনও মো. আশরাফুল আলম রাসেল।

একদিনেই সর্বস্বান্ত বহু পরিবার, বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ব্রীজসংলগ্ন খৈলকুড়া এলাকায় বাঁধ ভাঙার পর মুহূর্তেই অন্তত ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়। পানির তোড়ে ভেসে যায় ঘরবাড়ি, ভেঙে পড়ে বিদ্যুতের খুঁটি, ডুবে যায় বাজারঘর। নদীগর্ভে বিলীন হয় ১১ পরিবারের বসতভিটা। এ ঘটনায় ৫০টিরও বেশি মাছের ঘের নিশ্চিহ্ন হয়েছে। তলিয়ে গেছে ৩৪৫ হেক্টর জমির আমন ধান ও ১০ হেক্টর সবজি ক্ষেত। আরও ৫৭৫ হেক্টর ধান জমি ও ২৫ হেক্টর সবজি ক্ষেত আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ভাঙনকবলিত খৈলকুড়ার বিধবা রহিমা বেগম আর্তনাদ করে বলেন, “আল্লাহ আমার সব শেষ কইরা দিল। ঘর নাই, ফসল নাই, মাছা বাইধি রাখার জায়গা নাই। বাপ-দাদার কষ্টের সব নদী খাইয়া ফেললো। এখন আমি কোথায় যামু?”
গত দুই বছরে তিনবার ভাঙনের শিকার হয়েছেন তিনি। এবার তার দুইটি ঘর, সামান্য আসবাব ও ফসলি জমিও নদীগর্ভে চলে গেছে। ঢলের পর শরীরে থাকা কাপড় ছাড়া কিছুই অবশিষ্ট নেই।

ঝিনাইগাতী ক্ষুদ্র বণিক সমিতির সভাপতি মো. মোখলেছুর রহমান খান বলেন, “প্রতিবছর বর্ষায় মহারশি নদীর ঢলে বাজার তলিয়ে যায়। দোকানপাট, মালামাল সব পানিতে নষ্ট হয়। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি।” তিনি স্থায়ী বাঁধ, দোকানঘরের মেঝে উঁচু করা এবং বাজার এলাকায় টেকসই ড্রেন নির্মাণের জোর দাবি জানান।

স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ২০২৪ সালের ঢলে একই বাঁধ ভেঙে গিয়েছিল। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ড কোনো সংস্কার করেনি। বারবার দাবি জানালেও ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। ফলে এ বছর আবারও একই স্থানে ভয়াবহ ভাঙনে সর্বস্ব হারাতে হলো সাধারণ মানুষকে।

শেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আখিনুজ্জামান বলেন, স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এছাড়া ৫কোটি টাকার বরাদ্ধ বিষয়ে কোন ত্রুটি  থাকলে আমি নই, পূর্বের কর্মকর্তা দায়ী।

অন্যদিকে ইউএনও মো. আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, নদীর পানি কমে গিয়ে বেরিয়ে আসছে ক্ষত। এতে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরি হচ্ছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সরকারিভাবে সহায়তা দেওয়া হবে।

স্থানীয়দের প্রশ্ন, ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে  মহারশি নদীর ভাঙ্গনরোধে ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। কিন্তু সেই টাকার ২০% কাজও দৃশ্যমান হয়নি। কাজের নামে হয়েছে কেবল কাগজ-কলমের চালাকি। তার মাশুল দিচ্ছে সাধারণ মানুষ, ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে।







আরও খবর


 সর্বশেষ সংবাদ

শানাকার ঝড়ো ইনিংসে বাংলাদেশকে ১৬৯ রানের লক্ষ্য দিল শ্রীলঙ্কা
জুলাই স্মৃতি জাদুঘরে ফুটে উঠবে শেখ হাসিনার ১৬ বছরের দুঃশাসনের চিত্র
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টস জিতে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ দল
সিলোনিয়া, মুহুরী ও ফেনী নদীর পানি বাড়তে পারে
আগামী নির্বাচনে তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা ধানের শীষের পতাকা উঁচিয়ে ধরবো : এ্যানি
আরো খবর ⇒


 সর্বাধিক পঠিত

আসন্ন নির্বাচনে হাসিনাসহ শেখ পরিবারের সদস্যরা ভোট দিতে পারবেন না
‘সাইয়ারা’ সাফল্যের পর প্রতিবাদী নারী চরিত্রে ফিরছেন অনীত পাড্ডা
রাজাকারের নাতিপুতি বলে শিক্ষার্থীদের ট্যাগ দেওয়া ছিল অমর্যাদাকর
রুবেল-রবিন দুই ভাইয়ের সিন্ডিকেট এখনো সক্রিয় এনসিটিবিতে
হানিয়ার সঙ্গে সরাসরি দেখা করার সুযোগ হাতের মুঠোয়!
প্রকাশক: এম এন এইচ বুলু
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মাহফুজুর রহমান রিমন  |   উপদেষ্টা সম্পাদক : রাজু আলীম  
বিএনএস সংবাদ প্রতিদিন লি. এর পক্ষে প্রকাশক এম এন এইচ বুলু কর্তৃক ৪০ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ, বুলু ওশেন টাওয়ার, (১০তলা), বনানী, ঢাকা ১২১৩ থেকে প্রকাশিত ও শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস, ২৩৪ ফকিরাপুল, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
ফোন:০২৯৮২০০১৯-২০ ফ্যাক্স: ০২-৯৮২০০১৬ ই-মেইল: spnewsdesh@gmail.com