শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ১টি পোস্ট দেয়াকে কেন্দ্র করে অতর্কিত হামলার ঘটনার পর বাদী পক্ষের ষড়যন্ত্রমূলক দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা হয়রানির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী পরিবার।
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০ টায় উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের নওকুচি গ্রামের ভুক্তভোগী শাহা আলমের উদ্যোগে নওকুচি বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন বাজারে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আবু হানিফ। তিনি বলেন,নওকুচি গ্রামের শাহা আলমের ছেলে নাজমুল হক (২০) তিনি গত ২৯ আগস্ট ২০২৫ ইং তারিখে, তার ফেসবুক আইডিতে লিখে পোস্ট করেন "আমি যারে ভালবাসলাম সে আমাকে ভালবাসলো না আমাকে যারা ভালবাসল তাদেরকে আমি ভালোবাসতে পারলাম না"
এটি প্রকাশ করার পর ওই পোস্ট দেখে অনেকে বিভিন্ন মন্তব্য করলেও একই গ্রামের "আহমেদ হানিফ" নামের এক আইডি থেকে " মন্তব্য করা হয়, কুকুরের কপালে শুধু মুগুরু যুটে"। এ মন্তব্যটি নাজমুলের নজরে আসলে তিনি আহমেদ হানিফের কাছে জানানোর পর ওই আইডি তারই দাবি করে আহমেদ হানিফ বলেন,গত প্রায় ২ মাস পূর্বে আমার মোবাইল ফোনটি আমার পিতা ভেঙ্গে দেয়। তার পর একই গ্রামের সহিজ উদ্দিনের ছেলে প্রতিবেশী রিপনের ফোন দিয়ে আইডি লগিং করে কয়েকদিন ফেসবুক ব্যবহার করার পর পিতার বাঁধা নিষেধ করার রিপনের ফোন দিয়ে প্রায় দুই মাস যাবৎ ফেসবুক ব্যবহার আমি করিনি। পরবর্তীতে আহমেদ হানিফ নামের আইডি রিপনের ফোন থেকে একাধিক বার তাকে লগ আউট করতে বলা হলেও তিনি সেটা না করে আমার ফেসবুক পাসওয়ার্ড ও আইডি হ্যাকিং করে রিপন, নাজমুলের ওই পোস্টে অপমানজনক কমেন্টটি করেছেন। এদিকে ঢাকা থেকে নাজমুল গত ১১ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার রাতে নওকুচি তার নিজ বাড়িতে আসেন এবং পরদিন শুক্রবার সকালে আহমেদ হানিফের মায়ের সাথে উক্ত ঘটনার বিবরণ তুলে ধরে নিশ্চিত হন নাজমুল।
পরে তিনি বাড়িতে ফিরে আসার সময় নওকুচি সেলিম স্টোরের সামনে আসলে সকাল পৌণে ৮ টা দিকে দেখা হয় রিপনের সাথে। ওই সময় নাজমুল রিপনকে তার আইডিতে করা অপমানজনক ওই কমেন্ট বিষয়ে জানানো হলে,রিপন উত্তেজিত হয়ে অকথ্য ভাষায় নাজমুলকে গালিগালাজ করতে থাকে।

এদিকে খবর পেয়ে নাজমুলের মা নহিলা খাতুন এবং তার পিতা শাহাআলম, ঘটনাস্থলে আসার পর উভয়ের মধ্যে লাটি দিয়ে মারধর দেখে তারা ফিরফার করতে গেলে নাজমুলের মা-বাবাকেও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে রিপন।
ঘটনার পর সত্যিটা উল্লেখ্য না করে রিপনের পিতা সহিজ উদ্দিন বাদি হয়ে থানায় ১টি অভিযোগ দায়ের করেন। তার ওই অভিযোগে পাঁচজনকে অভিযুক্ত করা হলেও ঘটনাস্থল ও মূলঘটনার সাথে প্রমাণ স্বরূপ কোনো মিল নাই।
এছাড়াও যে ৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে এদের মধ্যে ৩ নম্বর অভিযুক্ত আব্দুর রশিদ তিনি ওইদিন ভোর সকালেই তার বন্ধু তাইজুলের মেয়ের বিয়ের দাওয়াতে ময়মনসিংহের ভালুকা গিয়েছিলেন। এবং বিবাহ কার্যক্রম শেষে পরদিন শনিবার তিনি বাড়িতে ফিরে আসেন।
আরও বলেন ঘটনার পর, আহত অবস্থায় শাহা আলম ও নহিলা খাতুন তাদের দুজনকে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে থাকতে দেখে দ্রুত উদ্ধার করতে গিয়ে মুদি দোকান ব্যাবসায়ী সেলিম মিয়াকেও তারা ৪ নম্বর আসামী করে। সংবাদ সম্মেলনে দাবি করে আরও বলেন,লিখিত অভিযোগ দায়ের করার পর শনিবার রাত প্রায় ১১ টা দিকে নওকুচি বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন বাজারের একটা চা দোকান থেকে ২ নম্বর অভিযুক্ত শাহা আলমকে গ্রেফতার করে পরদিন রবিবার কোর্টে তাকে প্রেরণ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে এ ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিও জানান তিনি।
ঝিনাইগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল-আমীন বলেন,যদি কেউ নির্দোষ প্রমাণিত হয় তবে তাকে অব্যাহতি দিয়ে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হবে।