বৃহত্তর সিলেটবাসীর প্রতি রেলওয়ের বৈষম্যমূলক আচরণের প্রতিবাদে এবং আট দফা দাবি দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে কুলাউড়া জংশন স্টেশনের প্লাটফর্মে এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আট দফা দাবি বাস্তবায়ন আন্দোলন’ ব্যানারে গত শনিবার এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। সমাবেশ থেকে কঠোর হুশিয়ারী দিয়ে বলা হয়, সিলেট-ঢাকা ও সিলেট- কক্সবাজার রেলপথে দুটি নতুন ট্রেন চালুসহ আট দফা দাবি না মানলে রেলপথ অবরোধ ও ট্রেন আটকে সিলেটের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়া হবে।
৮ দফা দাবি বাস্তবায়ন আন্দোলনের সমন্বয়ক ও প্রেসক্লাব কুলাউড়ার সভাপতি আজিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল বারী সোহেলের পরিচালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে একাত্মতা প্রকাশ করে বক্তব্য দেন কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জয়নাল আবেদীন বাচ্চু, বহির্বিশ্ব জাতীয়তাবাদী ফোরামের সভাপতি সাইফুল আলম চৌধুরী, উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর মো. জাকির হোসেন, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল জলিল জামাল, জামায়াত নেতা রাজানুর রহিম ইফতেখার, আট দফা দাবি আন্দোলনের সমন্বয়ক আতিকুর রহমান আখই, এন্টি করাপশন সোসাইটির বিভাগীয় চেয়ারম্যান আ ম ন জামান চৌধুরী, সিলেটের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট আমিন উদ্দিন, পৌর জামায়াতের সভাপতি মোঃ রুহুল আমিন রইয়ব, বরমচাল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ইছহাক চৌধুরী ইমরান, কুলাউড়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক খালেদ পারভেজ বক্স, সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি মোক্তাদির হোসেন, জুড়ী উপজেলার পক্ষে সাংবাদিক কল্যাণ প্রসুন চম্পু, বিএনপি নেতা সুরমান আহমদ, কুলাউড়া ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির যুগ্ম সম্পাদক আলমাছ পারভেজ তালুকদার, এন্টি করাপশন সোসাইটির বিভাগীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান নাছির উদ্দীন নিপু, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহজাহান লিটন, ক্রীড়া সংগঠক আব্দুল কাইয়ুম মিন্টু, গণমাধ্যমকর্মী তাজুল ইসলাম, এইচ ডি রুবেল, ইউসুফ আহমদ ইমন, সমাজকর্মী আব্দুস শুকুর ছুরকুম, ছাত্রদল নেতা শামীম আহমদ, যুব সংগঠক শেখ সুমন, আজগর আলী ও সংগঠক মোঃ আব্দুল মজিদ প্রমুখ।
সমাবেশে আন্দোলনকারীরা আরও এক মাসের সময় বেঁধে দিয়ে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করেন। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যাপক জন সমর্থন সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রচারপত্র বিলি এবং সিলেট বিভাগের বিভিন্ন স্টেশনে রেলযাত্রীদের সাথে মতবিনিময়। ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজনৈতিক সংগঠনের সাথে মত বিনিময়। ২৭ সেপ্টেম্বর কুলাউড়া রেলওয়ে স্টেশন প্লাটফর্মে এক বিশাল গণ অনশন কর্মসূচি পালিত হবে। এছাড়া অক্টোবর মাসের শুরুতে ৮ দফা দাবি আদায় না হলে অবরোধের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। এর আগে একই দাবিতে গত ১১ আগস্ট রেল উপদেষ্টা, রেলসচিবসহ বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এছাড়া গত ৯ আগস্ট কুলাউড়া রেলওয়ে স্টেশনে মানববন্ধন, ১৬ আগস্ট সিলেট রেলস্টেশনে মানববন্ধন ও ২৩ আগস্ট শ্রীমঙ্গল স্টেশনে মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বক্তারা বলেন, সিলেট দীর্ঘদিন ধরে রেল যোগাযোগে বৈষম্যের শিকার। ব্রিটিশ আমলে রেল যোগাযোগ গড়ে উঠলেও বর্তমানে এ অঞ্চলের ট্রেনগুলোর ইঞ্জিন ও বগির অবস্থা খুবই নাজুক। পথে প্রায়ই ইঞ্জিন নষ্ট হয়, বেশ কিছু স্টেশন দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। এতে যাত্রীদের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে।
বক্তারা আরো বলেন, ৮ দফা দাবি সিলেটবাসীর ন্যায্য দাবি, ইতোমধ্যে সিলেট জুড়ে এই আন্দোলন বিস্তৃতি লাভ করেছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে এবং আন্দোলন কঠোর থেকে কঠোরতম হবে।
আট দফা দাবি হলো, সিলেট-ঢাকা ও সিলেট- কক্সবাজার রেলপথে দুটি নতুন ট্রেন চালু, সিলেট-আখাউড়া সেকশনের রেলপথ সংস্কার করে ডুয়েলগেজে উন্নীত করা, সিলেট-আখাউড়া লোকাল ট্রেন চালু, সিলেট অঞ্চলে বন্ধ হয়ে যাওয়া রেলস্টেশনগুলো চালু, কুলাউড়া স্টেশনে টিকিট বরাদ্দ বাড়ানো, সিলেট থেকে ঢাকাগামী আন্তনগর কালনী ও পারাবত এক্সপ্রেসের আজমপুর স্টেশন-পরবর্তী যাত্রাবিরতি বন্ধ, সব ট্রেনে নতুন ইঞ্জিন সংযোজন, যাত্রী অনুপাতে অতিরিক্ত বগি সংযোজন।