প্রকাশ: সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৮:২৭ পিএম (ভিজিট : ২৬)
গণপূর্ত অধিদপ্তরের ই/এম-৬ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ তরিকুল আলমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ থেকে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ আছে যে তিনি নিজেকে ক্ষমতাসীন দলের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচয় দিয়ে প্রভাব খাটিয়েছেন। ছাত্র ও জনতার আন্দোলন দমনে অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন তিনি। গত সরকারের সময় তিনি সংবাদকর্মীদের সাথে খারাপ আচরণ করতেন। এই অভিযোগগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে তাকে বিভিন্ন সময় বদলি করা হয়েছিল বলেও জানা যায়।
অভিযোগ রয়েছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একজন প্রভাবশালী কর্মকর্তা ছিলেন তরিকুল আলম। গণপূর্তে করেছেন ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি। ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করে মুহূর্তের মধ্যে দুর্নীতি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য তিনি ছিলেন গণপূর্তের অন্যতম একজন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা।
একাধিক ঠিকাদারের অভিযোগ, কাজের জন্য ঠিকাদারদের কাছ থেকে নির্বাহী প্রকৌশলী তরিকুল আলম টাকা নিয়ে কাজ দেয়নি। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গণপূর্তের সেকেন্ড ম্যান হিসেবে পরিচিত তরিকুল আলম। তিনি এক সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের পরিচয় বহন করতেন। তবে কিশোরগঞ্জের সন্তান হিসেবে তিনি ডিবি হারুনসহ একাধিক আওয়ামী লীগ নেতাকে ব্যবহার করতেন।
জানা গেছে, আবেদন করে প্রকৌশলী তরিকুল আলম রাজধানীর ২৯/এ, ২য় তলা, মিনিস্টারএপার্টমেন্ট-৩ এর বিপরীতে, বেইলী রোড, বাসাটি বরাদ্ধ নিয়ে প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকা খরচ করে একে আলিশান ফ্ল্যাটে রূপান্তরিত করেন। আলিশান এ ফ্ল্যাটে গণপূর্তের সাবেক সচিব ওয়াসি উদ্দীনকে দাওয়াত করে বিশেষ মেজবানি করেন এ প্রকৌশলী। কিন্তু আলিশান এ ফ্ল্যাটের লোভে পড়ে যান ওই সচিব। পরে সচিবের ইচ্ছায় এ ফ্ল্যাটটি ছেড়ে দিয়ে ধানমন্ডির ঝিগাতলায় সরকারি কলনিতে আরেকটি বাসা নেন এই প্রকৌশলী। এর সুবাধে এ প্রকৌশলী সচিবকে দিয়ে নিজের ইচ্ছামতো কাজ ভাগিয়ে নেন তিনি। তাছাড়া আওয়ামী সিন্ডিকেটের আইবি নেতা হিসেবে বদলী পদন্নতি তদবিরেও এ প্রকৌশলী ছিলেন সবার উপড়ে। আর এসব তদবির ও কমিশনের টাকায় ঢাকা ও ঢাকার বাহিরে অঢেল সম্পদের মালিক হন তিনি। তরিকুল আলমের স্ত্রী হোমায়রাতুল জান্নাত পুষ্পর নামেও তিনি কিনেছেন একাধিক ফ্ল্যাট- ফ্লট ও সম্পত্তি।
জানা গেছে, তরিকুল আলম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালীন সময়ে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। গণপূর্তে চাকরি পাওয়ার পর তার আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি। রাতারাতি তিনি কোটিপতি বনে গেছেন। দেশের বাইরে তিনি শতকোটি টাকা পাচার করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নানা ধরনের সংস্কারের জন্য মোট ২২টি কার্যাদেশ দিয়েছিল গৃহায়ন ও গণপূর্ত অধিদপ্তর। এর মধ্যে একটি কাজ শেষ করেছেন ঠিকাদার। বাকি ২১টি কার্যাদেশের বিপরীতে কোনো কাজই হয়নি। অথচ এরই মধ্যে সব কাজের ঠিকাদাররা তাদের পুরো বিল তুলে নিয়েছেন। এই অনিয়ম করেছিলেন ই/এম-৬ এর নির্বাহী প্রকৌশলী পবিত্র কুমার দাস। তারস্থলে স্থলাভিসুক্ত হয়ে ওই ২১টি কাজের টাকার ভাগ নিয়ে ওই দুর্নীতিকে বৈধতা দিয়েছেন তরিকুল আলম।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলী শামীম আক্তার জানান, অনিয়ম দূর্নিতি যেই করুক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোন অন্যায়কে প্রশয় দেওয়া হবে না।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে নির্বাহী প্রকৌশলী তরিকুল আলমকে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।