সোমবার ৪ আগস্ট ২০২৫ ২০ শ্রাবণ ১৪৩২
 
শিরোনাম:


টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন
বাংলাদেশি পর্যটক হারিয়ে কলকাতার ‘মিনি বাংলাদেশে’ হাজার কোটি রুপির ক্ষতি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: সোমবার, ৪ আগস্ট, ২০২৫, ৪:৫০ PM

এক সময় কলকাতার নিউ মার্কেটের পাশের ফ্রি স্কুল স্ট্রিট ও মার্কুইস স্ট্রিট ছিল বাংলাদেশি পর্যটকদের সরব উপস্থিতিতে মুখরিত। সাশ্রয়ী হোটেল, দেশি খাবার, মানি এক্সচেঞ্জ, চিকিৎসা ও কেনাকাটার জন্য জায়গাটি পরিচিত ছিল ‘মিনি বাংলাদেশ’ নামে। তবে গত এক বছর ধরে এই এলাকাটি প্রায় পর্যটকশূন্য। রাস্তাঘাট এখন শুনশান, দোকানপাটে নেই সেই ভিড়। 

বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর শেখ হাসিনার সরকারের পতনের প্রেক্ষাপটে হঠাৎ করেই থেমে যায় বাংলাদেশের পর্যটকদের কলকাতা যাত্রা। এর মারাত্মক প্রভাব পড়ে কলকাতার মিনি বাংলাদেশ এলাকায়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এক বছরে এ অঞ্চলের ক্ষতি ছাড়িয়েছে ১ হাজার কোটি রুপি, আর আশপাশের নিউ মার্কেট ও বুররাবাজারের ক্ষতি ধরলে সেই অঙ্ক ৫ হাজার কোটি ছাড়িয়ে যেতে পারে।

ব্যবসা ধস, দোকানপাট বন্ধ
ফ্রি স্কুল স্ট্রিট ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হায়দার আলি খান জানান, আগে প্রতিদিন প্রায় ৩ কোটি রুপির ব্যবসা হতো এই এলাকায়। এখন সেই অঙ্ক নেমে এসেছে ২০ শতাংশে। ট্রাভেল এজেন্সি, হোটেল, রেস্তোরাঁ, মানি এক্সচেঞ্জ, চিকিৎসা ও পরিবহন ব্যবসা সবখানেই ধস নেমেছে।

মার্কুইস স্ট্রিটের ট্রাভেল কোম্পানির ব্যবস্থাপক প্রবীর বিশ্বাস জানান, আগে প্রতিদিন বাংলাদেশ থেকে কয়েকটি বাস পর্যটক নিয়ে আসত, পার্কিংয়ের জায়গা পাওয়া কঠিন হতো। এখন পর্যটকের দেখা নেই।

মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসার অবস্থাও একই রকম। ইনতেজার নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, “আমরা পুরোপুরি বাংলাদেশি পর্যটকদের ওপর নির্ভরশীল ছিলাম। এখন টিকে থাকার লড়াই করছি।”

রেস্তোরাঁ বন্ধ, চাকরি হারানো শত শত মানুষ
এলাকার প্রায় ৪০ শতাংশ মাঝারি ও ছোট রেস্তোরাঁ ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। বড় রেস্তোরাঁগুলোও কর্মী ছাঁটাই করে খরচ কমিয়ে চালাতে বাধ্য হয়েছে। ‘রাধুনী’ রেস্তোরাঁর মালিক এনসি ভৌমিক বলেন, “ব্যবসা ২০ শতাংশে নেমে এসেছে, এইভাবে চালিয়ে যাওয়া খুব কঠিন।”

করোনার ধাক্কা সামলে ওঠার পর অনেকে ধারদেনা করে হোটেল ও রেস্তোরাঁ সাজিয়েছিলেন, কিন্তু নতুন করে আবার ক্ষতির মুখে পড়েছেন। মানসিক চাপে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন অনেক মালিক। 

পর্যটকনির্ভর সাধারণ মানুষ দিশাহীন
এই এলাকায় যারা হোমস্টে চালাতেন, গাইডের কাজ করতেন, খাবার সরবরাহ করতেন, তারাও এখন কর্মহীন। হোটেলকর্মী, ড্রাইভার, দোকানদারসহ শত শত মানুষ আয়ের উৎস হারিয়ে বিপাকে পড়েছেন। 

এলিয়ট রোডের বাসিন্দা ফারহান রাসুল বলেন, 'দুইটি গাড়ি কিনেছিলাম পর্যটকের চাহিদা দেখে। এখন মাসে ৫-৬টা বুকিং পাই, তাও স্থানীয়, যারা ঠিকমতো ভাড়াও দিতে চায় না। অথচ আমাকে মাসে দেড় লাখ রুপি ইএমআই দিতে হয়।'

একবছরেও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি মিনি বাংলাদেশ
করোনার সময় যেমন ক্ষতি হয়েছিল, এবার তা যেন আরও গভীর। এক বছর কেটে গেলেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাংলাদেশি পর্যটক ফিরে না আসা পর্যন্ত ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব নয়।

মিনি বাংলাদেশে এখন শুধু অতীতের ব্যস্ততা আর সাফল্যের স্মৃতি। আশার কথা, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবারো প্রাণ ফিরে পেতে পারে কলকাতার এই বাংলাদেশি পাড়া। তবে ততদিন পর্যন্ত এখানকার মানুষকে টিকে থাকতে হবে অনেক কষ্টে, ক্ষতির বোঝা বয়ে।







আরও খবর


 সর্বশেষ সংবাদ

জুলাই সনদ-ডিক্লারেশনে চিকিৎসকদের বীরত্বগাথা তুলে ধরার আহ্বান: গোলাম পরওয়ার
জুলাই আন্দোলনে নিহত ১১৪ অজ্ঞাতনামার লাশ উত্তোলনের নির্দেশ
শেখ হাসিনাসহ তার দোসরদের অবৈধ সম্পদের হিসেব নিতে হবে: খায়ের ভূঁইয়া
শেরপুরে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উদযাপন উপলক্ষে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ
যানজট নিরসনে নিরলস প্রচেষ্টা, বদলে যাচ্ছে কুড়িগ্রামের সড়ক চিত্র
আরো খবর ⇒


 সর্বাধিক পঠিত

৩২ ঘণ্টা পর শাহবাগ মোড় থেকে অবরোধকারীদের সরাল পুলিশ
৫ আগস্ট সব পক্ষের উপস্থিতিতে জুলাই ঘোষণাপত্র উপস্থাপন: প্রেস উইং
পুলিশের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ
যুক্তরাষ্ট্রের কাঁচামাল ব্যবহারে রপ্তানিতে শুল্ক ছাড় পাব: বিজিএমইএ সভাপতি
রোববার ছাত্রদল ও এনসিপির সমাবেশ ঘিরে শাহবাগ এলাকায় যানচলাচল নিয়ন্ত্রণ করবে পুলিশ
প্রকাশক: এম এন এইচ বুলু
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মাহফুজুর রহমান রিমন  |   উপদেষ্টা সম্পাদক : রাজু আলীম  
বিএনএস সংবাদ প্রতিদিন লি. এর পক্ষে প্রকাশক এম এন এইচ বুলু কর্তৃক ৪০ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ, বুলু ওশেন টাওয়ার, (১০তলা), বনানী, ঢাকা ১২১৩ থেকে প্রকাশিত ও শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস, ২৩৪ ফকিরাপুল, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
ফোন:০২৯৮২০০১৯-২০ ফ্যাক্স: ০২-৯৮২০০১৬ ই-মেইল: spnewsdesh@gmail.com