প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই, ২০২৫, ৩:৪১ PM
দীর্ঘ প্রায় সাড়ে তিন বছর পর দেশ থেকে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করল মিয়ানমারের জান্তা। দেশটির আসন্ন সাধারণ নির্বাচন সামনে রেখে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন সামরিক সরকারের প্রধান।
গতকাল বৃহস্পতিবার সামরিক সরকারের প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং এ সংক্রান্ত একটি লিখিত আদেশ জারি করেছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে এএফপি।
পরে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের উদ্দেশে এক অডিও বার্তায় জান্তা মুখপাত্র জৌ মিন তুন জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “বহুদলীয় গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি গড়ে তোলার স্বার্থে সরকার পার্লামেন্ট নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষ্যে আজ বৃহস্পতিবার থেকে আজ (বৃহস্পতিবার) থেকে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করা হলো।
গত ৮ মার্চ এক অনুষ্ঠানে জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লেইং ঘোষণা দিয়েছিলেন যে আগামী ডিসেম্বর কিংবা ২০২৬ সালের মধ্যে মিয়ানমারে নির্বাচন হবে। জৌ মিন তুনের অডিও বার্তাতেও তার প্রতিধ্বনি পাওয়া গেছে। তিনি বলেছেন, আগামী ৬ মাসের মধ্যে মিয়ানমারে নির্বাচন হবে।
নির্বাচনের ভোটগ্রহণের তারিখ অবশ্য এখনও জানায়নি জান্তা।
মিয়ানমারে সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ২০২০ সালের নভেম্বরে। সেই নির্বাচনে ভোট কারচুপি হয়েছিল— অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ১ নভেম্বর অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং এ অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, ক্ষমতা দখলের পর সামরিক সরকারের প্রধানও হন তিনি।
সেনা অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয় মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সুচি’র নেতৃত্বাধীন এনএলডি সরকার; গ্রেপ্তার হন সুচি, তার দলের এমপি-মন্ত্রী এবং এনএলডির বিভিন্ন স্তরের কয়েক হাজার নেতাকর্মী। এখনও কারাগারে আছেন তারা। গত বছর এনএলডির নিবন্ধনও বাতিল করা হয়েছে।
ফলে আসন্ন নির্বাচনে এনএলডি দল হিসেবে অংশ নিতে পারছে না। তবে এই নির্বাচনে জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লেইং প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াবেন কি না— তা নিয়ে ধোঁয়াশা থেকে গেছে। রাজনীতি বিশ্লেষকদের ধারণা, জেনারেল হ্লেইং নির্বাচনে প্রার্থীতা করবেন না, তবে এমন একটি অবস্থানে থাকবেন— যেন নির্বাচনের পরও প্রকৃত ক্ষমতা তার কাছেই কুক্ষিগত থাকে।
গত কাল বুধবার রাজধানী নেইপিদোতে এক অনুষ্ঠানে জেনারেল হ্লেইং বলেছেন, “আমরা ইতোমধ্যে প্রথম অধ্যায় শেষ করেছি। এখন দ্বিতীয় অধ্যায়ে প্রবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছি। সেই অধ্যায়ে যাওয়ার প্রবেশপথ বা দরজা হলো নির্বাচন। আগামী ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে।”