প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই, ২০২৫, ৮:০৬ PM
পৃথিবীর অনেক মানুষই যেখানে অল্প বয়সে বিভিন্ন রোগ শোকে ভুগে মারা যাচ্ছে সেখানে শতায়ু পার করেও আনন্দে বাঁচছেন কিছু মানুষ।রোগে জর্জরিত হয়ে নয়, বরং সুস্থভাবে চলাফেরা করতে পারেন তারা। বলছি, জাপানের ওকিনওয়া দ্বীপের বাসিন্দাদের কথা। কোন মন্ত্রবলে তারা শুধু সুস্থতা নয়, ছিপছিপে চেহারা, দাগহীন ত্বক, উজ্জ্বল চুল নিয়ে বেঁচে আছেন তা নিয়ে বিশ্ববাসীর আগ্রহের শেষ নেই।
ভারতীয় গণমাধ্যম ‘আনন্দবাজারে’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আনন্দের সঙ্গে সুস্থ ভাবে বাঁচার চাবিকাঠি লুকিয়ে কিছু জাপানি দর্শনে। যেমন-
কাইজ়েন :
কাইজ়েন বলে, ছোট ছোট বদল এবং ধারাবাহিক প্রচেষ্টাই জীবনে সাফল্য এনে দিতে পারে। জাপানি শব্দ ‘কাইজ়েন’ বলতে বোঝায় ‘ভালোর জন্য বদল’। উন্নয়নের জন্য ক্রমাগত চেষ্টাই এই দর্শনের মূলমন্ত্র। কাইজেন বলে, কর্মক্ষেত্রে যদি নিম্ন থেকে উচুঁ — সমস্ত কর্মীর দিকে দেওয়া যায়, তাদের সঙ্গে সঠিক সমন্বয় গড়ে তোলা যায় তাহলেই উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করা যায়। ছোটখাটো প্রতিটি ক্ষেত্রে সজাগ দৃষ্টি এ জন্য জরুরি।
ইকিগাই :
বাঁচা মানে সুস্থ শরীরে, আনন্দের সঙ্গে জীবনযাপন। সেই কৌশল শেখায় ইকিগাই। ‘ইকিগাই: দ্য জাপানিজ় সিক্রেট টু আ জয়ফুল লাইফ’ বইটি বিশ্ব জুড়ে এতটা আলোচিত যে ৬৩টি ভাষায় তা অনুবাদ হয়েছে। ‘ইকিগাই’-এর ইংরেজি করলে দাঁড়ায় ‘বেঁচে থাকার উদ্দেশ্য সন্ধান’। এই জীবনদর্শন জীবনে সেই কাজের দিক নির্দেশ করে, যা আনন্দ দেয়, জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করে। একঘেয়ে জীবন নয়, বরং সুস্থ শরীরে দীর্ঘজীবী হওয়ার পথ সুগম করে ইকিগাই। জাপানের ওগিমি গ্রামের শতায়ু মানুষজনের জীবনযাপনের উৎস সন্ধান করে বইটি লেখা হয়েছিল। যেখানে দেখা গিয়েছে, জীবনের শেষ প্রান্তে এসে কেউ বাগান করে, কেউ আবার শিল্পচর্চা করে, কেউ বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে সুখে জীবন কাটাচ্ছেন। বেশির ভাগ বয়স্ক মানুষ তাদের শখ নিয়ে কাজ করছেন এবং সুখে বাঁচছেন।
হারা হাচি বু :
বেঁচে থাকাই শুধু নয়, আনন্দের সঙ্গে সুস্থ শরীরে বাঁচাও জরুরি। ‘হারা হাচি বু’ এমন এক জীবনদর্শন, যা শরীর সুস্থ রাখতে নির্দিষ্ট খাদ্যাভ্যাসের কথা বলে। বেশিরভাগ জাপানিরা পেট ৮০ শতাংশ ভরে গেলেই খাওয়া বন্ধ করে দিতে হবে, এই পদ্ধতি মেনে চলেন। অনেকেই মনে করেন, জাপানিদের সুস্থ এবং সুন্দর জীবনের রহস্য লুকিয়ে তাদের খাদ্যাভ্যাসে। হজমশক্তি বৃদ্ধিতে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে হারা হাচি বু। পেট খালি থাকলে অনেকেরই আরও কিছু খাওয়ার ইচ্ছা হতে পারে। সে কারণেই বলা হয়েছে এমন খাদ্যাভ্যাস রপ্ত করতে হলে ধীরে ধীরে খেতে হবে। দীর্ঘ সময় ধরে খেলে মস্তিষ্কে সঙ্কেত পৌঁছবে অনেকটা খাওয়া হচ্ছে, যেটা দ্রুত খেলে কখনওই সম্ভব নয়।