কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের শ্যামপুর এলাকায় জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে নারী, পুরুষ ও শিশুসহ অন্তত ১৩ জন আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত অবস্থায় বেশ কয়েকজনকে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রবিবার (২৭ জুলাই) দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন—শফিকুল ইসলাম (৪০), রফিকুল ইসলাম (৫০), সাইদুল ইসলাম (৫০), শাহাজান (৪৫), সামিনা বেগম (২৮), শাহেরা বেগম (৪২), মিনারা বেগম (৩২) ও শিশু আব্দুলা (১২)। চিকিৎসাধীন ব্যক্তিদের কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
আহত শফিকুল ইসলাম বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে আমাদের সঙ্গে নুর হোসেনের জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। আজ হঠাৎ বহিরাগত সন্ত্রাসী এনে আমাদের জমি দখলের চেষ্টা করে। আমরা ৯৯৯-এ ফোন দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। তবে পুলিশ চলে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তারা আমাদের ওপর হামলা চালায়।”
স্থানীয় বিএনপি নেতা ও আহত শাহাজান বলেন, “আমি দুই পক্ষকে শান্ত করতে গেলে তারাও আমার ওপর চড়াও হয়। হামলাকারীরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলায় নামে।”
আহত সামিনা বেগম জানান, “আমি আমার সন্তানকে স্কুল থেকে আনতে গিয়ে হট্টগোল দেখতে পাই। হঠাৎ কেউ বলে, আমার স্বামী নাকি পুলিশ ডেকেছে, এরপরই তারা আমার ওপর হামলে পড়ে।”
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, হামলায় নেতৃত্ব দেন স্থানীয় নুর হোসেন (৬০), আসাদুল (৩০), কুদ্দুস (৫০), ফারুক (৩৬), আব্দুল হামিদ (৬০)সহ আরও কয়েকজন। এদের সঙ্গে বহিরাগত সন্ত্রাসীরাও ছিল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হামলাকারীরা স্থানীয়ভাবে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী একটি মহলের ঘনিষ্ঠ। তারা দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতাসীন দলের নাম ভাঙিয়ে এলাকায় দাপট দেখিয়ে আসছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, এসব হামলাকারীরা তথাকথিত 'ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর' হিসেবে পরিচিত।
এ বিষয়ে উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জিল্লুর রহমান বলেন, “ঘটনার বিষয়ে অবগত আছি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
ঘটনার পর এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। স্থানীয়রা হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।