আগামী বছর ফেব্রুয়ারির আগে আর কোনো আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ নেই । তাই টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বছর শেষ টিম বাংলাদেশের। সব বিবেচনায় ২০২৫ সাল ছিল সাফল্যে ঘেরা। পাঁচ-পাঁচটি সিরিজ বিজয় আর ১৪টি ম্যাচ জয়, সব মিলিয়ে দারুণ সাফল্যে ঘেরা ছিল ২০২৫ সালটি।
যদিও বছর শুরু হয়েছিল আরব আমিরাতের মত আইসিসির সহযোগি সদস্য দেশের কাছে সিরিজ হার দিয়ে। আরব আমিরাতে হওয়া ওই তিন ম্যাচ সিরিজে টাইগাররা হেরেছিল ১-২ ব্যবধানে। মে মাসে আরব আমিরাতের মাটিতে অপ্রত্যাশিত ফলই শেষ নয়। এরপর মে-জুনে লাহোরে পাকিস্তানের কাছে তিন ম্যাচের সিরিজে সব খেলায় হেরে একদম হোয়াইটওয়াশ হয়েছে লিটন দাসের দল।
তখন কি কেউ ভেবেছিল, এই দলটিই আবার ২০২৫ সালে পাঁচ-পাঁচটি সিরিজ জয় করে নেবে! বাস্তবে হয়েছেও তাই। এরপর টিম বাংলাদেশ নেদারল্যান্ডস, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচটি সিরিজ জিতে শেষ করলো ২০২৫ সাল।
সিরিজ বিজয়ের হিসেবে কোনো এক বছরে এ পরিসংখ্যান সর্বাধিক। এর আগে এক বছরে টিম বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টিতে এতগুলো সিরিজ জয়ের কৃতিত্ব ছিল না। এমন সাফল্যে মোড়ানো বছরেও টিম পারফরমেন্সে, বিশেষ করে ব্যাটিংয়ে বড় ধরনের ঘাটতি, কমতি ও দূর্বলতা রয়ে গেছে। ব্যাটিংটা এখনো আশানুরূপ হয়নি। ব্যাটারদের ব্যাটে ধারাবাহিকতা কম। লম্বা ইনিংস খেলায় রয়েছে প্রচুর দূর্বলতা।
আগামী বছর ফেব্রুয়ারি মাসে ভারতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। অথচ তার আগে ব্যাটিং লাইনআপে বিরাট দূর্বলতা। পুরো ব্যাটিং ডিপার্টমেন্টেই সমস্যা। ওপেনিং, টপ অর্ডার আর মিডল অর্ডার তিন জায়গাতেই ঘাটতি। ওপেনারদের ধারাবাহিকতা নেই। এক ম্যাচ ভাল খেলে পরের দুই তিন ম্যাচে রান করতে পারছেন না সাইফ, তানজিদ তামিম আর পারভেজে ইমনরা।
টপ অর্ডার থেকে দীর্ঘ ইনিংস বেরিয়ে আসছে খুব কম। অধিনায়ক লিটনের ব্যাটেও ধারাবাহিকতা নেই। তিনিও হঠাৎ জ্বলে উঠে পরের ম্যাচেই নিজেকে হারিয়ে ফেলছেন। শুরুর ধাক্কা গিয়ে লাগছে মিডল অর্ডারেও। সেখানে দুই রকম সমস্যা। এক মিডল অর্ডারেও কেউ দীর্ঘ ইনিংস খেলতে পারছেন না। ইনিংসের শেষ বল পর্যন্ত উইকেটে থাকার কাজটি করতে পারছেন না ৪, ৫, ৬ ও ৭ নম্বরে নামা কেউ। যে কারণে শেষ দিকে হাত খুলে খেলাও সম্ভব হচ্ছে না।
ব্যাটারদের দূর্বলতা কাটাতে এবার তাদের নিয়ে আলাদাভাবে কাজ করার উদ্যোগ নিয়েছেন হেড কোচ ফিল সিমন্স। এক সময়ের ওয়েস্ট ইন্ডিজ টপ ও মিডল অর্ডার সিমন্স নিজেই এবার সাদা বলে তানজিদ তামিম, সাইফ, পারভেজ ইমন, লিটন দাস, শামীম পাটোয়ারী, জাকের আলী অনিক ও নুরুল হাসান সোহানদের নিয়ে কাজ করবেন।
আগামী পরশু ৬ ডিসেম্বর থেকে ঢাকার মিরপুরের শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে সাদা বলে জাতীয় দলের ব্যাটারদের বিশেষ ট্রেনিং শুরু হবে। চলবে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
জাতীয় দলের ম্যানেজমেন্ট সূত্র জানিয়েছে, এনসিএলের শেষ পর্বে যারা খেলবেন না, তাদের মধ্যে যারা সাদা বলে জাতীয় দলের পারফরমার, তাদের নিয়ে ৭ দিনের বিশেষ ব্যাটিং অনুশীলন শুরু হবে আগামী শনিবার থেকে।
জানা গেছে, হেড কোচ ফিল সিমন্স, প্রধান সহকারি কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দীন ও ব্যাটিং কোচ মোহাম্মদ আশরাফুল থাকবেন এ বিশেষ ব্যাটিং ক্যাম্পের পরিচালনায়।