পূজা উদযাপন ফ্রন্ট আয়োজিত সনাতনী সমাবেশে বক্তব্য দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীভারতের কলকাতায় অফিস নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতারা দলীয় কার্যক্রম চালাচ্ছেন বলে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে গণমাধ্যমে। ওই অফিস থেকে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ-বিরোধী কার্যকলাপ শুরু করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, কলকাতায় আওয়ামী লীগের একটি অফিস (কার্যালয়) নেওয়া হয়েছে। ওই অফিসে সব বড় বড় নেতাদের যাতায়াত শুরু হয়েছে। কলকাতায় কার্যালয় আর বাংলাদেশের ভেতরে এসব ঘটনার যে যোগসূত্র নেই তা বলা যাবে না। মাস্টারমাইন্ড হয়ে শেখ হাসিনা সেখান থেকে বাংলাদেশ-বিরোধী কার্যকলাপ শুরু করেছেন।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্ট আয়োজিত সনাতনী সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, আমাদের লোকসংস্কৃতির মধ্যেও এই ধর্ম সমন্বয় আছে। হিন্দু-মুসলমান আমরা একটা বৃহত্তর সংস্কৃতির অংশ, আবার নিজ নিজ ধর্মের জন্য যে সংস্কৃতি সেই সংস্কৃতির মধ্যেও একটা সমন্বয় ছিল। এখানে কোনো প্রভেদ ছিল না, এখানে কোনো বিভেদ ছিল না। এটাকে শেখ হাসিনা ভাঙতে চেয়েছেন। দেখাতে চেয়েছেন- ‘এদেশ বিভেদ বিভাজনে ভরপুর, সুতরাং আমাকে সমর্থন করো। অন্য বিরোধী দল কাউকে সমর্থন করতে হবে না, করবেন না। এই কারণে আমি জোর করে জনসমর্থন ছাড়া দিনের ভোট রাতে করে, ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের যেতে না দিয়ে আমি নির্বাচন কমিশন দিয়ে ভোট ঘোষণা করবো।’ বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে এইভাবেই বিনষ্ট করেছেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার আমলেই দেবমন্দির, দেবালয় ভাঙা হয়েছে, প্রতিমা ভাঙা হয়েছে। কিন্তু যারা ধরা পড়েছেন তারা অধিকাংশই আওয়ামী লীগের কোনো না কোনো সংগঠনের লোক। শেখ হাসিনা পলাতক শিশুদের রক্ত পান করে, কিশোরদের রক্ত পান করে, রিকশাচালকদের রক্ত পান করে জনতার উত্তাল তরঙ্গের যে ঢেউ সেই ঢেউের তোড়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। পালানোর পরেও কিন্তু তার ষড়যন্ত্র থামছে না। গত যে দুর্গাপূজা হলো, নানান ধরনের চক্রান্ত ষড়যন্ত্র ছিল।
বিএনপির এ জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, আজ দেখছি মিডিয়াতে খবর এসেছে- কলকাতায় আওয়ামী লীগের একটি অফিস নেওয়া হয়েছে। ওই অফিসে সব বড় বড় নেতাদের যাতায়াত শুরু হয়েছে। কারণটা কী? আমাদের দেশের মানুষ ভাবছে কোনো কিছু সেখান থেকে করা হচ্ছে কি না। একটা অত্যন্ত বড় ধরনের কোনো পরিকল্পনা করা হচ্ছে কি না- আজ সবার মনের মধ্যে এই জিনিসটা ক্রিয়া করছে। একজন মেজর ধরা পড়েছেন তিনি আওয়ামী লীগের কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেবেন বলে জানা যায়। এমন দেখি আরও আছে। এসব ঘটনা কিসের? কলকাতায় কার্যালয় আর বাংলাদেশের ভেতরে এসব ঘটনার যে যোগসূত্র নেই তা বলা যাবে না। মাস্টারমাইন্ড হয়ে শেখ হাসিনা সেখান থেকে বাংলাদেশ-বিরোধী কার্যকলাপ শুরু করেছেন।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পূজা উদযাপন ফ্রন্টের সভাপতি অপর্না রায় দাস। এতে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহাদী আমিন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী, হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক প্রমুখ।