বুধবার ৩০ জুলাই ২০২৫ ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২
 
শিরোনাম:


'ইংল্যান্ডে খ্যাতি পাওয়া যায়, কিন্তু বাংলাদেশে পাওয়া ভালোবাসা অন্যরকম': হামজা চৌধুরি
স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই, ২০২৫, ৭:৪৮ PM

জীবনে খুব কম জিনিসই হামজা চৌধুরিকে এতটা গর্বিত করে, যতটা করে বাংলাদেশের শিকড় আঁকড়ে ধরা এবং দেশের প্রতিনিধিত্ব করা। তার ভাষায়, বাংলাদেশ মানে হলো—উদার হৃদয়ের মানুষ আর অন্যের সাফল্য উদযাপন করার অসাধারণ মানসিকতা। 

২০২৪ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করার সিদ্ধান্ত নেয়ার পর থেকেই দেশের মানুষ তাকে আপন করে নিয়েছে। আন্তর্জাতিক ফুটবলার হিসেবে প্রথমবার বাংলাদেশ সফরে এসে তিনি যা দেখলেন, তা ছিল তার জন্য রূপকথার মতো—হাজারো উচ্ছ্বসিত মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল নতুন এক নায়ককে বরণ করে নিতে।

লেস্টার সিটির একাডেমি থেকে উঠে আসা এই মিডফিল্ডারের জন্য তা ছিল তার শৈশবের স্বপ্ন পূরণের মুহূর্ত। বাংলাদেশের গ্রামে কাটানো ছেলেবেলার স্মৃতি এখনও তার মনে গেঁথে আছে—স্থানীয় শিশুদের সঙ্গে মাটির গলিতে ফুটবল খেলা, আর স্বপ্ন দেখা একদিন বড় মঞ্চে খেলার।

এফএ কাপজয়ী এই মিডফিল্ডার বর্তমানে লেস্টার সিটির সিনিয়র স্কোয়াডের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হলেও, বাংলাদেশের হয়ে খেলা তার ক্যারিয়ারে এক নতুন মাত্রা এনে দিয়েছে। এ দায়িত্বকে তিনি গর্বের সঙ্গেই গ্রহণ করেছেন। তিনি চান, জাতীয় দলের অন্যদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বাংলাদেশের ফুটবলকে এগিয়ে নিতে, নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করতে।

মাঠের বাইরেও তার আনন্দের বড় উৎস—নিজ সন্তানদের বাংলাদেশের সংস্কৃতির স্বাদ দেয়া। জুনে ফিফা উইন্ডোতে ভূটানের বিপক্ষে জয়ের সময় তার মা, ভাইবোনেরা মাঠে ছিলেন। তার ছেলেমেয়েরা—বয়স ছয়, পাঁচ ও দুই—এর মধ্যে বড় দুইজন দেশটিকে ভালোভাবে অনুভব করতে পেরেছে। “আমার ছোট ছেলে ফুটবল নিয়ে পাগল! আমি বাসায় ঢুকলেই দেখি সে পুরো ৯০ মিনিটের ম্যাচ দেখছে',' হাসতে হাসতে বলেন হামজা। মেয়েটি অবশ্য ফুটবলে আগ্রহী নয়, তবে শিল্পকর্ম ভালোবাসে। তবে গ্রামে গিয়ে পরিবারের অন্য সদস্যদের দেখা, স্থানীয় শিশুদের সঙ্গে খেলা—সব মিলিয়ে একটি দারুণ অভিজ্ঞতা। 

"এটা আমাদের ঐতিহ্যের অংশ—নিজেদের মানুষকে সমর্থন করা," বলেন তিনি। অস্ট্রিয়ায় লেস্টার সিটির ক্যাম্পে বাংলাদেশের পতাকা দেখা যায়, যা তার সঙ্গে দেশের মানুষের আত্মিক বন্ধনেরই প্রতিফলন।

এই সংযোগ হামজাকে জীবনে এক অনন্য অনুভূতি এনে দিয়েছে। “বর্ণনাতীত এক অভিজ্ঞতা। ইংল্যান্ডে অনেক খ্যাতি পাওয়া যায়, কিন্তু বাংলাদেশে পাওয়া ভালোবাসা একেবারে অন্যরকম। কেউ কেউ ভয় পেতে পারে, কিন্তু আমার কাছে এটা এক বিশাল ভালোবাসার জায়গা। মানুষ শুধু ইতিবাচকতা নিয়ে আসে, ভালোবাসা জানায়, এটা ভীষণ ভালো লাগার মতো।”

এ বছর গ্রীষ্মে বাংলাদেশের হয়ে করা তার প্রথম গোলটিও ছিল বিশেষ মুহূর্ত। হেড থেকে আসা এই গোলে তার সতীর্থরাও বিস্মিত। হামজা নিজেও হাসতে

বাংলাদেশে ফুটবল নিয়ে মানুষের আগ্রহ নিয়ে হামজা বলেন, “ক্রিকেট সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এগিয়ে গেছে, কিন্তু ঢাকায় ফুটবল এখন ক্রেজ। ম্যাচ শুরুর ৪ ঘণ্টা আগেই স্টেডিয়াম ভরে যায়। ফেডারেশনও অনেক কিছু করছে। আশা করি সামনে ভালো ফল আনতে পারব।”

তবে তিনি নিজেকে এখনও জাতীয় কিংবদন্তিদের কাতারে তুলতে রাজি নন। “সাকিব আল হাসান তো আসল কিংবদন্তি! তিনিই বাংলাদেশ ক্রিকেটকে বহন করেছেন। তিনি মেগাস্টার!”

নতুন কোচ মার্তি সিফুয়েন্তেসের অধীনে লেস্টারে ২৫/২৬ মৌসুমেও নতুন চ্যালেঞ্জ নিচ্ছেন হামজা। "তিনি খেলায় আধিপত্য চায়, ইতিবাচক ফুটবল খেলাতে চান," বলেন তিনি। কোচের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত সম্পর্কও ইতিবাচক। “তিনি সোজা কথা বলেন, সততা আর জবাবদিহিতাকে গুরুত্ব দেন। ফুটবলারদের জন্য এটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।”

সামার ক্যাম্পে টিমবন্ডিংয়ের ওপরেও জোর দেন হামজা। “আমরা একসাথে চা-কফি খাই, প্যাডেল খেলি, ইউএনও খেলি। এটা আমাদের সম্পর্ক আরও মজবুত করে।” তার মতে, “একটা দল যদি এক হয়ে না থাকে, তবে তারা সাফল্য পায় না।”







আরও খবর


 সর্বশেষ সংবাদ

মানসম্মত কলেজ নিয়ে শঙ্কা শিক্ষার্থীদের
‘জুলাই গণঅভ্যূত্থানের স্বপ্ন পূরণে বাধা দূও করতে হবে’
যিনি চাঁদাবাজদের প্রটেকশন দেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি চাঁদার ভাগিদার: সারজিস আলম
জাপানিদের দীর্ঘ আয়ুর আসল রহস্য জেনে নিন
খিলগাঁও মডেল কলেজে ২০২৪ গণআন্দোলনের শহীদ স্মরণে মাসব্যাপী কর্মসূচির সূচনা
আরো খবর ⇒


 সর্বাধিক পঠিত

আনন্দঘন পরিবেশে অনুষ্ঠিত হলো কোরিয়া মুসলিম কমিউনিটির বাৎসরিক শিক্ষা সফর ২০২৫
ভালুকায় শহীদ আরাফাত রহমান কোকো লক্ষ টাকার ফুটবল টুর্নামেন্ট ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত
দুবাইতে বাংলাদেশ প্রবাস ক্লাবের উদ্যোগে শোক সভা ও দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত
ত্রিশালে এসইডিপির সনদ ও পুরস্কার বিতরণ
ঝিনাইগাতী সদর বাজারে দেদারছে বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ ইউক্যালিপটাস গাছের চারা
প্রকাশক: এম এন এইচ বুলু
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মাহফুজুর রহমান রিমন  |   উপদেষ্টা সম্পাদক : রাজু আলীম  
বিএনএস সংবাদ প্রতিদিন লি. এর পক্ষে প্রকাশক এম এন এইচ বুলু কর্তৃক ৪০ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ, বুলু ওশেন টাওয়ার, (১০তলা), বনানী, ঢাকা ১২১৩ থেকে প্রকাশিত ও শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস, ২৩৪ ফকিরাপুল, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
ফোন:০২৯৮২০০১৯-২০ ফ্যাক্স: ০২-৯৮২০০১৬ ই-মেইল: spnewsdesh@gmail.com