শেরপুর সদর উপজেলার ধানুরপাড়ায় পূর্ব বিরোধের জেরে নারীসহ একই পরিবারের চার সদস্যকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় এক নারীর গলার স্বর্ণের চেইন ছিঁড়ে নেয়া এবং পরদিন আক্রান্ত নারীর স্বামীর কাছ থেকে এক লাখ টাকা লুট করার ঘটনাও অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে। এ ঘটনায় মোছাঃ ভানু বেগম নামে এক নারী বাদী হয়ে শেরপুর সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বাদী মোছাঃ ভানু বেগম (৪৮), স্বামী মোঃ আমির উদ্দিন, সাং- ধানুরপাড়া। বাদী অভিযোগ করেন, একই এলাকার মোঃ আ. সামাদ, মোঃ সুলতান হোসেন শুকতার, মোঃ শিমুল মিয়া, মোঃ পারভেজ মিয়া, মোঃ হাবুলশি উদ্দিন, মোঃ রমজান আলী, মোঃ ময়নুল মিয়া, মোছাঃ পারভীন বেগম, মোছাঃ আউলিয়া বেগমসহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজনের সঙ্গে তাদের দীর্ঘদিনের বিরোধ চলছিল।
বাদীর দাবি, গত ২৫ নভেম্বর দুপুর ২টার দিকে আসামিরা দা, লাঠি, লোহার রড ইত্যাদি অস্ত্র নিয়ে তাদের বাড়ির পেছনে জড়ো হয়ে গালিগালাজ শুরু করে। প্রতিবাদ জানালে ১ নম্বর আসামি বাদীর মাথার দিকে লোহার রড দিয়ে আঘাত করতে গেলে তা হাতে ঠেকাতে গিয়ে তার বাম হাত ভেঙে যায়।
চিৎকার শুনে বাদীর ছেলে মোঃ সুজন মিয়া, স্বামী মোঃ আমির উদ্দিন, আত্মীয় মোঃ আরিফ উদ্দিন ও কন্যা মোছাঃ আলিয়া খাতুন এগিয়ে এলে তাদেরও এলোপাতাড়ি পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করে। এ সময় ৯ নম্বর আসামি আলিয়ার গলার ৮ আনি ওজনের প্রায় ৯০ হাজার টাকা মূল্যের স্বর্ণের চেইন ছিঁড়ে নেয় বলে অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে।
ভুক্তভোগীরা জানান, আহতের দ্রুত শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য গেলে প্রতিপক্ষরা বাধা দিলে স্থানীয়দের সহায়তায় আহতদের উদ্ধার করে ২০ কিলোমিটার দূরে শ্রীবরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, পরদিন ২৬ নভেম্বর সকালে বাদী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাকালে আসামিরা তার স্বামী মোঃ আমির উদ্দিনকে বাড়িতে একা পেয়ে লোহার রড ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে জখম করে এবং তার কাছ থেকে এক লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে স্থানীয়রা তাকে শেরপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
বাদীর বড় ছেলে মো: বাবলু বলেন, পূর্ব শত্রুতা থেকেই তারা আমাদের বিভিন্ন সময় মেরে ফেলার হুমকি ধামকি ও হামলা চালিয়ে আসছিলো। এজন্য আমরা আমাদের নিরাপত্তার জন্য ৭ ধারা আইনে একটি মামলা করি। ওই মামলার হাজিরা দেওয়ার সময় হলে তারা আমার মা বোন ও ভাইয়ের উপর হামলা চালায়। আমরা বাড়িতে যেতে পারছি না। পুলিশ দ্রুত আসামীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনুক এ দাবি আমাদের।
বাদী ভানু বেগম জানান, হাসপাতালে ভর্তি থাকার কারণে অভিযোগ করতে দেরি হয়েছে। তিনি হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন। এব্যাপারে অভিযুক্ত আ: সামাদের সাথে কথা বললে, তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি সেদিন কোর্ট এ ছিলাম বাড়িতে মহিলাদের মধ্য মারামারি হয়েছে।
এ ব্যাপারে শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুবায়দুল আলম জানান, অভিযোগটি গ্রহণ করা হয়েছে এবং তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।