“দেশীয় জাত, আধুনিক প্রযুক্তি : প্রাণিসম্পদে হবে উন্নতি” প্রতিপাদ্যে গাজীপুরের কালীগঞ্জে জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ ও প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনীর উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (২৬ নভেম্বর) সকালে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের উদ্যোগে প্রাণিসম্পদ উৎপাদন বৃদ্ধি, রোগ প্রতিরোধ, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এবং দেশীয় প্রাণিসম্পদ রক্ষা–উন্নয়ন সম্পর্কে খামারিদের সচেতন করার লক্ষ্যে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ভেটেরিনারি হাসপাতাল চত্বরে আলোচনা সভায় মিলিত হয়।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মোহাম্মদ মামুন মিয়া। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাকিয়া সরওয়ার লিমা। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডা. মো. সিহাব মিয়া, উপজেলা প্রকৌশলী মো. রেজাউল হক, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. ইসমাইল হোসেন ভূইয়া, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নাহিদা খাতুন, উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান, উপজেলা তথ্যসেবা কর্মকর্তা সোহা তামান্না এবং স্থানীয় বিভিন্ন এলাকার খামারীসহ ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
সভায় খামারী আবু সাঈদ বলেন, খামার পরিচালনা করা বর্তমানে বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। ক্ষুদ্র ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রেও নানা জটিলতার সম্মুখীন হতে হয়। তিনি জানান, সহজ শর্তে ঋণ প্রাপ্তি, সুলভ মূল্যে পশুখাদ্য ও ভ্যাকসিন সরবরাহ এবং যথাসময়ে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত হলে খামারগুলো লাভজনক হবে এবং নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি হবে।
এসময় উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মোহাম্মদ মামুন মিয়া বলেন, প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন, আধুনিক প্রযুক্তির সম্প্রসারণ এবং নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ ও প্রদর্শনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তিনি জানান, দেশে পোল্ট্রি শিল্প বর্তমানে দ্বিতীয় বৃহত্তম কর্মসংস্থানের খাত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার বেসরকারি বিনিয়োগ রয়েছে।
প্রধান অতিথি এসিল্যান্ড জাকিয়া সরওয়ার লিমা বলেন, বাংলাদেশের সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে প্রাণিসম্পদ খাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ উদযাপনের মাধ্যমে আধুনিক প্রযুক্তির প্রসার, নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন, নারী ও যুব উদ্যোক্তা তৈরি এবং সরকারি-বেসরকারি সমন্বয় আরও শক্তিশালী হবে।
২ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলমান এ কর্মসূচির আওতায় প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির ফ্রি ভ্যাকসিনেশন, ভেটেরিনারি মেডিকেল ক্যাম্প, স্কুল মিল্ক কর্মসূচি, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা এবং খামারীদের প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হবে। প্রদর্শনীতে ২৬টি স্টলে গরু, ছাগল, ঘোড়া, ভেড়া, দুম্বা, হাঁস, মুরগি, কুকুর, বেড়াল, পশুখাদ্য ও ঔষধসহ বিভিন্ন প্রদর্শনী উপকরণ স্থান পায়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শেষে শতাধিক গৃহপালিত বেড়ালকে ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়।