
গত সপ্তাহজুড়ে লেনদেন হওয়া যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, তার সাড়ে চারগুণ বেশি প্রতিষ্ঠানের দরপতন হয়েছে। বিপুল পরিমাণ প্রতিষ্ঠানের দরপতনের পরও প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন কমেছে মাত্র ১৪৬ কোটি টাকা। তবে এতে সূচকের বড় পতন হয়েছে। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের গতি। এর মাধ্যমে টানা দুই সপ্তাহ শেয়ারবাজারে পতন হলো।
গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে মাত্র ৬৮টির স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ৩০৬টির। আর ২৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অর্থাৎ দাম বাড়ার তুলনায় দাম কমার তালিকায় ৪ দশমিক ৫০ গুণ বেশি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। অন্যভাবে বলা যায়, সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে।
এমন বিপুল পরিমাণ প্রতিষ্ঠানের দরপতনের পরও সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ২৪ হাজার ৪৬৬ কোটি টাকা। যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৭ লাখ ২৪ হাজার ৬১২ কোটি টাকা। অর্থাৎ, সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে ১৪৬ কোটি টাকা বা দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। আগের সপ্তাহে বাজার মূলধন কমে ৩ হাজার ১৮০ কোটি টাকা।
বাজার মূলধন অল্প পরিমাণে কমলেও সবকটি মূল্যসূচকের বড় পতন হয়েছে। ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স সপ্তাহজুড়ে কমেছে ৭৩ দশমিক ৮৫ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৩৪ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৯০ দশমিক ৫০ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৬১ শতাংশ। অর্থাৎ টানা দুই সপ্তাহের পতনে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক কমলো ১৬৪ পয়েন্ট।
অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক গত সপ্তাহজুড়ে কমেছে ৪৩ দশমিক ৯৪ পয়েন্ট বা ২ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৩১ দশমিক ৬৮ পয়েন্ট। দুই সপ্তাহে বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত সূচক কমেছে ৭৫ পয়েন্ট।
আর ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক গত সপ্তাহজুড়ে কমেছে ১৮ দশমিক ১১ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৫১ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৩৩ দশমিক ৭৫ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
এদিকে, গত সপ্তাহের ডিএসইতে লেনদেনের গতিও কমেছে। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৭০১ কোটি ৬ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ১ হাজার ১৪৯ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ, প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ৪৪৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা বা ৩৯ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে খান ব্রদার্স পিপি ওভেন ব্যাগের শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ৩১ কোটি ৫৮ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ৪ দশমিক ৫০ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সামিট এলায়েন্স পোর্টের শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ২০ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। প্রতিদিন গড়ে ১৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা লেনাদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে রবি।
এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ, টেকনো ড্রাগস, ওরিয়ন ইনফিউশন, সোনালী পেপার, লাভেলো আইসক্রিম, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট এবং ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।