প্রকাশ: বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৬:৩৬ পিএম (ভিজিট : ৯২)
নব সৃষ্ট গাজীপুর-৬ আসনকে ঘিরে এখন পুরো মহানগরে ছড়াচ্ছে উত্তাপ। নতুন এই আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়নের দৌড়ে এক পরিবার অর্থাৎ সরকার গোষ্ঠীর ৪ প্রার্থীর সক্রিয় উপস্থিতি ভোটারদের মাঝে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। তবে এর বাইরে আলোচনায় উঠে এসেছেন কয়েকজন তরুণ, মেধাবী নেতা বিশেষ করে আরিফ হোসেন হাওলাদার ও হাজী জসিম উদ্দিন ভাট।
নতুন আসনের প্রেক্ষাপট: গাজীপুরে এতদিন সংসদীয় আসন ছিল ৫টি। তবে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন নতুন একটি আসন (নং-১৯৮) যুক্ত করেছে। গাছা, টঙ্গী পূর্ব-পশ্চিম থানার কয়েকটি ওয়ার্ড এবং পূবাইলের আংশিক অঞ্চল নিয়ে গঠিত গাজীপুর-৬ আসনে ভোটার সংখ্যা ৫ লাখ ৪০ হাজার ২৫৪ জন।
সরকার গোষ্ঠীর ভেতরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা, জনমনে প্রশ্ন: নতুন আসন নিয়ে সবচেয়ে আলোচনায় সরকার পরিবার বা গোষ্ঠী। সাবেক সংসদ সদস্য ও মহানগর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব হাসান উদ্দিন সরকার, তার ছোট ভাই সালাহ উদ্দিন সরকার, চাচাতো ভাই রাকিব উদ্দিন সরকার পাপ্পু ও সরকার জাভেদ আহমেদ সুমন—এই চারজন ইতোমধ্যেই প্রচারণায় সক্রিয়। ফলে টঙ্গীজুড়ে পারিবারিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার উত্তাপ তুঙ্গে। এদিকে, সরকার পরিবারের প্রভাব থাকলেও তরুণ, মেধাবী ও ক্লিন ইমেজের প্রার্থীদের প্রতি ব্যাপক ভাবে ভোটারদের আকর্ষণ বাড়ছে। এরইমধ্যে আরিফ হোসেন হাওলাদার, স্থানীয়ভাবে পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির জন্য আলোচিত ও সমাদৃত। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিএনপি’র বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের সঙ্গে সক্রিয় থেকে মাঠে কাজ করছেন। বর্তমানে তিনি জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি। তিনি তরুণ ভোটারদের কাছে এক নতুন প্রত্যাশার প্রতীক। তার গণসংযোগে দেখা গেছে পরিবর্তন ও স্বচ্ছ রাজনীতির অঙ্গীকার।
অপরদিকে, হাজী জসিম উদ্দিন ভাট, একজন তরুণ উদ্যোক্তা ও সমাজকর্মী হিসেবে পরিচিত। ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আসা জসিম ভাট বর্তমানে টঙ্গী জনপদে জনগণের পাশে থাকা নেতা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। এলাকার সাধারণ মানুষ তার কাছে সহজে পৌঁছাতে পারে—এটাই তাকে ভোটারদের কাছে আলাদা করে তুলছে। অন্যদিকে, গাজী সালাহউদ্দিনকে এমপি হিসেবে দেখতে চেয়ে ইদানিং এলাকায় কিছু ফেস্টুন লাগানো হয়েছে। অবশ্য এর আগেই আরিফ হোসেন হাওলাদার, হাজী জসিম উদ্দিন ভাট ও সরকার পরিবারের ৪ সদস্যের ব্যানার ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে গাজীপুর -৬ আসনের অলি-গলি, বললে গেছে এখানকার চেহারা। বইতে শুরু করেছে নির্বাচনী আমেজ।
পরিবর্তনের দাবি: গাজীপুর মহানগর কৃষক দলের যুগ্ম আহবায়ক মোহাম্মদ আলফাজ দেওয়ান বলেন—“দিন বদলেছে। এখন মানুষ পরিবর্তন চায়, তারা স্বচ্ছ ইমেজ ও নতুন প্রজন্মের নেতৃত্ব খুঁজছে। ক্লিন ইমেজ ছাড়া আর কেউ গাজীপুর-৬ এ টিকতে পারবে না।”
যদিও এখনো বিএনপির চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা হয়নি, তবে রাজনৈতিক মহলে জোরালো ধারণা—এই আসনে তরুণ প্রজন্মের একজনই চূড়ান্ত মনোনয়ন পাবেন। এক্ষেত্রে আরিফ হাওলাদার ও জসিম ভাট তালিকার শীর্ষে রয়েছেন। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামীও এখনো প্রার্থী ঘোষণা করেনি, তবে বিএনপির মনোনয়ন চূড়ান্ত হলে তারাও কৌশলীভাবে নিজেদের অবস্থান জানাবে বলে জানা গেছে। সব মিলিয়ে, সরকার পরিবারের ভেতরে প্রতিদ্বন্দ্বিতার পাশাপাশি তরুণ প্রজন্মের উত্থান গাজীপুর-৬ আসনকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলেছে। ভোটারদের প্রত্যাশা—এই আসনে দেখা যাবে বিএনপির ভেতরের আসল শক্তিমত্তা এবং নতুন নেতৃত্বের উত্থান।