প্রকাশ: শনিবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৯:৪৮ পিএম (ভিজিট : ৬১)
লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জে রহমতখালী খালে যাত্রীবাহী বাস উল্টে অন্তত পাঁচজনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এই দুর্ঘটনায় আরও অন্তত ১৪ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ সকাল ৮টার দিকে চন্দ্রগঞ্জ কফিল উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের সামনে আনন্দ পরিবহন নামের একটি যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রহমতখালী খালে পড়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নোয়াখালী থেকে লক্ষ্মীপুরগামী বাসটি বিপরীত দিক থেকে আসা জেনাকি পরিবহনকে সাইড দিতে গিয়ে এবং সামনে একটি সিএনজি অটোরিকশা এসে পড়লে চালক নিয়ন্ত্রণ হারান।
নিহতদের মধ্যে জয়নাল আবেদীন (৫৭) এবং মোরশেদ আলম (৪০) সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের শেখপুর গ্রামের বাসিন্দা। জয়নাল বাক প্রতিবন্ধী এবং মোরশেদ একজন চা দোকানী ছিলেন। নিহতদের বাকিরা হলেন মাজেদ (নোয়াখালী), রিপন (পরিচয় মেলেনি) এবং হুমায়ুন কবির (নওগাঁ)। হুমায়ুন কবির এরিস্টো ফার্মা নামক একটি ওষুধ কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন এবং চন্দ্রগঞ্জের লতিফপুর গ্রামে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়জুল আজিম দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দুর্ঘটনার পরপরই স্থানীয় লোকজন উদ্ধার কাজে এগিয়ে আসে এবং বেশ কয়েকজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। এরপর ফায়ার সার্ভিস ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ক্রেনের সাহায্যে বাসটি খাল থেকে তোলা সম্ভব হয়। ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল খালের তলদেশে তল্লাশি চালাচ্ছে, তবে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত নতুন করে কাউকে উদ্ধারের খবর পাওয়া যায়নি।স্থানীয়দের অভিযোগ, উদ্ধার তৎপরতা দেরিতে শুরু হওয়ায় হতাহতের সংখ্যা বেড়েছে। তাদের দাবি, আনন্দ পরিবহনের বাসটিতে অন্তত ২০ থেকে ২৫ জন যাত্রী ছিলেন, যার মধ্যে ১৫ জনকে উদ্ধার করা হলেও বাকিদের খোঁজ নেই। উদ্ধার তৎপরতায় বিলম্বের কারণে স্থানীয়রা উত্তেজিত হয়ে রয়েছেন এবং ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের বিরুদ্ধে দেরিতে আসার অভিযোগ তুলেছেন।
মাত্র এক মাস আগে, গত ৭ অক্টোবর ভোরে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে নোয়াখালীর চন্দ্রগঞ্জ পূর্ব বাজারে একই খালে একটি মাইক্রোবাস ডুবে গিয়েছিল, যেখানে একই পরিবারের সাতজনের মৃত্যু হয়েছিল। একই ধরনের দ্বিতীয় দুর্ঘটনায় এলাকার মানুষের মধ্যে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে।