প্রকাশ: বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৫:৪২ পিএম (ভিজিট : ২১৭)
জাতীয় নির্বাচনের আগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে না আসলে অন্য রাজনৈতিক দলগুলো ভোটের মাঠে এগিয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি। তিনি বলেন, ‘তারেক রহমান দেশে না আসলে বিএনপির রাজনীতির অবস্থা জাতীয় পার্টির মত হয়ে যাবে।’
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) নিজের ইউটিউব চ্যানেলের এক ভিডিও বার্তায় তিনি এসব কথা বলেন।
গোলাম মাওলা রনি বলেন, ‘এটা একান্ত আমার ব্যক্তিগত অভিমত।
সেটি হলো তিনি (তারেক রহমান) যদি এখন বাংলাদেশে না আসেন, বিএনপি রাজনীতির অবস্থা জাতীয় পার্টির মত হয়ে যাবে। রাজনৈতিক দল হিসেবে যদি প্রতিষ্ঠা পেয়ে যায় তবে এক নম্বর দল হয়ে যাবে জামায়াত। কোন সন্দেহ নাই তার ধারের কাছে বিএনপি যেতে পারবে না।’
তিনি বলেন, ‘যদি উনি না আসেন।
দুই নম্বর হল যদি আওয়ামী লীগ ফিরে আসে কিংবা জাতীয় পার্টির উপর আওয়ামী লীগ ভর করে সেক্ষেত্রে কে এক নম্বর হবে এটা বলা যাবে না। অর্থাৎ জাতীয় পার্টি এক নম্বর হবে। জামায়াত দুই নম্বর হবে। বিএনপিকে যদি একটা দল হিসেবে বাংলাদেশে রাখতে হয় তিনি ইংল্যান্ডে বসে এখন যা কিছু করছেন এটা আগামী দিনে সম্ভব হবে না।
অবশ্যই তাকে ঝুঁকি নিয়ে বাংলাদেশে আসতে হবে।’
গোলাম মাওলা রনি বলেন, ‘জামায়াত বা আওয়ামী লীগ যদি বিভিন্নভাবে এখন এটা রিফাইন আওয়ামী লীগ হতে পারে উইদ আউট শেখ হাসিনা। শেখ পরিবার হতে পারে অথবা ভারতের মধ্যস্থতায় বা ভারতের দাপটে ইন্টারভেনশনে আমেরিকা যেভাবে মানুয়েল নরিয়াগাকে ক্ষমতায় বসিয়েছিল। আমেরিকা যেভাবে পারভেজ মোশারফকে ক্ষমতায় বসিয়েছে। আমেরিকা যেভাবে শেখ হাসিনাকে উচ্ছেদ করেছে।
আমেরিকা যেভাবে ইমরান খানকে উচ্ছেদ করেছে। বাংলাদেশে ভারত ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় যেভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল তাতে পাকিস্তানি বাহিনী সাত দিনে তছনছ হয়ে গিয়েছিল। ডিসেম্বর মাসের ৬ তারিখে তারা এখানে সরাসরি আসে। এরপর ভারতীয় বাহিনীর সঙ্গে আসলে সাত দিনও টিকে থাকতে পারেনি। তারা আত্মসমর্পণ করেছে এরকম যদি ভারত আবারও করে তার মানে কি? দেশে রীতিমত কেয়ামত হয়ে যাবে। তো সেই কেয়ামতের সময়টিতেও যদি তারেক রহমান উপস্থিত থাকেন তাহলে বিএনপি সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল থাকবে। বিএনপির ভবিষ্যৎ থাকবে এবং তারেক রহমানের কিচ্ছু হবে না। কিন্তু যদি তিনি দূরে থাকেন নির্বাচন হয়ে যায়। এরপর যদি জরুরি আইন হয়। কিংবা সেনাশাসন হয়। তখন কিন্তু ছলে বলে কৌশলে জামায়াত এগিয়ে থাকবে।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে যারা ক্ষমতায় আসবে তাদের সঙ্গে তারা কমপ্লাই করবে আওয়ামী লীগ। বিএনপি আসলে কমপ্লাই করতে পারবে না। তারা তারা যেকোন পরিবেশ পরিস্থিতির সঙ্গে ইতিবাচকভাবে ক্ষমতাধরদের সাথে মিলে যাওয়ার অসাধারণ একটা প্রতিভা আছে। তারা কখনো কখনো সরকারি বিরোধিতা করে বটে। তারা একসময় আওয়ামী লীগের সঙ্গে থেকে এরশাদের বিরোধিতা করেছে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে থেকে বিএনপির বিরোধিতা করেছে। বিএনপির সঙ্গে থেকে আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করেছে। বাট এখানে তাদের খুব শক্ত প্রতিপক্ষ থাকা লাগবে। আদারওয়াইজ ইন এ সিঙ্গেল ওয়ে তারা যখন খুব সিঙ্গেল ফর্মে থাকে। এখন যেভাবে তারা খুব সিঙ্গেল ফর্মে আছে। তখন সংগত কারণে তারা সরকারের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে। আগামীতে ঠিক এই তাদের এই চরিত্রের কারণে তারা থেকে যাবে। আর জাতীয় পার্টি থেকে যাবে যতদিন ভারত আছে। ভারতের মানে সবচেয়ে বিশ্বস্ত দল হলো জাতীয় পার্টি। যদি ভারতের সামর্থ্য থাকতো তাহলে তারা জাতীয় পার্টিকে ক্ষমতায় রাখতো তাদের সেই অবস্থা এরশাদের মত অবস্থা থাকতো।’
তিনি আরো বলেন, ‘জাতীয় পার্টি যে ফর্মেই থাকুক এরা ভারতের এ টিম। এটা আপনাদের বুঝতে হবে। তো কাজেই এইযে গত এক বছর আপনি দেখেন সব মিলিয়ে জাতীয় পার্টির একটা পশম কিন্তু আমরা কেউ স্পর্শ করতে পারিনি। বরং আমরা যারা জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম ন্যারেটিভ তৈরি করেছি, কথাবার্তা বলেছি আল্টিমেটলি আমরা অনেক নিগ্রহের শিকার হয়েছি সরকারের পক্ষ থেকে। সরকারের লোকজন এটা পছন্দ করেনি। জাতীয় পার্টি ঠিকই প্রোটোকল পাচ্ছে, তারা দাওয়াত পাচ্ছে।’