প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট, ২০২৫, ৬:০৩ PM
ভারতে বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলোযতে বাঙালিদের হেনস্তার অভিযোগ তুলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। এবার সেসব ভুক্তভোগীর জন্য বড় ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। ভিন রাজ্যে অত্যাচারের শিকার বাঙালি শ্রমিকদের জন্য নতুন উদ্যোগের ঘোষণা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গে ফিরলেই মিলবে মাসিক ভাতা, দেওয়া হবে এককালীন টাকাও। রাজ্য সরকারের নতুন এই উদ্যোগের নাম দেওয়া হয়েছে ‘শ্রমশ্রী’।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সচিবালয় নবান্ন থেকে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মমতা ব্যানার্জী বলেন, ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে যেখানে যেখানে ডাবল ইঞ্জিন সরকার আছে সেখানে বাংলা ভাষা ও বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের ওপর পরিকল্পিতভাবে আক্রমণ চালানো হচ্ছে। কেউ বাংলায় কথা বললে তাকে অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। তাকে বাংলাদেশে পুশ করা হচ্ছে, জেলে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে, কোথাও থানায় তুলে নিয়ে হেনস্তা করছে। এ পর্যন্ত ২২ লাখ বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিক ও তাদের পরিবার হেনস্তার শিকার হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, অত্যাচারিত হয়ে এর মধ্যে অনেকেই পশ্চিমবঙ্গে ফিরে এসেছে। অনেক লোককে আমরাও ফিরিয়ে এনেছি। সেই সংখ্যাটি হলো ২ হাজার ৭৩০ পরিবার। এদের প্রতি পরিবারের মাথাপিছু ৪-৫ জন ধরা হলে সংখ্যাটা ১০ হাজার ছাড়াবে।
মমতা বলেন, এদের ফেরাতে প্রতিক্ষেত্রে আদালতে মামলা করতে হয়েছে। মামলার মাধ্যমে যাদের ফেরানো হয়েছে, তাদের অনেককেই বাংলাদেশে পুশ ইন করা হয়েছিল। এছাড়া অন্ধ্র প্রদেশ, হরিয়ানা, দিল্লি, রাজস্থানের মতো রাজ্যগুলোতে অনেকে জেলে বন্দি ছিল।
এ ধনের ঘটনা সারা ভারতজুড়ে চলছে বলে অভিযোগ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। ভুক্তভোগীদের পুনর্বাসনের জন্য নতুন ‘শ্রমশ্রী’ প্রকল্প চালু করেছেন মমতা। কেন এই প্রকল্প শুরু করা হলো এবং এর সুযোগ-সুবিধা কী? সেই বিষয়ে বিস্তারিত বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনা এবং তাদের জীবিকার জন্য ও নিজেদের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য সাহায্য করা।
‘প্রথমেই ফিরে আসা শ্রমিকদের মধ্যে দেখা হবে কার কী দক্ষতা আছে? দক্ষতা অনুযায়ী তাদের কাজ দেওয়া হবে। এছাড়া যারা একেবারেই অদক্ষ, তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে জীবিকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। কোনো পরিযায়ী শ্রমিক পশ্চিমবঙ্গে ফিরে আসতে চাইলে প্রথমেই তাকে এককালীন পাঁচ হাজার রুপি দেওয়া হবে। এছাড়া, যতদিন না তারা কাজ পাবে, ততদিন প্রতিমাসে পাঁচ হাজার রুপি করে অর্থ সাহায্য পাবে। পাশাপাশি, তাদের যেন খাদ্যের সমস্যা না হয় তার জন্য ‘খাদ্য সাথী’ কার্ড (সরকারি প্রকল্প) দেওয়া হবে। একইভাবে স্বাস্থ্যের দিকে নজর রাখার জন্য তাদের স্বাস্থ্য ‘সাথী কার্ড’ দেওয়া হবে।
মমতা ব্যানার্জী বলেন, পশিচিমবঙ্গে যাদের বাসস্থান নেই, তাদের থাকার জন্য একটি আশ্রয়স্থল করা হবে। তারা থাকবেন কমিউনিটি সেন্টারগুলোতে। তাদের সন্তানদের জন্য সরকারি স্কুলগুলোতে শিক্ষার ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।