ডারউইনে টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের বাংলাদেশ ‘এ’ দলে জায়গা পেয়েছেন নাঈম শেখ, হাসান মাহমুদ, নাঈম হাসানও। নুরুল হাসান সোহানকে বাংলাদেশ দলে না ফেরানোয় অনেক প্রশ্ন ও আলোচনা হয়েছে গত কিছুদিনে। ফেরার দাবি জানানোর আরেকটি বড় সুযোগ তিনি পেলেন। অস্ট্রেলিয়া সফরে টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ ‘এ’ দলকে নেতৃত্ব দেবেন এই কিপার-ব্যাটসম্যান।
১৫ সদস্যের এই দলে উল্লেখযোগ্য দুটি নাম তরুণ সম্ভাবনাময় আগ্রাসী ব্যাটসম্যান জিসান আলম ও উঠতি পেস বোলিং অলরাউন্ডার তোফায়েল আহমেদ। টপ এন্ড টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের সবগুলি ম্যাচই হবে ডারউইনে। প্রাথমিক পর্বে বাংলাদেশ ‘এ’ দল খেলবে ছয়টি ম্যাচ।
বাংলাদেশ ‘এ’ দলের সবশেষ সিরিজেও অধিনায়ক ছিলেন সোহান। নিউ জিল্যান্ড ‘এ’ দলের বিপক্ষে গত মে মাসে একদিনের ম্যাচের সিরিজে সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি, আনঅফিসিয়াল টেস্টেও তার ব্যাটে এসেছিল শতরান। ঘরোয়া ক্রিকেটের বিভিন্ন সংস্করণে তিনি পারফর্ম করে আসছেন বেশ অনেক দিন ধরেই। কিন্তু জাতীয় দলের দুয়ার খুলছে না। আরেকবার সেখানে কড়া নাড়ার সুযোগ এখন তার সামনে।
জিসান গত জাতীয় লিগ টি-টোয়েন্টিতে ২৮১ রান করেছিলেন ১৫৮.৭৫ গড়ে। বয়সভিত্তিক ক্রিকেট থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিং দিয়ে নিজেকে আলাদা করে চিনিয়েছেন তিনি। তার অফ স্পিন বোলিংও বেশ কার্যকর। ২০ বছর বয়সী ক্রিকেটার সবশেষ খেলেছেন বাংলাদেশ ইমার্জিং দলের হয়ে গত মে মাসে দক্ষিণ আফ্রিকা ইমার্জিং দলের বিপক্ষে একদিনের ম্যাচের সিরিজে।
ওই সিরিজে একটি ম্যাচ খেলেছিলেন তোফায়েল। গত জাতীয় লিগ টি-টোয়েন্টি ও পরে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে কার্যকর অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে নরজ কাড়েন তিনি।
জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে মোহাম্মদ নাঈম শেখ ও হাসান মাহমুদ। টেস্ট ও ওয়ানডের নিয়মিত মুখ হাসান অবশ্য সবশেষ শ্রীলঙ্কা সফরে ও পরে দেশের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে ছিলেন না। এই সংস্করণে নিজেকে আবার মেলে ধরার সুযোগ তার সামনে।
নাঈমের জন্যও এই সফরটি একটি পরীক্ষা। গত জাতীয় লিগ টি-টোয়েন্টি ও বিপিএলে সর্বোচ্চ রান করার পর বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টে দলে ফেরানো হয় তাকে। কিন্তু শ্রীলঙ্কায় একটি ও দেশে ফিরে পাকিস্তানের বিপক্ষে দুটি ম্যাচ খেলে তিনি ছিলেন একরকম খোলসবন্দি।
বাংলাদেশের হয়ে ১৪ টেস্ট খেললেও রঙিন পোশাকে আলোচনায় সেভাবে না থাকা অফ স্পিনার নাঈম হাসান সুযোগ পাচ্ছেন সাদা বলের ঝলক দেখানোর। ঘরোয়া ক্রিকেটে সব সংস্করণেই পারফর্ম করে সীমিত ওভারের জাতীয় দলে ডাক-প্রত্যাশী মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনও আছেন দলে।
এছাড়াও জাতীয় দলের জায়গা হারানো সাইফ হাসান, ইয়াসির আলি চৌধুরি, আফিফ হোসেনদের সঙ্গে উঠতি সম্ভাবনাময় কয়েকজন ক্রিকেটার।
সফরের জন্য বাংলাদেশ ‘এ’ দল ঢাকা ছাড়বে আগামী বৃহস্পতিবার। টপ এন্ড টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ ১৪ অগাস্ট পাকিস্তান শাহিন্সের (এ দল) বিপক্ষে। ১৬ অগাস্ট লড়াই নেপালের বিপক্ষে, ১৭ অগাস্ট পার্থ স্কর্চার্সের সঙ্গে, ১৯ অগাস্ট প্রতিপক্ষ নর্দান টেরিটরি স্ট্রাইক, ২১ অগাস্ট খেলা মেলবোর্ন স্টার্সের সঙ্গে এবং ২৩ অগাস্ট অ্যাডিলেইড স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে।
টুর্নামেন্টের সেমি-ফাইনাল ও ফাইনাল ২৪ অগাস্ট। ফাইনালে উঠতে পারলে তাই দুই দিনে তিনটি ম্যাচ খেলবে হবে সোহানদের। টপ এন্ড টি-টোয়েন্টির গত আসরেও ছিল বাংলাদেশের প্রতিনিধি। আকবর আলি নেতৃত্বে হাই পারফরম্যান্স দল রানার্স আপ হয়েছিল ফাইনালে অ্যাডিলেইড স্ট্রাইকার্স একাডেমির কাছে হেরে। টপ এন্ড টি-টোয়েন্টি শেষে বাংলাদেশ ‘এ’ দল একটি চারদিনের ম্যাচও খেলবে। সাউথ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটি শুরু ২৮ অগাস্ট। ম্যাচের ভেন্যু এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
বাংলাদেশ ‘এ’: নুরুল হাসান সোহান (অধিনায়ক), সাইফ হাসান, মোহাম্মদ নাঈম শেখ, জিসান আলম, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, ইয়াসির আলি চৌধুরি, আফিফ হোসেন, তোফায়েল আহমেদ, মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরি, রকিবুল হাসান, মাহফুজুর রহমান রাব্বি, নাঈম হাসান, মুসফিক হাসান, রিপন মন্ডল, হাসান মাহমুদ।