প্রকাশ: রবিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৩, ৮:৩২ PM
একপাশে পাহাড় আর অন্য পাশে সমুদ্র। কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভের নান্দনিক ও নৈসর্গিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করে এবার সেন্টমার্টিন যেতে পারবে পর্যটকেরা। নীল জলরাশির ছোঁয়া নিয়ে রোমাঞ্চকর সমুদ্রযাত্রায় উন্মোচন হলো ব্লু ইকোনমি ট্যুরিজমের দ্বার।
রবিবার (৩১ ডিসেম্বর) ইনানী রয়েল টিউলিপের সামনে সমুদ্রসৈকতে নির্মিত নৌবাহিনীর নান্দনিক জেটি থেকে এই প্রথমবারের মতো যাত্রী নিয়ে সেন্টমার্টিন গেলো প্রমোদতরী এমভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেস। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত পর্যটকরা কর্ণফুলীর যাত্রী হতে পেরে বেশ আনন্দিত। নৈসর্গিক এলাকা থেকে জাহাজ চালু করায় বেশ উচ্ছ্বসিত তারা।
কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্সের এমডি এম এ রশিদ বলেন, বছরের শেষ দিনে পরীক্ষামূলকভাবে জাহাজটি চালু করা হয়েছে। আগামী ১১ জানুয়ারি থেকে পুরোদমে চলবে। ঘাটের অভাবে অনেক ক্রুজ শিপ এতদিন কক্সবাজারে ভিড়তে পারেনি। অবস্থানের সুযোগ ছিল না। নৌবাহিনীর জেটিটি ব্যবহারের মাধ্যমে নতুন দিগন্তের উন্মোচন হলো। ইনানী থেকে সরাসরি সেন্টমার্টিন নৌরুটে জাহাজ চলাচল শুরু হওয়ায় এখানকার পর্যটন আরো সমৃদ্ধ হবে। বিভিন্ন দেশ থেকে পর্যটক আসবে। সরকার রাজস্ব পাবে। পর্যটনে আরো এগিয়ে যাবে কক্সবাজার, এমনটি মনে করেন এমএ রশিদ।
নৌবাহিনীর জেটি থেকে কর্ণফুলী এক্সপ্রেস চালু করায় পর্যটকরা বেশ আকৃষ্ট হয়েছে বলে মন্তব্য করেন টুয়াকের সাধারণ সম্পাদক নুরুল কবির পাশা পল্লব। তিনি বলেন, কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নিতে পর্যটনশিল্প উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসা দরকার।'
পর্যটন উদ্যোক্তা ও কর্ণফুলী এক্সপ্রেস কক্সবাজারের ব্যবস্থাপক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, 'ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনাসহ সারা দেশ থেকে পর্যটকরা জাহাজে করে সরাসরি কক্সবাজার আসতে পারবে। সাগরের নীল জলরাশির উপর জেটির অবস্থান বেশ সুন্দর ও নান্দনিক হয়েছে মন্তব্য করেন হোসাইন ইসলাম বাহাদুর। ইনানী থেকে সেন্টমার্টিন কর্ণফুলী এক্সপ্রেসেন র নতুন রুট চালুর মধ্য দিয়ে পর্যটনের সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মোচন হয়েছে। এটার মাধ্যমে পর্যটকরা মেরিন ড্রাইভ-ইনানী সৌন্দর্য উপভোগের পাশাপাশি ঝামেলা মুক্তভাবে স্বল্প সময়ে সেন্টমার্টিন যাওয়া আসা করতে পারবে। এর মাধ্যমে পর্যটক আরো বৃদ্ধি পাবে। এই জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান তিনি।'
সাগরে নির্মিত জেটি ব্যবহার করে জাহাজ চলাচলে পরিবেশের কোন ক্ষতি হবে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, 'শুধু মুখে বললে তো হবে না। এই জেটি দিয়ে জাহাজ চললে পরিবেশের কেমন ক্ষতি হতে পারে, এ ধরণের কোন গবেষণা প্রতিবেদন আছে কিনা? বিরোধিতার খাতিরে যাতে কেউ বিরোধিতা না করেন। কক্সবাজারের পর্যটনশিল্পকে এগিয়ে নিতে যার যার অবস্থান থেকে সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।' উল্লেখ্য, এমভি কর্ণফূলী এক্সপ্রেস ১১ জানুয়ারি থেকে প্রতিদিন সকাল ৯টায় ইনানী জেটিঘাট ছাড়বে। সেন্টমার্টিন পৌঁছবে দুপুর সাড়ে ১২টায়। বিকাল ৩টায় দ্বীপ থেকে জাহাজ ছাড়বে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় নৌবাহিনীর জেটিতে পৌঁছাবে।এই জাহাজটি ৭৫০ জন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন। একই সময় প্রতিদিন যাত্রা দেয়ার সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। জাহাজটিতে দ্বীপে আসা ও যাওয়ার ক্ষেত্রে টিকেট মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ শত টাকা থেকে ৩২ শত টাকা। পর্যটকরা মেরিন ড্রাইভ হয়ে সমুদ্র উপভোগ করে সকালেই সমুদ্র পথে যাত্রা দেবেন প্রবাল দ্বীপে। সাগরের সৌন্দর্য উপভোগ করবেন। ফেরার সময় উপভোগ করতে পারবেন সূর্যাস্তের দৃশ্য।