দ্বাদশ নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়ে আসছে ততই জেলার নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। এই নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকার পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরাও তাদের মার্কা নিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। অবশ্য প্রচার-প্রচারণা ও গণসংযোগে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের মনোনীত প্রার্থীরাই এগিয়ে রয়েছে বলে মনে করছেন সাধারণ ভোটাররা। তাদের সাথে পাল্লা দিয়ে এগুচ্ছেন ট্রাক ও ঈগল পাখি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। গাজীপুর-১ আসনে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক প্রতিদিন উঠান বৈঠক, নির্বাচনী সভা-সমাবেশ ও গণসংযোগ করছেন। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে দলীয় উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরে লিফলেট বিতরণ করছেন। এছাড়াও এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমসহ স্থানীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ও গণসংযোগ করছেন কালিয়াকৈর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. রেজাউল করিম রাসেল। এ আসনে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হকের বিজয়ের সম্ভবনা বেশী থাকলেও রেজাউল করিম রাসেলকেও দুর্বল ভাবতে পারছেন না সাধারণ ভোটাররা। এই আসনের ভোটাররা জানান, নৌকার প্রার্থী মোজাম্মেল হকের ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। তিনি এই আসনের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। ভোটারদের মধ্যে তাকে নিয়ে ব্যাপক উৎসাহ দেখা যাচ্ছে। আশা করছি এবারও তিনি বিপুল ভোটে জয়লাভ করবেন। আবার কেউ কেউ বলছেন- বিপরীত কথাবার্তা। তারা জানাচ্ছেন, কালিয়াকৈরে যিনি নৌকার মাঝি বিভিন্ন সময়ে তিনিই নৌকা বিরোধী হয়ে কাজ করেছেন। এবার হয়তো তিনিও নৌকার ভরাডুবির শিকার হতে পারেন।
গাজীপুর-২ আসনের আওয়ামীলীগ মনোনীত (নৌকার) প্রার্থী ও প্রখ্যাত শ্রমীক নেতা শহীদ আহসান উল্লাহ মাষ্টারের যোগ্যসন্তান যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব মো. জাহিদ আহসান রাসেল। টানা চারবার এই আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। এবারও তিনি নৌকার প্রার্থী হয়েছেন। প্রতিদিন নেতাকর্মীদের নিয়ে উঠান বৈঠক, নির্বাচনি সভা-সমাবেশ ও গণসংযোগ করছেন তিনিও। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরে এলাকাবাসির কাছে ভোট প্রার্থনা করছেন। এই আসনে দুইজন স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন। তারাও প্রচার-প্রচারণা ও গণসংযোগ করছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলীম উদ্দিন বুদ্দিন, তিনি ট্রাক প্রতীক নিয়ে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র এ্যাড. জাহাঙ্গীর আলমকে সঙ্গী করে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে গাজীপুর ২ আসনের পাড়া মহল্লায় গিয়ে ভোট চাইছেন। যে কারণে ভোটের মাঠে তিনিও শক্তিশালী এবং পরাক্রমশালী হিসেবে রয়েছেন ভোটারদের নজরে।
অপরদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. সাইফুল ইসলাম ঈগল প্রতীক নিয়ে মহল্লায় মহল্লায় ঘুরে ভোটারদের মন জয় করার চেষ্টা করছে।
গাজীপুর ২ আসনের ভোটাররা জানান, জনপ্রিয় শ্রমিক নেতা শহিদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের ছেলে জাহিদ আহসান রাসেল একজন তরুণ নেতা। বাবার মতো এলাকায় তার জনপ্রিয়তা রয়েছে। তিনি গাজীপুর-২ আসনে স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মন্দির, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন করেছেন। এ আসনে আলমি উদ্দিন বুদ্দিন ও জাহিদ আহসান রাসেল এমপির মধ্যে লড়াই হবে, তবে স্থানীয় মুরব্বীরা জানান, সাময়িক কিছু প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। তবুও এবারও জাহিদ আহসান রাসেল বিপুল ভোটে বিজয়ী হবার সম্ভাবনা।
অপরদিকে কেউ কেউ বলছেন- গ্রীন সিটি ক্লীন সিটির রূপকার সিটি উন্নয়নের রোল মডেল জাহাঙ্গীর আলমের কারিশমা এই নির্বাচনে বুদ্দিনের পক্ষে। কাজেই কার ভাগ্যে জয়ের মালা বলা সহজ নয়।
গাজীপুর-৩ আসনে আওয়ামীলীগের মনোনীত (নৌকার) প্রার্থী প্রয়াত সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট রহমত আলীর মেয়ে অধ্যাপক রুমানা আলী টুসী। তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রচার-প্রচারণা, গণসংযোগ ও উঠান বৈঠক করে ভোটারদের কাছে ভোট চেয়ে যাচ্ছেন। ভোটারদের মন জয় করতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া এ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য ও গাজীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন সবুজ এবার মনোনয়ন পাননি। ততাপিও তিনিও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে প্রচার-প্রচারণা ও গণসংযোগ চালিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন। এ আসনে অধ্যাপক রুমানা আলী টুসী এবং ইকবাল হোসেন সবুজের মধ্যে হাড্ডা-হাড্ডি লড়াই হবে। কে বিজয় মালা পড়বেন তা বোঝা মুশকিল বলেন স্থানীয়রা।
গাজীপুর-৪ আসনে আওয়ামীলীগ মনোনীত (নৌকার) প্রার্থী দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের মেয়ে সিমিন হোসেন রিমি এমপি মনোনয়ন পেয়েছেন। তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রচার-প্রচারণা, গণসংযোগ ও উঠান বৈঠক করে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। গণসংযোগকালে তিনি বলেন, এই আসনের মানুষের সাথে আমার নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। তারা আমাকে ভোট দিয়ে এমপি বানিয়েছেন। আমি আশা করছি, এবারও গাজীপুর-৪ আসনের ভোটাররা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখবে।
এই আসনে সিমিন হোসেন প্রতিদ্বন্ধী রিমির ফুফাক ভাই এবং তাজউদ্দীন আহমদের ভাগ্নে কৃষকলীগ নেতা আলম আহমেদ। তিনিও নির্বাচনী মাঠে প্রচার-প্রচারণা ও গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। এই আসনে প্রতিদ্বন্ধীতা নেই বললেই চলে। অত:পর নৌকার বিজয় এ আসনে নিশ্চিত বলেন স্থানীয়রা। গাজীপুর-৫ আসনের আওয়ামীলীগ মনোনীত (নৌকার) প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য মেহের আফরোজ চুমকি। তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রচার-প্রচারণা, গণসংযোগ ও উঠান বৈঠক করে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন গাজীপুর জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক এমপি মো. আখতারউজ্জামান। তিনিও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমসহ নেতাকর্মীদের নিয়ে এলাকায় গণসংযোগ ও প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ আসনে বর্তমান এমপি মেহের