বৃহস্পতিবার ৭ আগস্ট ২০২৫ ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২
 
শিরোনাম:


সঞ্চয়পত্র কী? কেন করবেন, কীভাবে করবেন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: রবিবার, ৮ জানুয়ারি, ২০২৩, ৬:৩৬ PM

সঞ্চয়পত্র হচ্ছে একটি ফিক্সড ডিপোজিট বা সঞ্চয় স্কিম। দেশের সাধারণ মানুষ তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করতে পারেন সঞ্চয়পত্রে। যা ঝুঁকিমুক্ত ও লাভজনক বিনিয়োগ।

কোথা থেকে কিনবেন: বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় সঞ্চয় ব্যুরো, বাণিজ্যিক ব্যাংক ও ডাকঘর থেকে সব সঞ্চয়পত্র কেনা ও নগদায়ন করা যায়।
যে ধরনের সঞ্চয়পত্র আছে: বর্তমানে বাংলাদেশে পাঁচ ধরনের সঞ্চয়পত্র প্রচলিত আছে। সেগুলো হচ্ছে- পাঁচ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র, তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র, পরিবার সঞ্চয়পত্র, পেনশনার সঞ্চয়পত্র ও ডাকঘর সঞ্চয়পত্র।

সঞ্চয়পত্র কেন করবেন

সব শ্রেণির বিনিয়োগকারীর জন্যই নিরাপদ বিনিয়োগের নাম হচ্ছে সঞ্চয়পত্র। এর মাধ্যমে নিম্নোক্ত সুবিধাগুলো পাবেন- ১. ঝামেলামুক্ত ও ঝুঁকিহীন অর্থ বিনিয়োগ ২. মেয়াদ শেষে এগুলো থেকে ভালো অংকের মুনাফা পাওয়া যায় ৩. মুনাফার হার এফডিআরের সুদ থেকেও বেশি ৪. জরুরি প্রয়োজনে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেও ভাঙানো যায় ৫. মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ভাঙালে মুনাফার হার কিছুটা কম হয় ৬. তবে যেকোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের থেকে বেশি।

প্রসঙ্গত, নতুন নিয়ম অনুযায়ী সঞ্চয়পত্রে ১৫ লাখ টাকার ওপর বিনিয়োগ থাকলে তাদের মুনাফার হার দুই শতাংশ পর্যন্ত কমানো হয়েছে। তবে ১৫ লাখ টাকার নিচে বিনিয়োগের মুনাফা হার অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। অর্থাৎ ১৫ লাখ টাকার নিচে বিনিয়োগে আগের নিয়মেই মুনাফা পাওযা যাবে।

সঞ্চয়পত্র বিনিয়োগের যোগ্যতা

সবাই সবধরনের সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন না। এ ব্যাপারে সরকার কিছু শর্ত ঠিক করে দিয়েছে। যেমন ১৮ বছর ও তার চেয়ে বেশি বয়সের যেকোনো বাংলাদেশি নারী, যেকোনো বাংলাদেশি শারীরিক প্রতিবন্ধী নারী ও পুরুষ এবং ৬৫ বছর ও তার চেয়ে বেশি বয়সী বাংলাদেশি নারী ও পুরুষেরা শুধু একক নামে পরিবার সঞ্চয়পত্র কিনতে পারবেন।

পেনশনার সঞ্চয়পত্রও কিনতে পারেন না সবাই। অবসরভোগী সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারী, সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্য এবং মৃত সরকারি চাকরিজীবীর পারিবারিক পেনশন সুবিধাভোগী স্বামী, স্ত্রী ও সন্তানেরা এ সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন।

পাঁচ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র এবং তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র সবার জন্য উন্মুক্ত। ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী যেকোনো শ্রেণি-পেশার মানুষ একক বা যুগ্ম নামে এ দুই ধরনের সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন। নাবালকের পক্ষে সঞ্চয়পত্র কেনার এখন আর সুযোগ নেই।

সঞ্চয়পত্রের গ্রাহক কোনো কারণে মারা গেলে টাকা পাবেন তার মনোনীত ব্যক্তি বা নমিনি। সঞ্চয়পত্রে এক বা একাধিক নমিনি করার সুযোগ রয়েছে। যদিও নমিনি মনোনয়ন বাধ্যতামূলক নয়। তবে ভবিষ্যতে নগদায়ন ঝামেলা এড়াতে গ্রাহকেরা সাধারণত নমিনি মনোনয়ন দিয়েই থাকেন। এমনকি নাবালককেও নমিনি করা যায়। গ্রাহকের মৃত্যুর তিন মাসের মধ্যে আদালত থেকে উত্তরাধিকার সনদ নিয়ে সঞ্চয়পত্রের নগদায়ন করতে হয়। গ্রাহক ও নমিনি উভয়ই মারা গেলে সঞ্চয়পত্র ভাঙাতে পারেন আইনানুগ উত্তরাধিকারীরা।

সঞ্চয়পত্র কেনা ও ভাঙানো

৫০ হাজার টাকা, এক লাখ টাকা, দুই লাখ টাকা, পাঁচ লাখ টাকা ও ১০ লাখ টাকা মূল্যমানের পেনশনার সঞ্চয়পত্র রয়েছে। আর পরিবার সঞ্চয়পত্র রয়েছে ১০ হাজার, ২০ হাজার, ৫০ হাজার, এক লাখ, দুই লাখ, পাঁচ লাখ ও ১০ লাখ টাকা মূল্যমানের। এগুলো কেনা যায় জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতরের ৭১টি সঞ্চয় ব্যুরো কার্যালয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের সব কার্যালয়, সব তফসিলি ব্যাংক ও সব ডাকঘর থেকে। একই জায়গা থেকে ভাঙানোও যায়। ভাঙানোর দিন গ্রাহককে সশরীরে উপস্থিত হয়ে আবেদন করার নিয়ম রয়েছে।

পরিবার সঞ্চয়পত্রে এক লাখ টাকায় মাসিক মুনাফা পাওয়া যায় ৮৬৪ টাকা। তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রে ত্রৈমাসিক মুনাফা দুই হাজার ৪৮৪ টাকা। আর পেনশনার সঞ্চয়পত্রে ত্রৈমাসিক মুনাফা দুই হাজার ৬৪৬ টাকা। পাঁচ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রে একেক বছরের জন্য একেক হারে মুনাফা পাওয়া যায়।

সঞ্চয়পত্র কিনতে যা যা দরকার

১. সঞ্চয়পত্র ক্রয়ের নির্ধারিত আবেদন ফরম৷

২. ক্রেতার দুই কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি৷

৩. ক্রেতার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি।

৪. ক্রেতার ই-টিন সার্টিফিকেটের ফটোকপি (৫ লাখ টাকার বেশি কিনতে)।

৫. আয়কর পরিশোধের রশিদের ফটোকপি (৫ লাখ টাকার বেশি কিনতে)।

৬. এমআইসিআর চেকের মাধ্যমে বিনিয়োগের টাকা পরিশোধ (এক লাখ টাকার বেশি হলে)

৭. নমিনীর দুই কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি।

৮. নমিনী নাবালক হলে নমিনীর জন্মনিবন্ধন সনদ ও প্রত্যায়নকারীর জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি।

৯. পেনশনার সঞ্চয়পত্র কিনতে ক্রেতার পেনশন বইয়ের ফটোকপি এবং প্রাপ্ত আনুতাষিক এবং ভবিষৎ তহবিলের মঞ্জুরিপত্র।

সঞ্চয়পত্র ক্রয়ে যেভাবে কাগজপত্র পাবেন

সমস্ত কাগজপত্র জমা দিয়ে ব্যাংক হিসাবে টাকা জমা রেখে ক্রয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়। কেনার দিন বা পরের দিন ব্যাংক হিসাব থেকে জাতীয় সঞ্চয় ব্যুরো অর্থ কেটে নেয়। অর্থ ব্যাংক হিসাব থেকে কেটে নেওয়ার পর Sanchaypatro Activated হয়। মোটকথা, ব্যাংক থেকে সঞ্চয়পত্র কেনার সময় আপনি ব্যাংকের একটি কাগজ বা ডকুমেন্ট পাবেন এবং সঞ্চয়পত্র অ্যাকটিভ হওয়ার পর আপনি ব্যাংক থেকে সঞ্চয়পত্রের অনলাইন প্রিন্ট কপি পাবেন। দুটোই সাদাকালে প্রিন্ট কপি হতে পারে তাতে কোনো সমস্যা নেই। সঞ্চয়পত্র এখন সম্পূর্ণই অনলাইন বেইজ, তাই সঞ্চয়পত্র কপি হারিয়ে গেলেও সহজেই রি-ইস্যু করা যাবে।







আরও খবর


 সর্বশেষ সংবাদ

বিদায় ২০২৩ স্বাগত ২০২৪
নতুন বইয়ের ঘ্রাণে মাতবে ৩ কোটি ৮১ লাখ শিক্ষার্থী
জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশের দূতাবাসে বিএনপির চিঠি
আগৈলঝাড়ায় বই উৎসবে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই বিতরণ
কালিহাতীর আফজালপুর চরে নৌকার বিশাল সভা
আরো খবর ⇒


 সর্বাধিক পঠিত

স্বাধীনতার গান আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ছড়িয়ে দিতে চান লেনিন
কালীগঞ্জে ২ ভাগে বিভক্ত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা
গাজীপুরে প্রেমিকাকে গলা কেটে হত্যা প্রেমিক আটক
এই প্রথম মৃত্যুবরণ কারী সকল ইপিএসকর্মী সহ প্রবাসীদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া মাহফিল
ডিআইএর পরিচালক অলিউল্লাহ আজমতগীরের বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত
প্রকাশক: এম এন এইচ বুলু
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মাহফুজুর রহমান রিমন  |   উপদেষ্টা সম্পাদক : রাজু আলীম  
বিএনএস সংবাদ প্রতিদিন লি. এর পক্ষে প্রকাশক এম এন এইচ বুলু কর্তৃক ৪০ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ, বুলু ওশেন টাওয়ার, (১০তলা), বনানী, ঢাকা ১২১৩ থেকে প্রকাশিত ও শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস, ২৩৪ ফকিরাপুল, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
ফোন:০২৯৮২০০১৯-২০ ফ্যাক্স: ০২-৯৮২০০১৬ ই-মেইল: spnewsdesh@gmail.com