প্রকাশ: সোমবার, ২০ নভেম্বর, ২০২৩, ৬:৫৮ PM
ব্যাঙের আবার সর্দিজ্বর—বাক্যটা প্রবাদে রূপ নিয়েছে। কিন্তু মাছের কথা কেউ বলে না। মাছও পানিতে বাস করে। ব্যাঙ উভচর প্রাণী, এদের সবসময় পানিতে না থাকলেও চলে।
কিন্তু মাছেদের পানিতে থাকতেই হয়। পানিতে বাস করেও কি এরা জ্বরে আক্রান্ত হয়?
আমাদের জ্বর হয়। আমরা দেহের তাপমাত্রা মেপে সেটা জানতে পারি। মানুষের দেহে বারো মাস একটা নির্দিষ্ট তাপমাত্রা বজায় থাকে।
এটা সম্ভব হয় আমাদের মস্তিষ্কের ভেতরে থাকা হাইপোথ্যালামাস নামের গ্রন্থির কারণে। এই হাইপোথ্যালামাস থেকেই এক ধরনের রাসায়নিক তরল বেরিয়ে আসে, সেই রক্তে মিশে আমাদের শরীরের তাপমাত্রা সঠিক রাখতে সাহায্য করে এবং দেহের তাপমাত্রা বাড়তে দেয় না, কমতে বাঁধা দেয়। কিন্তু দেহে কোনো জীবাণু প্রবেশ করে যদি হাইপোথ্যালামাসকে সাময়িকভাবে অকেজো করে ফেলে, তখন দেহের তাপমাত্রা বাড়তেই থাকবে। এজন্যই আমাদের জ্বর হয়। জ্বর কে মূলত যেকোনো রোগের উপসর্গ হিসেবে ধরা হয়। ওষুধ খেলে দেহের ভেতরের জীবাণু নষ্ট হয়। তখন হাইপোথ্যালামাস আবার পুনরায় চাঙ্গা হয়। তাতে আমাদের জ্বরও কমে যায় এবং দেহ সুস্হ হয়ে ওঠে। অন্যদিকে, মাছ এমন প্রাণী যারা তাদের দেহের তাপমাত্রা পরিবেশের তাপমাত্রার সাথে মানিয়ে চলে।
পরিবেশে তাপমাত্রা বাড়লে এদের দেহের তাপমাত্রাও বাড়বে। পানি সাধারণত ঠান্ডা। ফলে মাছের দেহের তাপমাত্রা ও কম থাকে। বাতাসের মতো পানিতেও রয়েছে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাকের মতো অণুজীব। মাঝে মাঝে এইসব অণুজীব মাছের দেহে প্রবেশ করে। ফলে আমাদের মতো মাছের দেহের তাপমাত্রাও বেড়ে যায়। তখন মাছের দেহের তাপমাত্রা পরিবেশের (পানি) তাপমাত্রার চেয়ে বেশি হয়। বাতাসের মতো পানিতে সব জায়গায় তাপমাত্রা সমান থাকে না। গভীর পানিতে তাপমাত্রা কম, ওপরের দিকের তাপমাত্রা বেশি থাকে। জীবাণুর কারণে মাছের দেহের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে মাছ পানির ওপরের দিকে উঠে আসে। অনেকটাই আমাদের মতো জ্বর হলে আমরা যেমন চাদর বা কাথা গায়ে দিয়ে দেহের এবং পরিবেশের তাপমাত্রা সমান রাখার চেষ্টা করি ঠিক তেমন। মাছ উষ্ণ পানির দিকে চলে যায়, দেহের ও পরিবেশের তাপমাত্রা সমান হয়ে পড়ে। যার ফলে মাছও আরাম পায়। সুতরাং মাছেরও জ্বর হয় এবং এ থেকে আরাম পাওয়ার জন্য মাছ অনেক সময় পানির ভেতরে ওঠা-নামা করে।