আগামী ফেব্রুয়ারিতে ভারতে বসবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পরবর্তী আসর। গত পরশু রাতে গ্রুপের পাশাপাশি সূচিও ঘোষণা করেছে আইসিসি। বিশ্বকাপের আগে নিজেদের শেষ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে আজ আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। এই সিরিজেও কঠিন পরিস্থিতি থেকে উতরে ওঠার পরীক্ষায় পড়তে চান স্বাগতিক অধিনায়ক লিটন দাস।
যেমনটি তিনি চেয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চট্টগ্রামেই হওয়া সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি সিরিজেও। যদিও ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে সিরিজের ফল বাংলাদেশের পক্ষে যায়নি। মানে চাপের মুহূর্ত থেকে ম্যাচ বের করতে পারেননি লিটনরা। আইরিশদের বিপক্ষে এই জায়গাতেই উন্নতিতে চোখ কুড়ি-বিশের ক্রিকেটে বাংলাদেশ অধিনায়কের, ‘এই সিরিজেও আমার চাওয়া আগের মতোই।
আমি চাই, খেলোয়াড়রা যেন কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়। কিন্তু এমন অবস্থায় পড়ার পর শেষ সিরিজে আমরা ভালো করতে পারিনি। এই সিরিজে চেষ্টা করব যেন ওখান থেকে বের হয়ে ম্যাচগুলো জিততে পারি।’ দল হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে সাম্প্রতিক সময়ে ভালোই করছিল বাংলাদেশ।
টানা চারটি দ্বিপক্ষীয় সিরিজ জয় সে কথাই বলে। তবে সেটিতে ছেদ পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। মাঝে সংযুক্ত আরব আমিরাতে সর্বশেষ এশিয়া কাপেও গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তিন বিভাগেই খেই হারানোর ঘটনা ঘটেছে। বিশ্বকাপের আগে তাই সব ক্ষেত্রে উন্নতির জায়গা দেখছেন লিটন, ‘আমার মনে হয়, তিনটি বিভাগেই আমাদের উন্নতির জায়গা আছে। আর উন্নতির তো শেষ নেই।
বিশেষ করে যদি আমরা ফিল্ডিংটা আরো ভালো করতে পারি, তাহলে সেটি আমাদের জন্য অনেক বড় প্লাস পয়েন্ট হবে।’
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে নিশ্চিতভাবেই ঘাটতির জায়গাগুলো ঝালিয়ে নিতে চাইবেন ক্রিকেটাররা। ঘাটতি পূরণের সঙ্গে দাপুটে ক্রিকেটের বার্তাও দিয়ে রেখেছেন লিটন, ‘আমরা যদি শতভাগ দিয়ে খেলতে পারি, অবশ্যই দাপুটে জয় পাওয়া সম্ভব। একই সঙ্গে প্রতিপক্ষকেও আমাদের সম্মান করতে হবে। যেদিন যে দল ভালো ক্রিকেট খেলবে, তারাই ম্যাচ জিতবে। আমরা চেষ্টা করব আমাদের সেরা ক্রিকেটটা খেলার।’ এই সংস্করণে বাংলাদেশের দুশ্চিন্তার নাম মিডল অর্ডার। ঘুরেফিরে চেষ্টা করা হলেও সেভাবে থিতু হতে পারেননি কোনো ব্যাটার। ব্যর্থতা স্বীকার করলেও মিডল অর্ডারের ওপর লিটনের বিশ্বাস ফুটে উঠেছে তাঁর কথায়, ‘আমি খুব একটা চিন্তিত না মিডল অর্ডার নিয়ে। শেষ কয়েকটি সিরিজে মিডল অর্ডার আশানুরূপ পারফরম্যান্স করতে পারেনি। তবে তারা নিজেদের প্রমাণ করেছে। আমার মনে হয়, মাঝেমধ্যে ব্যাটারদের এমন খারাপ সময় যায়। তারা আবার ঘুরে দাঁড়াবে। আমার বিশ্বাস, এই সিরিজেই তারা ভালো ক্রিকেট খেলবে।’
এশিয়া কাপের আগ পর্যন্ত মিডল অর্ডার বেশ ভালোভাবেই সামলে আসছিলেন জাকের আলী অনিক। তাঁর ছন্দ হারিয়ে ফেলাই সাম্প্রতিক সময়ে বেশি ভুগিয়েছে বাংলাদেশ দলকে। অধিনায়ক হিসেবে অবশ্য সতীর্থকে আগলে রাখলেন লিটন, ‘আমি আমার খেলোয়াড়দের যথেষ্ট পরিমাণ সুযোগ দেব। তারা ঘুরেও দাঁড়াবে বলে বিশ্বাস। এত দিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের যে অভিজ্ঞতা ওদের হয়েছে, সেটি কাজে লাগাবে বলে আশা করছি।’
বিশ্বকাপের প্রসঙ্গও উঠে এসেছে লিটনের কথায়। ‘সি’ গ্রুপে পড়া বাংলাদেশের চার ম্যাচের তিনটিই কলকাতায়। প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ইতালি ও নেপাল। মুম্বাইয়ে শেষ ম্যাচটি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। টানা তিনটি ম্যাচ একই ভেন্যুতে হওয়ার সুবিধাও দেখছেন লিটন, ‘টানা তিনটি ম্যাচ আমরা কলকাতায় খেলব। এটা আমাদের জন্য একটা প্লাস পয়েন্ট হতে পারে। আমরা চেষ্টা করব আমাদের সেরা ক্রিকেটটা খেলার।’ তার আগে শেষ আন্তর্জাতিক সিরিজে নিজেদের ঝালিয়ে নেওয়ার চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের। সেই চ্যালেঞ্জে উতরে গেলে পূরণ হবে অধিনায়ক লিটনের অভিন্ন চাওয়াও।