প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৫, ৫:২৩ পিএম (ভিজিট : ১৯)
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে আনোয়ার হোসেন হত্যা মামলায় দুই জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একই মামলায় আরও পাঁচ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক সাবরিনা নার্গিস এ রায় দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মুমিনুল হক ভুঁইয়া তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- চৌদ্দগ্রাম থানার দেড়কোটা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে জিয়া উল্লাহ ওরফে জিয়া ও একই গ্রামের ইয়াকুব মিয়ার ছেলে জুয়েল।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- চৌদ্দগ্রামের দেড়কোটা গ্রামের ক্বারী ফজলুল হক, আজাদ রহমান, আবদুল কাদের, কবির আহমেদ ও ফেলনা গ্রামের সাদ্দাম হোসেন। রায় ঘোষণাকালে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি কবির আহমেদ আদালতে উপস্থিত ছিলেন এবং অপর ছয় আসামি পলাতক রয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ২২ এপ্রিল সন্ধ্যায় পূর্ব বিরোধের জের ধরে জিয়া উল্লাহ ওরফে জিয়া ও তার সহযোগীরা আনোয়ার হোসেনের দোকানে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। এতে বাধা দিলে তারা আনোয়ার হোসেনকে কুপিয়ে আহত করে। একপর্যায়ে তাকে শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। এ সময় স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। পরে সেখানে চিকিৎসাধীন তার মৃত্যু হয়।
পরে ২৩ এপ্রিল এ ঘটনায় নিহতের বাবা দেলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ২০ থেকে ২৫ জনের বিরুদ্ধে চৌদ্দগ্রাম থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত শেষে ওই বছরের ২৯ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের ২৬ আগস্ট জেলা ডিবির এসআই জিল্লুর রহমান আদালতের নির্দেশে ১৯ জনের বিরুদ্ধে পুনরায় চার্জশিট দাখিল করেন।
এ মামলায় ২৩ জন সাক্ষীর মধ্যে ১১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে মঙ্গলবার দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক সাবরিনা নার্গিস দুইজনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং অপর পাঁচ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া মামলার চার্জশিটভুক্ত ১২ জন আসামিকে বেকসুর খালাস দেন।
মামলার বাদী দেলোয়ার হোসেন বলেন, পলাতক আসামিরা এখনো আমাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে। তাদেরকে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে দ্রুততম সময়ের মধ্যে আদালতের রায় কার্যকরের দাবি জানিয়েছেন।