সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রায়কে কেন্দ্র করে জনমনে কোনও আতঙ্ক ছিল না বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমি তো কোথাও কোনও আতঙ্ক দেখলাম না। কিসের আতঙ্ক। ছোটখাট দুই- একটা ঘটনা ছাড়া বড় কিছু হয়নি।’
সোমবার (১৭ নভেম্বর) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘শরিয়তপুর, মাদারিপুর, গোপালগঞ্জ ও ফরিদপুরে সেখানে একটু ডিফিকাল্ট জায়গা। সেখানকার পরিস্থিতিটা একটু উত্তপ্ত। তবে সেখানেও বড় ধরণের কিছু নাই। ইলেকট্রিক করাত দিয়ে গাছটা কেটে সড়কে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে তারা সরে যায়। পরে এসব কাটা গাছ সরাতে একটু সময় লাগে।’
‘দেখামাত্র গুলি’র নির্দেশের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দেখামাত্র গুলির নির্দেশ এটা ঠিক নয়। যেটা অর্ডার হয়েছে সেটা হচ্ছে সেলপ ডিফেন্সের জন্য।’
মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘আপনারা যেমন হাতিয়ারের পারমিশন নেন নিরাপত্তার জন্য। সেটা দিয়ে শিকারের জন্য কেউ নেন না। নেওয়া হয় ডিফেন্সের জন্য। যদি কেউ আপনার ওপর আক্রমণ করে তখন তার আত্মরক্ষার অধিকারটা তো প্রত্যেক নাগরিকের রয়েছে।’
এ সময় তার পাশে উপস্থিত থাকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী সাবেক আইজিপি খোদা বক্স চৌধুরী বলেন, ‘আপনাকে যদি কেউ হত্যা করতে আসে তখন আক্রমণকারীকে নিহত করার অধিকার আপনার আছে। এটা সব দেশে সর্বত্র সর্বকালে হয়। আমাদের দেশে তাৎক্ষণিকভাবে হয়েছে তাতো না।’
ব্রাশ ফায়ার কারার অর্ডার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটা আপনারা কোথা থেকে পেলেন।’ তখন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘রাইফেল দিয়ে তো ব্রাশ ফায়ার হয় না। এটা দিয়ে তো সিঙ্গেল শুট করা যায়।’
শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘তাকে ফেরত আনার বিষয়ে ইতোমধ্যে ভারতকে লেখা হয়েছে। এটা কন্টিনিউয়াস বিষয়। আমরা অবশ্যই চাইবো তার প্রত্যাবর্তনের জন্য।’ নতুন করে তাকে ফেরত দেওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দরকার হলে অবশ্যই দেওয়া হবে।’
রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর বাড়ি ভাঙ্গাকে কেন্দ্র করে যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে সেই ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘এরা কিন্তু আমাদেরই ছেলে-মেয়ে। তাদের বোঝাতে হবে আমাদের। তাদের বলা দরকার এগুলো তোমাদের করার দরকার নেই। তোমরা পড়ালেখা কর। এটা দেখার জন্য আমরা আছি। আমরা দেখবো। কিছু কিছু লোক আছে তারা এটাকে উসকে দিতে চায়। অনেকের অনেক ধরনের স্বার্থ আছে। তারা এটাতে উসকানি দিতে পারে। যাদের স্বার্থ নাই তারা তাদের পরামর্শ দেবে যে এটা ঠিক হচ্ছে না।’
ভারতীয় নম্বর থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের প্রসিকিউটরকে হত্যার হুমকি ও রবিবার একজন উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘ভারত বা পাশ্ববর্তী দেশ থেকে যে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়া হয়, মিথ্যা সংবাদ দেওয়া হয়, এটার প্রতিকার সাংবাদিকদের হাতে বেশি।’