‘এসো আলো ছড়াই শেরপুরে’ স্লোগানকে ধারণ করে সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ের মনোরম ট্র্যাকে শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) ভোরে জমে উঠেছিল দৌড়ের উৎসব। স্থানীয় ও দেশি–বিদেশি প্রায় আটশো রানারের পদচারণায় রঙে রাঙা হয়ে ওঠে ঝিনাইগাতী উপজেলার রাংটিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ ও গারো পাহাড়ের আঁকাবাঁকা পথ।
শেরপুর রানার্স কমিউনিটির উদ্যোগে আয়োজিত ‘শেরপুর হাফ ম্যারাথন–২০২৫’ সকালে উৎসবমুখর পরিবেশে শুরু হয়। ভোর থেকেই সারাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রানাররা রাংটিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এসে জড়ো হন। চারটি ক্যাটাগরি—২১ কিমি, ১০ কিমি, ৫ কিমি ও ১ কিমি দৌড়ে মোট প্রায় আটশো প্রতিযোগী অংশ নেন।
সীমান্তবর্তী পাহাড়ি এলাকার নির্মল বাতাস, সবুজ প্রকৃতি ও শান্ত পরিবেশে এমন চ্যালেঞ্জিং ট্র্যাকে দৌড়ানো রানারদের মনে অন্যরকম অভিজ্ঞতা এনে দেয়। অংশগ্রহণকারী এক রানার বলেন— “এতো সুন্দর পাহাড়ি ট্র্যাকে দৌড়ানো সত্যিই অন্যরকম অনুভূতি। প্রতি বছর এমন আয়োজন হলে আমরা আবার আসব।”
দেশসেরা রানাররা জানান— “এ ধরনের ইভেন্ট শুধু স্বাস্থ্যচর্চাই নয়, শেরপুরের পর্যটন সম্ভাবনা ও গারো পাহাড় রক্ষায় জনসচেতনতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।”
এবারের প্রতিযোগিতায় শিশু, শারীরিক প্রতিবন্ধী, বেদে পল্লীর সদস্য এবং তৃতীয় লিঙ্গের মানুষসহ সমাজের পিছিয়ে পড়া ব্যক্তিদের অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিকে আরও তাৎপর্যপূর্ণ করে তোলে।
সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিরা বলেন— “শরীরচর্চা, পর্যটন ও পরিবেশ রক্ষার ইতিবাচক উদ্যোগে আমরা পাশে থাকতে পেরে গর্বিত।”
স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন স্থানীয় প্রশাসনের দায়িত্বশীলরাও।
আয়োজক কমিটির প্রধান সমন্বয়ক রাজিয়া সামাদ ডালিয়া বলেন—“গারো পাহাড়, পরিবেশ ও বন্যপ্রাণী রক্ষায় মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি শেরপুরে একটি শক্তিশালী রানার্স কমিউনিটি গড়ে তুলতে চাই আমরা।”
শেরপুর রানার্স কমিউনিটির প্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক আল আমিন সেলিম বলেন— “শেরপুরকে জাতীয় পর্যায়ে পরিচিত করতে প্রতিবছর আরও বৃহত্তর পরিসরে আমরা এই ইভেন্ট আয়োজন করবো।”
প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী ও অংশগ্রহণকারীদের হাতে মেডেল, ক্রেস্ট ও প্রাইজমানি তুলে দেন আয়োজক ও আমন্ত্রিত অতিথিরা। প্রাণ-প্রকৃতিময় গারো পাহাড়ে দিনভর ছিল দৌড়, উৎসব ও প্রাণের উচ্ছ্বাস।