সোমবার ২৭ অক্টোবর ২০২৫ ১১ কার্তিক ১৪৩২
 
শিরোনাম:


আন্তর্জাতিক
মারা গেছেন থাই রাজমাতা সিরকিত
প্রকাশ: শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫, ১২:২০ পিএম   (ভিজিট : ২৭৯)

থাইল্যান্ডের রাজমাতা সিরিকিত মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর। থাই রয়্যাল হাউজহোল্ড ব্যুরোর তরফ থেকে শনিবার (২৫ অক্টোবর) তার মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করা হয়।

রয়্যাল হাউজহোল্ডের বিবৃতিতে বলা হয়, ২০১৯ সাল থেকে তিনি অসুস্থতার কারণে হাসপাতালে ছিলেন। চলতি বছরের ১৭ অক্টোবর রক্তে সংক্রমণ ধরা পড়ে। শেষ পর্যন্ত শুক্রবার রাতে তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন।

পুত্র রাজা মহা বাজিরালংকর্ন ও তিন কন্যাকে উত্তরসূরি হিসেবে রেখে গেছেন রাজমাতা সিরকিত।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থাই রাজতন্ত্রে গ্ল্যামার ও মর্যাদার পুনরুত্থান ঘটিয়েছিলেন সিরকিত। পরবর্তী বছরগুলোতে সময়ে সময়ে রাজনীতিতেও প্রভাব রেখেছেন। ২০১২ সালে স্ট্রোকের পর থেকে তাকে আর জনসমক্ষে দেখা যায়নি।

রাজমাতা সিরকিতের মৃত্যুত্র রাজ পরিবার ও রাজকর্মচারীদের জন্য এক বছরের শোক ঘোষণা করা হয়েছে।

থাই প্রধানমন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুল রাজমাতার মৃত্যুতে মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য আসিয়ান সম্মেলনে তার সফর বাতিল করেছেন। শনিবার মন্ত্রিসভা বৈঠকে রাজকীয় শেষকৃত্য নিয়ে আলোচনা হবে।

রাজমাতা সিরিকিত ছিলেন থাইল্যান্ডের দীর্ঘতম সময়ের রাজা ভূমিবল আদুলিয়াদেজের স্ত্রী। ১৯৪৬ সাল থেকে ৭০ বছরের রাজত্ব করেছে রাজা ভূমিবল। এ সময়  স্বামীর সঙ্গে দাতব্য কর্মকাণ্ডে যুক্ত থেকে জনগণের ভালোবাসা অর্জন করেন সিরকিত। বিদেশ সফরকালে তার সৌন্দর্য ও ফ্যাশন রুচি বিশ্বমাধ্যমের প্রশংসা কুড়ায়।

১৯৩২ সালে জন্ম নেওয়া সিরিকিত কিতিয়াকারা ছিলেন ফ্রান্সে নিযুক্ত থাই রাষ্ট্রদূতের কন্যা। প্যারিসে সংগীত ও ভাষা অধ্যয়নের সময়ই ভূমিবলের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ১৯৪৯ সালে তারা বাগদান সম্পন্ন করেন এবং পরের বছর ১৭ বছর বয়সে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।

তিনি বিখ্যাত ফরাসি ডিজাইনার পিয়ের বালমাঁর সঙ্গে মিলে থাই সিল্কে তৈরি ঐতিহ্যবাহী পোশাকে নতুন মাত্রা যোগ করেন, যা থাইল্যান্ডের সিল্কশিল্প পুনরুজ্জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

চার দশকেরও বেশি সময় ধরে রাজা ভূমিবলের সঙ্গে তিনি থাইল্যান্ডের প্রত্যন্ত গ্রামগুলো সফর করেছেন, দরিদ্র মানুষের উন্নয়নে কাজ করেছেন, যা প্রতিদিন রাজকীয় সংবাদ বুলেটিনে প্রচারিত হতো।

১৯৫৬ সালে রাজা সাময়িকভাবে সন্ন্যাস গ্রহণ করলে সিরিকিত সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য রিজেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৬ সাল থেকে থাইল্যান্ডে তার জন্মদিনের তারিখ ১২ আগস্টকে মাদারস ডে ও জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

রাজা ভূমিবলের মৃত্যুর পর ২০১৬ সালে তার একমাত্র পুত্র মহা বাজিরালংকর্ন রাজা হিসেবে সিংহাসনে আরোহন করেন এবং ২০১৯ সালে তার অভিষেকের পর সিরিকিতের আনুষ্ঠানিক উপাধি হয় রাজমাতা।

যদিও থাইল্যান্ডের রাজতন্ত্র আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতির ঊর্ধ্বে, তবু বিভিন্ন সময়ে সিরিকিত রাজনৈতিক ইস্যুতে অবস্থান নিয়েছেন বলে মনে করা হয়। ১৯৯৮ সালে জন্মদিনের ভাষণে তিনি জনগণকে প্রধানমন্ত্রী চুয়ান লিকপাইয়ের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হতে আহ্বান জানান, যা বিরোধীদের পরিকল্পনা ব্যর্থ করে দেয়।

পরে তিনি রাজতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হন, যা সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার মিত্র সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে। ২০০৮ সালে তিনি পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত এক আন্দোলনকারীর অন্ত্যেষ্টিতে যোগ দেন, যা রাজপৃষ্ঠপোষকতার ইঙ্গিত হিসেবে ধরা হয়।

তবে অধিকাংশ থাই নাগরিকের কাছে রাজমাতা সিরিকিত স্মরণীয় হয়ে থাকবেন তার মানবিক কাজ, দাতব্য উদ্যোগ এবং মাতৃসুলভ অনুপ্রেরণার প্রতীক হিসেবে। তার মৃত্যুতে দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

উল্লেখ্য, থাইল্যান্ডে রাজপরিবার সম্পর্কে কোনও সমালোচনা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। 







আরও খবর


 সর্বশেষ সংবাদ

ডেঙ্গুতে একদিনে ৪ মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১১৪৩ জন
দাঁড়িপাল্লার গণআন্দোলন শহীদ কামরুজ্জামানের রক্তের প্রতিশোধের গণআন্দোলন: জামায়াত নেতা রাশেদুল
কুমিল্লায় বিপুল পরিমাণ অস্ত্রগুলিসহ ৪ মহিলা গ্রেফতার
বাউফলে পূর্ব বিরোধের জেরে তিন পুকুরে বিষ, পাঁচ লাখ টাকার মাছ মরে গেছে
বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নে ত্রিশালে মতবিনিময়
আরো খবর ⇒


 সর্বাধিক পঠিত

গফরগাঁওয়ে এক্সএমজি'র কর্মশালা
সমুদ্রপথে রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করলো চীন
থাইল্যান্ডের কাছে বড় হার বাংলাদেশের মেয়েদের
বাংলাদেশ মালদ্বীপের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও নির্ভরযোগ্য উন্নয়ন সহযোগী: মালদ্বীপের মন্ত্রী
তরুণ সমাজ রক্ষায় খেলাধুলার কোনো বিকল্প নেই: সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম
প্রকাশক: এম এন এইচ বুলু
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মাহফুজুর রহমান রিমন  |   উপদেষ্টা সম্পাদক : রাজু আলীম  
বিএনএস সংবাদ প্রতিদিন লি. এর পক্ষে প্রকাশক এম এন এইচ বুলু কর্তৃক ৪০ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ, বুলু ওশেন টাওয়ার, (১০তলা), বনানী, ঢাকা ১২১৩ থেকে প্রকাশিত ও শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস, ২৩৪ ফকিরাপুল, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
ফোন:০২৯৮২০০১৯-২০ ফ্যাক্স: ০২-৯৮২০০১৬ ই-মেইল: spnewsdesh@gmail.com