
জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ‘চব্বিশোত্তর বাংলাদেশের তারুণ্যের ভাবনায় শিক্ষা ও কর্মসংস্থান’ শীর্ষক অনুষ্ঠিত সেমিনার।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, একটি রাজনৈতিক দল জুলাই সনদে স্বাক্ষর দেওয়ার সুযোগ খুঁজছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ‘চব্বিশোত্তর বাংলাদেশের তারুণ্যের ভাবনায় শিক্ষা ও কর্মসংস্থান’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, গতকাল একটি রাজনৈতিক দল বলেছে, জনমতের চাপে বিএনপি গণভোট মেনে নিয়েছে। রাজনীতিতে মনে মনে সুখ অনুভব করলে অসুবিধা নেই, আমরা সেটাকেও স্বাগত জানাই।
কিন্তু আমরা তো শুরু থেকেই বলে আসছি-জুলাই জাতীয় সনদ প্রণীত হয়েছে, স্বাক্ষরিত হবে এবং ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সেটি সম্পন্ন হবে।
তিনি আরো বলেন, সেই জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষরিত হওয়ার পরে জনগণের সার্বভৌম সম্মতি নিতে গণভোট আয়োজন করা হবে। কারণ সংবিধানের ৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ। সেই জনগণের অভিপ্রায়ের চূড়ান্ত অভিব্যক্তি সংবিধান।
তাই গণভোটের মাধ্যমে জনগণ যদি ‘হ্যাঁ’ বলে, সেটিই হবে আইনি ভিত্তি।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, রাষ্ট্র কোনো ইমোশনের (আবেগের) ওপরে চলে না, রাষ্ট্র চলে আইন-কানুন ও বিধি-বিধানের মধ্য দিয়ে। আলোচনার মধ্য দিয়েই রাষ্ট্রীয় স্বার্থকে দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে রাখতে হবে। যেন ভবিষ্যতে আদালতে প্রশ্ন না ওঠে-জুলাই সনদ জারি হয়েছিল বৈধভাবে কিনা। তাই রাজনৈতিক আবেগ নয়, সংবিধান মেনে এগোতে হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়েই আমরা সিদ্ধান্ত নেব, জুলাই জাতীয় সনদের প্রজ্ঞাপন বা গেজেট নোটিফিকেশন কীভাবে করা যায়। কারণ যেভাবেই হোক, সেটি তো শেষ পর্যন্ত জনগণের গণভোটের মাধ্যমেই আইনি রূপ পাবে বলেও উল্লেখ করেন এই নেতা।
শিক্ষা ও কর্মসংস্থান প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, শুধু সরকারি বা বেসরকারি খাতে নয়, তরুণদের নিজ উদ্যোগে কর্মসংস্থানের ধারণা জোরদার করতে হবে। এজন্য প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা বৃদ্ধির সুযোগ তৈরি করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, শিক্ষা বাজেট বাড়ানোই যথেষ্ট নয়, তার সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। গবেষণা, স্কলারশিপ ও টেকসই জ্ঞানচর্চায় ব্যয় বাড়াতে হবে। মানসিক দৃষ্টিভঙ্গি ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপান্তর ছাড়া কোনো সংস্কারই কার্যকর হবে না।
বিএনপির এই নেতা বলেন, জাতীয় মুক্তির জন্য গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো- যেমন বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন ও স্বাধীন সাংবাদিকতা-এ ই প্রতিষ্ঠানগুলোর শক্ত ভিত্তি গড়ে তুলতে হবে। এটাই প্রাতিষ্ঠানিক রূপান্তর। এই রূপান্তর ঘটাতে পারলে জাতির মুক্তি আসবেই।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইউট্যাব) প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এ. বি. এম. ওবায়দুল ইসলাম।
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন-বিএনপি মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল, ইউট্যাবের মহাসচিব অধ্যাপক ড. মো. মোর্শেদ হাসান খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ. ফ. ম. ইউসুফ হায়দার, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. এস. এম. হাফিজুর রহমান, স্টেট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক আক্তার হোসেন খান এবং পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোহাগ আউয়াল।