
ব্যাট হাতে শেষের দিকে ঝড় তুললেন। বল হাতে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ভাঙলেন দুই জুটি। আবার ফিল্ডিংয়েও দারুণ এক ক্যাচ নিলেন হাতে আঘাত পাওয়ার পরও। রিশাদ হোসেন যেন পুরো মাঠ জুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন।
তার দুর্দান্ত এমন উপস্থিতি মিরপুরে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে লড়াইয়ে ফিরিয়েছে বাংলাদেশকে। ২১৪ রান তাড়া করতে নেমে ৯০ রানে ৪ উইকেট হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
ইনিংসের তৃতীয় বলেই আঘাত হানেন নাসুম আহমেদ। গোল্ডেন ডাকে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন ব্রেন্ডন কিং। ১ রানেই প্রথম উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
কিন্তু এরপর কিয়েসি কার্টি আর আলিক আথানাজে জুটি গড়েন তোলেন। কিছুতেই কিছু হচ্ছিল না। অবশেষে ১৪তম ওভারে আগের ম্যাচের নায়ক রিশাদ হোসেনের হাতে বল তুলে দেন অধিনায়ক মিরাজ। বল হাতে নিয়েই ৫১ রানের জুটি ভাঙেন রিশাদ, এলবিডব্লিউ করেন আথানেজেকে (৪২ বলে ২৮)।
তবে কার্টি এবার অভিষিক্ত আখিম অগাস্টেকে নিয়ে আবার জুটি গড়ার চেষ্টা করেন। ৩০ রানের সেই জুটি ভাঙে রিশাদের বলেই। রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে মিস করে এলবিডব্লিউ হন কার্টি (৫৯ বলে ৩৫)।
তানভীরের বলে অগাস্টের সজোরে হাঁকানো বল স্কয়ার লেগে দারুণ দক্ষতায় ধরে ফেলেন রিশাদ। আঙুলে ব্যথাও পান। অগাস্টে করেন ২৯ বলে ১৭।
এর আগে মিরপুরের ঘূর্ণি পিচে সবাই সংগ্রাম করেছেন। তবে এক সাইফ হাসান ছাড়া বাংলাদেশের সব ব্যাটার দুই অংক পেরিয়েছেন। শেষদিকে এসে তো বরাবরের মতো ঝড় তুলেছেন রিশাদ হোসেন। যে ক্যামিওতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৭ উইকেটে ২১৩ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় বাংলাদেশ।
শেরে বাংলায় টস জিতে ব্যাট করতে নেমে দেখেশুনে শুরু করেছিল বাংলাদেশ। ওপেন করেন সাইফ হাসান আর সৌম্য সরকার। সাইফ আরও একবার ওয়ানডেতে ব্যর্থ। ওপেনিং জুটিতে ২২ রান আসলেও সাইফ ফিরে যান ১৬ বলে মাত্র ৬ করে। সেট হয়ে আউট হন তাওহিদ হৃদয় (১৯ বলে ১২)।
একইভাবে সেট হয়ে শট খেলতে গিয়ে উইকেট দিয়ে আসেন নাজমুল হোসেন শান্ত (২১ বলে ১৫), মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন (৩৫ বলে ১৭)।
সৌম্য আজ ভালো খেলছিলেন, কঠিন উইকেটে ছিলেন ফিফটির দোরগোড়ায়। কিন্তু তিনিও বড় শট খেলতে গিয়ে হাফসেঞ্চুরি মিস করেন। ৮৯ বলে ৪৫ রানের ইনিংসে ৩টি বাউন্ডারি আর ১টি ছক্কা হাঁকান সৌম্য। ১০৩ রানে ৫ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
মেহেদী মিরাজ আর নাসুম আহমেদ যোগ করেন আরও ২৫ রান। ভাঙা পিচে ছক্কা হাঁকিয়ে আত্মবিশ্বাস বেড়ে গিয়েছিল নাসুমের। ওই ওভারেই গুদাকেশ মোতির ঘূর্ণিতে ব্যাট পেতে দিয়ে ক্যাচ তুলে দেন। ২৬ বলে ১৪ করে ফেরেন নাসুম।
উইকেটে এসেই ব্যস্ততা দেখাতে থাকেন নুরুল হাসান সোহান। ঘূর্ণি পিচেও বেশ কয়েকটি ভালো শট খেলেন তিনি। ফলে সপ্তম উইকেটে গুরুত্বপূর্ণ ৩৩ রান আসে ৪২ বলে। ২ চার আর ১ ছক্কায় বল সমান ২৩ রান করে মোতিকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সোহান।
এরপরের গল্পটা শুধুই রিশাদ হোসেনের। যে পিচে ব্যাটাররা ধুঁকেছেন। সেই পিচে ১৪ বলে ৩টি করে চার-ছক্কায় ৩৯ রানের ক্যামিও উপহার দেন রিশাদ। মিরাজ অপরাজিত থাকেন ৫৮ বলে ৩২ করে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের গুদাকেশ মোতি ৩টি আর আকিল হোসেন ও অলিক আথানেজে নেন ২টি করে উইকেট।