বুধবার ৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
 
শিরোনাম:


ডার্ড গ্রুপের শ্রমিক-কর্মচারীদের বকেয়া ১৪ কোটি টাকাসহ সকল পাওনা পরিশোধের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন
প্রকাশ: শুক্রবার, ১০ অক্টোবর, ২০২৫, ৭:৪৩ পিএম   (ভিজিট : ১০৮)

ডার্ড গ্রুপের পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক-কর্মচারীদের বকেয়া ১৪ কোটি টাকা এবং সকল পাওনাদী পরিশোধের দাবী জানিয়েছে ওই কারখানার শ্রমিক-কর্মচারী ও ৩৮টি শ্রমিক ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ। আগামী ৭ দিনের মধ্যে ওই বকেয়া পাওনা পারশোধ না করলে তারা যেকোনো ধরনের আন্দোলন করতে বাধ্য হবে বলেও জানান। গাজীপুর সদর উপজেলার হোতাপাড়া সাংবাদিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তারা এ দাবী জানান। সংবাদ সম্মেলনে শ্রমিক-কর্মচারীসহ শ্রমিক ফেডারেশনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

শুক্রবার (১০ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১ টায় তারা এ সংবাদ সম্মেলন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য ডার্ড গ্রুপের প্রিন্টিং এন্ড এমব্রয়ডারী সেকশনের সিনিয়র অফিসার শরিফুল ইসলাম শরিফ বলেন, ডার্ড গ্রুপের গাজীপুর ও সাভারে অবস্থিত পাঁচটি প্রতিষ্ঠানে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকার কারণ দেখিয়ে ২০২৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত লে-অফ ঘোষণা করে মালিক কর্তৃপক্ষ। কারখানাগুলো হলো গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার রাজাবাড়ী ইউনিয়নের রাজেন্দ্রপুর (সাটিয়াবাড়ী) এলাকায় ডার্ড কম্পোজিট টেক্সটাইল লিমিটেড, সাভারের হেমায়েতপুর এলাকার ডার্ড গার্মেন্টস লিমিটেড, দীপ্ত গার্মেন্টস লিমিটেড, দীপ্ত অ্যাপারেলস লিমিটেড, এবং ডার্ড ওয়াশিং প্লান্ট লিমিটেড। বন্ধ ঘোষনা করা ওই ৫টি কারখানায় সাড়ে ১১ হাজার শ্রমিক রয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবী করেন তারা।

শ্রমিকদের কয়েক মাসের বেতন পরিশোধ না করে হঠাৎ করেই ডার্ড গ্রুপের ৫টি প্রতিষ্ঠান ২০২৩ সালের ২২ নভেম্বর থেকে স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করেন মালিকপক্ষ। বকেয়া পারিশোধ না করে বে-আইনিভাবে বন্ধ ঘোষনা করায় শ্রমিক-কর্মচারীরা কারখানা খোলার দাবিতে জানান। শ্রমিকদের দাবির প্রেক্ষিতে ওই বছরের ২৮ নভেম্বর শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ত্রিপক্ষীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করা ডার্ড গ্রুপের শ্রমিক কর্মচারীদের পাওনা পরিশোধে সমঝোতা চুক্তি হয়। শ্রমিকদের বিক্ষোভের মুখে ২০২৪ সালের ২৯ অক্টোবর বর্তমান অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অতিরিক্ত সচিব (শ্রম) সবুর হোসেনের সভাপতিত্বে ত্রিপক্ষীয় সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মালিকপক্ষের হিসাব মতে ২৭ কোটি টাকা বকেয়া পাওনার কথা স্বীকার করেন এবং পাওনা পরিশোধে সরকারের নিকট সুদমুক্ত ১৩ কোটি টাকা লোন পাওয়ার কথাও স্বীকার করেন। ওই বছরের ১০ ডিসেম্বর সরকার কর্তৃক সুদমুক্ত ১৩ কোটি টাকা লোন পেয়ে সকল শ্রমিক কর্মচারীদের মধ্যে সমহারে বণ্টনের কথা থাকলেও তা সঠিকভাবে দেওয়া হয়নি বলে দাবী করেন তারা। ২০২৩ সালের আগস্ট এবং সেপ্টেম্বর মাসের বকেয়া বেতন, কর্মচারীদের লে-অফ চলাকালীন সময়ের মজুরী, কর্মচারীদের ৮ মাসের বকেয়া বেতন, নারী শ্রমিকদের প্রসূতি কল্যাণ ভাতা, ভবিষ্যত তহবিলের (প্রভিডেন্ট ফান্ড) টাকা এবং বিভিন্ন সময়ে ছাঁটাই, চাকরি থেকে অব্যাহতি ও বরখাস্তকৃত শ্রমিকদের পাওনা বকেয়া রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ডার্ড গ্রুপের সুইং সেকশনের অপারেটর রৌশন ও রহিমা খাতুন বলেন, দীর্ঘদিন যাবত সুনামের সহিত কাজ করে আসছি। হঠাৎ করে মালিকপক্ষ কারখানা বন্ধ ঘোষনা করায় স্বামী ও সন্তানদের নিয়ে খুব কষ্টে দিন পার করতে হচ্ছে। আমাদের মতো অনেকের বয়স হয়ে যাওয়ায় অন্য কোনো কারখানায়ও কাজে যোগ দিতে পারছি না।

প্লানিং সেকশনের উর্ধ্বতন নির্বাহী আব্দুল্লাহ আল ফাহিম এবং কাটিং সেকশনের ইনপুটম্যান মীর আবুল মিয়া বলেন, পরিবারসহ বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করে ওই গ্রুপের একটি কারখানায় চাকরি করছিলাম। হঠাৎ করে বন্ধ ঘোষণা করায় আমরা মানবতার জীবন পার করছি। আমার মতো ডার্ড গ্রুপের প্রায় সাড়ে ১১ হাজার শ্রমকি কর্মচারীরও একই অবস্থায় পরিবার নিয়ে কষ্টে আছে। সরকারের কাছে দাবী জানিাচ্ছ শ্রম আইন অনুযায়ী আমাদের বকেয়া পাওনা পরিশোধ করা হোক।

গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন গাজীপুর জেলা শাখার সভপাতি আশরাফুল ইসলাম আবির সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্যে বলেন, চলতি বছরের মার্চ মাসে শ্রম মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব ফাহমিদা আক্তারের সভাপতিত্বে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ত্রিপক্ষীয় সভায় সরকার কর্তৃক বরাদ্দকৃত সুদমুক্ত ১৩ কোটি টাকা বন্টন করা হয়। ওই সভায় শ্রম মন্ত্রণালয়ের ঘোষণা অনুযায়ী শ্রমিক কর্মচারীদের অবশিষ্ট ১৪ কোটি টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও এখনো পর্যন্ত মালিকপক্ষ ও সরকার পরিশোধে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। আগামী ৭ দিনের মধ্যে অবশিষ্ট ১৪ কোটি টাকা পরিশোধ না করেলে শ্রমিক কর্মচারীরা যেকোনো ধরনের আন্দোলন নামতে বাধ্য হবে বলে তারা সংবাদ সম্মেলনে ঘোষনা দেন।

ডার্ড গ্রুপের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) ফয়েজ আহমেদ বলেন, সর্বমোট ৫৬ কোটি টাকা বকেয়া ছিল। সব টাকা দেওয়া হয়েছে। ১৪ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে যেটা শ্রম মন্ত্রনালয়ের মিটিংয়ে চূড়ান্ত হয়েছে। মালিক পক্ষ বলছে আর দিতে পারবে না, যেটা শ্রমিক নেতারাও মেনে নিয়েছিল। সরকার যে ১৩ কোটি টাকা লোন দিয়েছিল সেটাই চূড়ান্ত পাওনা। কলকারাখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর (ডিআইএফই) এবং মন্ত্রনালয়ে মালিক পক্ষ জানিয়ে দিয়েছে উনার পক্ষে আর দেওয়া সম্ভব না। কারণ, গত তিন বছর যাবত কারখানাগুলো বন্ধ। মন্ত্রনালয়ে আরো সিন্ধান্ত হয়েছে, যদি মালিকপক্ষ কারখানা বিক্রি করতে পারে তাহলে বকেয়া ১৪ কোটি টাকা পরিশোধ করতে পারে।







আরও খবর


 সর্বশেষ সংবাদ

রেকর্ড ছক্কা ও জয়ে বছর শেষ, শীর্ষে তামিম
শাকিবের যে সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে ওটিটিতে
আমরা নির্বাচনের জোয়ারে আছি, শতাব্দীর ভালো নির্বাচন চাই : ইসি সচিব
কুড়িগ্রামে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২.৩ ডিগ্রি
১৯ দেশের অভিবাসন আবেদন প্রক্রিয়া স্থগিত করলো যুক্তরাষ্ট্র
আরো খবর ⇒


 সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় নাট্যশালায় ফাস্ট ইয়ুথ ম্যাজিক ফেস্টিভ্যাল ২০২৫ অনুষ্ঠিত
ত্রিশালে মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম দলের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা
মালদ্বীপে খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় বিএনপির বিশেষ দোয়া মাহফিল
বেগম খালেদা জিয়া’র রোগমুক্তি কামনায় ঝিনাইগাতীতে বিএনপির দোয়া মাহফিল
৪ডিসেম্বর শামা ওবায়েদ রিংকুর সালথায় আগমন উপলক্ষে প্রস্তুতি সভা
প্রকাশক: এম এন এইচ বুলু
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মাহফুজুর রহমান রিমন  |   উপদেষ্টা সম্পাদক : রাজু আলীম  
বিএনএস সংবাদ প্রতিদিন লি. এর পক্ষে প্রকাশক এম এন এইচ বুলু কর্তৃক ৪০ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ, বুলু ওশেন টাওয়ার, (১০তলা), বনানী, ঢাকা ১২১৩ থেকে প্রকাশিত ও শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস, ২৩৪ ফকিরাপুল, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
ফোন:০২৯৮২০০১৯-২০ ফ্যাক্স: ০২-৯৮২০০১৬ ই-মেইল: spnewsdesh@gmail.com