প্রকাশ: রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫, ১১:১১ AM
বকেয়া বেতন পরিশোধসহ ১০ দফা দাবিতে গাজীপুরের শ্রীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন আরএকে নামের একটি সিরামিক কারখানার শ্রমিকরা। এতে মহাসড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়ে আটকা পড়েন অফিসগামী যাত্রীরা।
রোববার (২৭ জুলাই ) ভোর সাড়ে ৬টা থেকে উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের জৈনা বাজার এলাকায় এ বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা। পরে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে পুলিশ শ্রমিকদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়।
শ্রমিকদের সড়ক থেকে সরিয়ে দিতে গেলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে শ্রমিকদের ব্যাপক ধাওয়া ও পাল্টাধাওয়া ঘটনা ঘটে। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস (টিয়ার গ্যাস) ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ঢাকা- ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। সাড়ে ৮টা পর্যন্ত বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘঠনস্থলে পৌঁছে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে শ্রমিকদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দিলেও এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আশপাশের বিভিন্ন রাস্তার পাশ থেকে শ্রমিকরা যানবাহনে ঢিল নিক্ষেপ করে ভাঙচুরের চেষ্টা করছেন।
কারখানা শ্রমিক ইকবাল হোসেন বলেন, দীর্ঘ সাত মাসের চুক্তি (অ্যাগ্রিমেন্ট) অনুযায়ী বেতন-ভাতা বকেয়া পড়েছে। কারখানা কর্তৃপক্ষ আজ নয় কাল, এমন করে আমাদের শ্রমিকদের ঘুরাচ্ছেন। আমাদের সংসার আছে, ছেলেমেয়েদের স্কুলের বেতন পরিশোধ করতে হয়। কারখানা কর্তৃপক্ষ কেন আমাদের ন্যায্য পাওনা পরিশোধ করছে না? নির্দিষ্ট যে বেতন, তা দিয়ে আমাদের সংসার চলে না। বাধ্য হয়ে কারখানার শ্রমিকেরা রাস্তায় নেমেছি। দাবি আদায় করে ফিরব।
একই কারখানার শ্রমিক সাইফুল ইসলাম বলেন, আমাদের ১০ দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাস্তা ছাড়বো না। জানুয়ারি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত বেতনের সঙ্গে অ্যাগ্রিমেন্টের সাত মাসের এরিয়া বিল আগস্ট মাসের ১ তারিখের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী সঠিক পদে সঠিক কর্মচারী নিয়োগ দিতে হবে। যোগ্য পদে অযোগ্য লোক থাকলে অতি দ্রুত অপসারণ করতে হবে। এ রকম গুরুত্বপূর্ণ মোট ১০ দাবি নিয়ে আমরা আন্দোলন করছি। এগুলো আমাদের শ্রমিকদের অধিকার।
আরএকে সিরামিক কারখানার মানবসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ১০ দফা দাবিগুলোর বিষয়ে কারখানার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে। শ্রমিকেরা আমাদের কথা না শুনে সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে থানার পুলিশ, শিল্প পুলিশের বহুসংখ্যক সদস্য এসে শ্রমিকদের বুঝিয়ে সরিয়ে দেয়। কিন্তু এ সময় শ্রমিকেরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়ে। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে টিয়ারসেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।