প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২৫, ৭:৫৩ পিএম (ভিজিট : ৩৩)

গাজীপুরের কালীগঞ্জে এবারের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে ব্যাপক ধস নেমেছে। উপজেলার সাতটি কলেজের মধ্যে সরকারি কালীগঞ্জ শ্রমিক কলেজসহ বেশিরভাগ কলেজেই পাশের হার আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে।
সরকারি কালীগঞ্জ শ্রমিক কলেজে এ বছর ৬৫৭ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে মাত্র ২২১ জন, পাশের হার ৩৪.০৫%। গত বছর এই হার ছিল ৫৬.০৭%। অন্যান্য কলেজেও একই চিত্র—জামালপুর কলেজে পাশের হার ২৯.৫৭%, আজমতপুর কলেজে ৩৮.১০%, কালীগঞ্জ মহিলা কলেজে ৬২.৬৯%, সেন্ট নিকোলাস স্কুল অ্যান্ড কলেজে ৫৯.৬৮%, সেন্ট মেরিস গার্লস হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজে ৮১.২০%, আর নতুন প্রতিষ্ঠান বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন ঢালি কলেজে মাত্র ২৪%।
সরকারি কালীগঞ্জ শ্রমিক কলেজের অধ্যক্ষ আতাউর রহমান বলেন, “ছাত্রছাত্রীদের পড়ালেখার প্রতি অনীহা এবং টেস্ট পরীক্ষায় ফেল করা শিক্ষার্থীদের ফাইনালে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়াই ফলাফল খারাপের অন্যতম কারণ।”
শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মাহমদুল হাসান বলেন, “গত বছরের ছাত্র আন্দোলনের পর থেকে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায় অমনোযোগী। উপর থেকে নম্বর বাড়িয়ে পাস করানোর নির্দেশ না থাকায় এবার প্রকৃত মূল্যায়নে ফলাফল নির্ধারিত হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, ইংরেজি ও আইসিটি বিষয়ে ফেল করা শিক্ষার্থীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। কলেজে ইংরেজি শিক্ষক দুইজন ও আইসিটি শিক্ষক একজন হওয়ায় মানসম্মত ক্লাস গ্রহণে সমস্যা হচ্ছে।
কালীগঞ্জের অন্যান্য কলেজের অধ্যক্ষদের মতে, ফলাফল খারাপের পেছনে রয়েছে শিক্ষক সংকট, অনিয়মিত ক্লাস, অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও দুর্বল তদারকি ব্যবস্থা। অনেক কলেজে টেস্ট পরীক্ষায় ফেল করা শিক্ষার্থীদেরও মূল পরীক্ষায় অংশ নিতে দেওয়ায় ফলাফলে বিপর্যয় নেমেছে।
অভিভাবক ও স্থানীয়দের মতে, কিছু শিক্ষক প্রাইভেট ও কোচিং নির্ভরতা বাড়িয়ে তুলছেন, ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়ছে।
সার্বিকভাবে শিক্ষকদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা, ক্লাসে অনিয়ম এবং শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় অনাগ্রহকেই কালীগঞ্জের কলেজগুলোর ফলাফল ধসের মূল কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।