
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যারা বিশৃঙ্খলা তৈরি করবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেছেন, নির্বাচনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে এমন লোকদের চিহ্নিত করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর জন্য সুস্পষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে।
রবিবার সচিবালয়ে আইন-শৃঙ্খলাসংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
এসময় এই উপদেষ্টা বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা থাকবে। দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আগামী জানুয়ারির মধ্যে প্রশিক্ষণ শেষ হবে। এবারের নির্বাচনে বিজিবির ১ হাজার ১০০ প্লাটুনে ৩৩ হাজার সদস্য নিয়োজিত থাকবে।
ইতিমধ্যে ৬০ শতাংশ নির্বাচনী প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে। তা ছাড়া এবারের নির্বাচনে প্রায় ৮০ হাজার সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘আসন্ন জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে দেশের শান্তি ও সুষ্ঠু ভোট প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য যেকোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী ব্যক্তি বা গ্রুপকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্নকরণ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার সমন্বয়ে একটি সুস্পষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠান নিশ্চিত করতে মাঠপর্যায়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং ওসিদের নিরপেক্ষভাবে কাজ করার নির্দেশনা প্রদান করার বিষয় আলোচনা হয়েছে।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যাতে কোনো আইনবহির্ভূত কাজ না করেন, সে বিষয়েও নির্দেশনা প্রদান করার আলোচনা হয়েছে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঝুঁকিপূর্ণ সব ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন ও কার্যকর মনিটরিং ব্যবস্থা গ্রহণ করা। তাছাড়া আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের জন্য পর্যাপ্তসংখ্যক বডি ওর্ন ক্যামেরার ব্যবস্থা করা।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল যেটা আগের তুলনায় অনেক কমে এসেছে।
পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি এখন শান্ত ও ভালো রয়েছে। সেখানকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ফ্যাসিস্টের লোকজন শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠান যাতে শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হতে না পারে, সেজন্য বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের চেষ্টা করেছিল। কিছু ফ্যাসিস্ট বুদ্ধিজীবীও এতে ইন্ধন জুগিয়েছিল। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সক্রিয় তৎপরতার কারণে তাদের চক্রান্ত নস্যাৎ করা সম্ভব হয়েছে। সবার সহযোগিতায় শারদীয় দুর্গাপূজা উৎসব নিরাপদ, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ ছাড়া মাদকের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। শুধু বাহকদের নয়, মাদকের গডফাদারদের আটক করে আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
উপদেষ্টাদের সেফ এক্সিট প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি দেশের বাইরে যাব কেন, আমার স্ত্রী-সন্তান দেশেই থাকে। বিদেশে কার কাছে যাব।’
ট্রাইব্যুনালে পরোয়ানাভুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের বিচার চলাকালে সেনাবাহিনী তাদের হেফাজতে রাখতে চায়—এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা, আইনে যা আছে তাই হবে।’