বৃহস্পতিবার ১৭ জুলাই ২০২৫ ২ শ্রাবণ ১৪৩২
 
শিরোনাম:


বসুন্ধরার আনভীর-সানভীর সমানে সমান
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: রবিবার, ২ মে, ২০২১, ৭:০৫ PM

সায়েম সোবহান আনভীর এবং সাফিয়াত সোবহান সানভীর দুই ভাই। আহমেদ আকবর সোবহানের দুই ছেলে। দেশের বৃহত্তম শিল্প গোষ্ঠির অন্যতম বসুন্ধরার মালিক বললে চিনতে আরো সহজ হয়। পিতার অঢেল অর্থ বিত্তের সাম্রাজ্যে বেড়ে উঠা সানভীর-আনভীর দুইভাই।

এতদিন সাব্বির হত্যা মামলা থেকে বেকসুর খালাস পেয়ে সানভীর আলোচিত সমালোচিত ছিলেন।

এখন আনভীর একই ভাবে আলোচিত সমালোচিত হচ্ছেন মোসারাত জাহান মুনিয়ার আত্মহত্যায় প্ররোচিত করার মামলায়। এ যেন মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ। কেহ কাহারে নাহি ছাড়ে সমানে সমানে।

সানভীর বহুল আলোচিত সাব্বির হত্যা মামলায় বেকসুর খালাসপ্রাপ্ত । হুমায়ুন কবীর সাব্বির বসুন্ধরা টেলিকমের পরিচালক ছিলেন। পিতা আকবর সোবহানের সাম্রাজ্যের সবকিছুতে নিশ্চয়ই সমানে সমান অধিকার তাদের। অপকর্মেও তারা সমানে সমান নজির রাখছেন।

২০০৬ সালের ৪ জুলাই রাতে গুলশানের একটি বাড়িতে খুন হন বসুন্ধরা টেলিকমিউনিকেশসন্স নেটওয়ার্ক লিমিটেডের পরিচালক সাব্বির। এর তিন দিন পর নিহতের ভগ্নিপতি এএফএম আসিফ একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট মো. আরমান আলী ২০০৮ সালের ১২ মে এ মামলায় অভিযোগপত্র দেন। এতে বলা হয়, গুলশানের ১০৪ নম্বর সড়কে বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকানাধীন ৩/জি নম্বর বাসার ছাদ থেকে সাব্বিরকে ফেলে দেওয়া হয়।

সাব্বির খুন হওয়ার কিছুদিন পর সানবীর দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। তৎকালীন বিএনপি সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর তাকে দেশত্যাগে সহায়তা করেছিলেন বলে অভিযোগ ছিলো। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে গ্রেপ্তার হওয়ার পর বাবর জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন যে তিনি সানবীরকে খুনের মামলা থেকে বাঁচাতে বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকের কাছ থেকে ২১ কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন। এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি মামলা বিচারাধীন।

সাব্বির হত্যার রায়ে বিচারক মোতাহার হোসেন বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ বস্তুনিষ্ঠ, প্রকৃত ও বাস্তব সাক্ষী উপস্থাপনে ব্যর্থ হওয়ায় পাঁচ আসামির সবাইকে বেকসুর খালাস দেওয়া হলো। তার থেকেও অবাক করা হচ্ছে তখন রায় ঘোষণার সময় বাদীপক্ষের কাউকে এজলাসে পাওয়া যায়নি। যাহোক সকল আসামী বেকসুর খালাস।

সেক্ষেত্রে সাব্বির হত্যা আর মুনিয়ার আত্মতহ্যা (এখনো তদন্তাধীন) অনেক ভিন্ন। আনবীরের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করার অভিযোগ। তিনিও একইভাবে দেশ ত্যাগ করেছেন। এও শোনা যাচ্ছে বিমানবন্দর দিয়ে এ নামে কেহ যায়নি। তবে তাকে পুলিশ এখনো ধরেওনি। আনবীর ইতমধ্যেই আগাম জামিনের আবেদন করেছেন। ওইদিন (মুনিয়ার কথিত আত্মহত্যার দিন সোমবার) সন্ধায় এক বিশেষ কার্গো ফ্লাইটে আনভিরের স্ত্রীর দুবাই যাবার খবর নিশ্চিত করেছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। গণমাধ্যমে ফলাওভাবে প্রচারও পেয়েছে তা। তিনি (আনবীরের স্ত্রীর কার্গো ফ্লাইটে) এভাবে পড়িমড়ি পালাবেন কেন? এখানে কিছুটা রহস্যের আভাস রয়েছে।

এসবই গণমাধ্যমকর্মী হিসাবে আমাদের অভিজ্ঞতা এবং ধারনা প্রসুত মতামত। পাশাপাশি বিত্তের কাছে মানুষের অসহায় আত্মসমর্পণের সাক্ষি হওয়া। তবে এসব কাহিনী স্রেফ লিখা নয়। মনে রাখতে হবে, যে কোন অন্যায় অত্যাচারের একটি পরিণতি থাকে। লিখা আমাদের কাজ। যদি এটুকু দায়িত্ব পালনও না করি তবে দায়বদ্ধ থাকতে হবে। কর্তব্যবোধ থেকেই লিখছি। লিখছি কারন পৃথিবীর ইতিহাস বড় নিষ্ঠুর। প্রকৃতি নিষ্ঠুরভাবে প্রতিষোধ নেয়। আমাদের কর্মফল জীবিতকালে পৃথিবীতে এবং মৃত্যুর পর পরকালে অবশ্যই ভোগ করতে হবে। বাংলাদেশে তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাভোগ করেছেন। আনভীর-সানভীর কি তার থেকেও বড় হয়ে গেছে নাকি। সময়ই বলে দেবে। অর্থের বিনিময়ে আইন-আদালত-মানুষ-সমাজ সব কিছু সাময়িক ধামাচাপা হবে হয়তো। অথবা অর্থের কাছে মাথানত হচ্ছে ভুক্তভোগিরা। কিন্তু প্রকৃতিকে কোনভাবেই বশে আনা যায় না। ন্যায় সময়ের মুখাপেক্ষী। ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হবেই হবে। সময়ের অপেক্ষা। অত্যাচারী কেহই পৃথিবীতে টিকে থাকতে পারেনি। আনভীর-সানভীরও দোষী হলে টিকে থাকবে না।

জনসাধারণ হিসাবে আমাদের সবথেকে বড় ভরসার স্থল হচ্ছে রাষ্ট্র। রাষ্ট্রের কাছে জনাসাধারণ সঠিক ন্যায় বিচার পাবে এটাই তার কাম্য। রাষ্ট্র স্বাধীন। জনসাধারণও নিজেকে স্বাধীন বলে দাবি করে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষের অনুপ্রেরণা আমাদের আশাণ্বিত হতে সাহস যোগায়। জাতির পিতার সুযোগ্য কণ্যা মানবতার জননী শেখ হাসিনা আমাদের প্রধানমন্ত্রী। তার সরকার নিশ্চয়ই ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত করবে। আমরা আশাণ্বিত।







আরও খবর


প্রকাশক: এম এন এইচ বুলু
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মাহফুজুর রহমান রিমন  |   উপদেষ্টা সম্পাদক : রাজু আলীম  
বিএনএস সংবাদ প্রতিদিন লি. এর পক্ষে প্রকাশক এম এন এইচ বুলু কর্তৃক ৪০ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ, বুলু ওশেন টাওয়ার, (১০তলা), বনানী, ঢাকা ১২১৩ থেকে প্রকাশিত ও শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস, ২৩৪ ফকিরাপুল, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
ফোন:০২৯৮২০০১৯-২০ ফ্যাক্স: ০২-৯৮২০০১৬ ই-মেইল: spnewsdesh@gmail.com