মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলায় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে। প্রধান শিক্ষককে স্বামী হিসেবে না পেয়ে দশম শ্রেণির এক ছাত্রী নিজেই বিভিন্ন ব্যক্তিগত ভিডিও এবং স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে ওই শিক্ষককে 'ফাঁসিয়েছেন' বলে অভিযোগ উঠেছে। এরপর মেয়েটি নিজেই লাইভে এসে প্রধান শিক্ষককে বিয়ে করার দাবি জানিয়েছে।
ভাইরাল ভিডিও ও লাইভ নাটক
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই ছাত্রী নিজেই তাদের ব্যক্তিগত মুহূর্তের কিছু ভিডিও এবং স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। এই ঘটনা জানাজানি হলে উপজেলায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এরপর মেয়েটি প্রকাশ্যে লাইভে এসে ওই প্রধান শিক্ষককে বিয়ের করার কথা জানায়। ছাত্রীর হাসিমাখা চেহারা দেখে অনেকে মনে করছেন, একটি সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই সে এই কাজটি করেছেন।
দীর্ঘ চার বছরের সম্পর্ক: দোষ কার?
ছাত্রীটি দাবি করেছে, তাদের সম্পর্কটি দীর্ঘ চার বছরের। সে যখন সপ্তম শ্রেণিতে পড়ত, তখন থেকেই প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এলাকাবাসীরা বলছেন,এই দীর্ঘ সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন—এমন একটি সম্পর্কে কেবল পুরুষই এককভাবে দোষী হতে পারে না। উভয় পক্ষেরই এই বিষয়ে সমান দায় রয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, যদি দুজনের মধ্যেই বিয়ের আগ্রহ থাকত, তবে এমন একটি ব্যক্তিগত তথ্য প্রচারের মাধ্যমে পরিস্থিতিকে নাটকীয় করে তোলার কোনো প্রয়োজন ছিল না। এই ঘটনাটি অন্যান্য সকল নারীর সম্মানহানির কারণ হয়েছে বলেও অনেকে মন্তব্য করেছেন।
প্রশ্ন উঠেছে নারীর 'প্রতারণার ফাঁদ' নিয়ে
সম্প্রতি নারী কর্তৃক প্রতারণার ফাঁদ পাতার অভিযোগগুলো সমাজের উচ্চ মহল পর্যন্ত পৌঁছেছে। এই ঘটনা সেই উদ্বেগকেই আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। রাষ্ট্রের অনেক গুরুত্বপূর্ণ থেকে শুরু করে কেহই যেনো — যেন এই ধরনের ফাঁদ থেকে রক্ষা পাচ্ছে না। এই ঘটনায় জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, কেন সম্পর্কটিকে সরল পথে না নিয়ে এসে এমন নাটকীয় ও মানহানিকর উপায়ে জনসমক্ষে আনা হলো?
ঘটনাটি বর্তমানে এলাকায় নয়,নেট দুনিয়ায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে এবং প্রশাসন এই বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেয়, তা এখন দেখার বিষয় বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
এবিষয়ে শিক্ষক রাজু আহাম্মেদ জানান, আমাকে ওই মেয়ে নিজেই যখন প্রেমের প্রস্তাব দেয়,তখন তাকে আমি অনেক বোঝানোর চেস্টা করেছি। তবুও সে আমাকে বারবার মোবাইলে কল দিতে থাকে। আমি ওই শিক্ষার্থীর নাম্বার ব্লক মেরে দিই। তখন সে আত্নহত্যা করার কথা বলতো। এবং ঘুমের ওষুধ খেয়ে অসুস্থ হয়ে যেতো। আমার এক সহকারী শিক্ষকের মাধ্যম দিয়ে অনেক বোঝানোর চেসৃটা করি। কোন কিছুতেই কাজ হয়নি। এখন সে আমার বিরুদ্ধে এমন অপপ্রচার চালাচ্ছে। এটা রিতীমত ষড়যন্ত্র করে ফাদে ফেলা হয়েছে।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি জানান, ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। স্থানীয় আলম হুসাইন বলেন, এটা ন্যাক্কার জনক ঘটনা। একজন শিক্ষক হয়ে ছাত্রীর সাথে যে ভিডিও কল ভাইরাল হয়েছে তা দেখে আমরা বিষ্মিত। ওই শিক্ষকের বহিষ্কার দাবী করেন তিনি।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মরতা মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, এখনও লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে বিষয়টি তদন্ত করে দেখার বিষয়। মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড ব্যাবস্থা নেবেন।