
এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলেছে পাকিস্তান। চ্যাম্পিয়ন হতে না পারলেও ফাইনালে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করেছে তারা। এটাকে কী খুব বড় ব্যর্থতা বলা যায়? আপাতদৃষ্টিতে বলা না গেলেও, এবার পাকিস্তান দলকে চরমভাবে ব্যর্থ বলতে হবে। কারণ, পুরো টুর্নামেন্টে তিনবার ভারতের মুখোমুখি হয়ে তিনবারই হারতে হয়েছে তাদেরকে।
সুতরাং, এশিয়া কাপে পাকিস্তানকে যারপরনাই ব্যর্থই বলতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা, ভারতের সঙ্গে বৈরিতা শুধু খেলার মাঠেই নয়, খেলার স্পিরিট ছাড়িয়ে ক্রিকেট লড়াইটা রাজনৈতিকও হয়ে উঠেছে। সে জায়গায় মুখে যতই বিরোধ দেখাক না কেন, মাঠের খেলায় জিততে না পারাটা চরম ব্যর্থতা।
এ জায়গায় তিন ম্যাচেই ভারতের কাছে হেরে মুখে চুন-কালি মেখেছে পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা। পরাজয়ের পর পুরো ভারত যেভাবে বিদ্রুপ করেছে পাকিস্তানিদের, তাতে তাদের হৃদয়ে আগুন জ্বলে ওঠার কথা; কিন্তু ক্রিকেটাররা হেরে যাওয়ার কারণে সেই আগুন প্রকাশও করতে পারছে না তারা।
ফলে স্বাভাবিকভাবেই ক্রিকেটারদের ওর যারপরনাই ক্ষিপ্ত দেশটির ক্রিকেট কর্মকর্তারা। এরই ফলশ্রুতিতে কঠোর পদক্ষেপ নিলো পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। দেশটির ক্রিকেটারদের বিদেশি টি–টোয়েন্টি লিগে খেলার জন্য দেওয়া সব অনাপত্তিপত্র (এনওসি) বাতিল করেছে পিসিবি।
বোর্ডের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (চিফ অপারেটিং অফিসার বা সিওও) সুমায়ের আহমদ সাঈদ ২৯ সেপ্টেম্বর একটি নোটিস পাঠিয়ে খেলোয়াড় ও তাদের এজেন্টদের বিষয়টি জানিয়ে দেন। সেখানে বলা হয়েছে, ‘পিসিবি চেয়ারম্যানের অনুমোদনক্রমে বিদেশি লিগ বা দেশের বাইরে অন্যান্য টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণের জন্য খেলোয়াড়দের সব এনওসি পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত করা হলো।’
কেন হঠাৎ এই সিদ্ধান্ত? সে বিষয়ে কোনো কারণ জানায়নি পিসিবি। যদিও ধারণা করা হচ্ছে, বোর্ড পারফরম্যান্সভিত্তিক একটি নতুন এনওসি নীতি চালু করতে চাইছে, যাতে জাতীয় দল ও ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফরম্যান্সকেই প্রধান মানদণ্ড ধরা হবে। তবে এই মূল্যায়ন প্রক্রিয়া কতদিন চলবে কিংবা কবে স্থগিতাদেশ উঠবে, তা নিয়ে এখনো কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
এ সিদ্ধান্ত এসেছে ভারতের বিপক্ষে এশিয়া কাপ ফাইনালে পাকিস্তানের হারের একদিন পরই। যদিও এশিয়া কাপের আগে পাকিস্তান একটি ত্রিদেশীয় টি–টোয়েন্টি সিরিজ জয় করেছিল। এদিকে অক্টোবরেই শুরু হওয়ার কথা রয়েছে পাকিস্তানের প্রধান ঘরোয়া আসর কায়েদ-ই-আজম ট্রফি, যা এর আগে ২২ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল।
এনওসি স্থগিত হওয়ায় বড় সমস্যায় পড়তে পারেন বেশ কয়েকজন তারকা ক্রিকেটার। আসন্ন বিগ ব্যাশ লিগে (বিবিএল) খেলতে যাওয়ার কথা রয়েছে অন্তত সাত পাকিস্তানি ক্রিকেটারের, যাদের মধ্যে আছেন বাবর আজম, মোহাম্মদ রিজওয়ান ও শাহিন শাহ আফ্রিদিও। এছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিতব্য আইএল টি-টোযেন্টির নিলামেও নাম আছে ১৬ পাকিস্তানি ক্রিকেটারের নাম, যাদের মধ্যে তিনজন হলেন নাসিম শাহ, সাইম আইয়ুব ও ফাখর জামান।