প্রকাশ: সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৫:৫২ পিএম (ভিজিট : ২৭৯)

ঢাকার সেগুনবাগিচার কেন্দ্রীয় কচি-কাঁচার মেলায় গতকাল রোববার সকালটা ছিল অন্যরকম। ছোট্ট শিশুর হাতের তুলিতে ক্যানভাসে ভেসে উঠছিল নদী। কোথাও আঁকা স্বচ্ছ জলের ঢেউ, কোথাও ভেসে উঠেছে দূষিত নদীর হাহাকার। রঙের মধ্য দিয়েই শিশুরা যেন বলে দিচ্ছিল, নদী কাঁদছে– এই নদী বাঁচাতে হবে।
বিশ্ব নদী দিবস উপলক্ষে ‘নদীর কান্না’ শিরোনামে শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও আলোচনা সভার আয়োজন করে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), রিভার অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট বাংলাদেশ (আরএসডিবি) এবং ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ।
আলোচনার শুরুতেই ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন রিভার বাংলার সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ। তিনি বলেন, নদীরও একটি মন আছে, তাকে কষ্ট দিলে সে কান্না করে। প্রতিদিনের দূষণ, ময়লা ফেলা সেই কষ্টেরই প্রতিচ্ছবি। পরিবার থেকেই শিশুদের শেখাতে হবে ময়লা যেখানে-সেখানে ফেলা যাবে না।
মুক্তিযোদ্ধা তোফায়েল আহমদ সভাপতির বক্তব্যে বলেন, পানি দূষণ এখন মানববসতির জন্য বড় হুমকি। তাঁর মতে, বাংলাদেশকে হাইড্রলিক দেশ হিসেবে ঘোষণা দেওয়াই সময়ের দাবি। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সাবেক সভাপতি ফজলে রেজা সুমন বলেন, নীলনদ আর টেমস নদীও এক সময় দূষণে নষ্ট হয়েছিল। কিন্তু জনগণের আন্দোলনে সেই নদী আবার প্রাণ ফিরে পেয়েছে। একইভাবে আমাদেরও এগিয়ে আসতে হবে।
ডরপের প্রতিষ্ঠাতা এ এইচ এম নোমান বলেন, এক সময় মানুষ নদীর পানি সরাসরি পান করত। এখন বোতল বা ফিল্টার ছাড়া সম্ভব নয়। স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মাহমুদা পারভিন বলেন, আমরা নদীকে আমাদের মতো করে রাখতে পারিনি। বুয়েটের অধ্যাপক ড. সারা নওরিন বলেন, নদী ও পরিবেশ রক্ষা করে দেশের প্রতি প্রকৃত ভালোবাসা প্রকাশ করা যায়।
রিভার অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল গাজী বলেন, এই আয়োজনের উদ্দেশ্য ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে নদী দখল ও দূষণমুক্ত রাখার বার্তা পৌঁছে দেওয়া।
আলোচনা শেষে তিনটি বিভাগে ১৫ জন এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ক্যাটেগরিতে তিনজনসহ মোট ১৮ শিশুকে পুরস্কার দেওয়া হয়।